Shaban-Ramadan 1437   ||   June-July 2015

দরসে তাওহীদ : প্রসঙ্গ : কবর যিয়ারত

মাওলানা মুহাম্মাদ ইউসুফ লুধিয়ানবী রাহ.

কবর যিয়ারত এবং ঐ স্থানের করণীয় সম্পর্কে আমি আমার দৃষ্টিভঙ্গি ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরছি।

এক. কবর  যিয়ারতে যাওয়া

জাহেলী যুগের কবর পূজা সম্পর্কে ঘৃণা সৃষ্টির জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমে উম্মতকে কবরের কাছে যেতে নিষেধ করেছিলেন। এরপর যখন ঐ সময়ের রসম-রেওয়াজ ভালোভাবে দূর হল তখন তিনি কবর-যিয়ারতের অনুমতি দিয়ে বলেছেন-

كنت نهيتكم عن زيارة القبور، فزوروها، فإنها تزهد في الدنيا وتذكر الآخرة.

আমি তোমাদের কবর-যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। (এখন ঐ নিষেধ মানসূখ করা হচ্ছে) এখন তোমরা কবর যিয়ারত করতে পার। কারণ তা দুনিয়ার মোহ দূর করে এবং আখিরাতকে মনে করিয়ে দেয়। -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৫৭১; মিশকাত পৃ. ১৫৪

সুতরাং কবরস্থানে যাওয়ার অনুমতি আছে। তবে দুটি বিষয়ে কিছু মতভেদ রয়েছে।

এক. এ অনুমতি নারী-পুরুষ সবার জন্য, না শুধু পুরুষের জন্য। কিছু মনীষীর মতে নারীদের অনুমতি নেই। কারণ এক হাদীসে আবু হুরায়রা রা. বলেন-

أن رسول الله صلى الله عليه وسلم لعن زوارات القبور

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবর যিয়ারতকারী নারীদের উপর অভিসম্পাত করেছেন। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৮৪৪৯; জামে তিরমিযী, হাদীস ১০৫৬; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৫৭৫; মিশকাত পৃ. ১৫৪

আর কেউ কেউ বলেন, এটি অনুমতির আগের। এখন পুরুষের মতো নারীদেরও কবর যিয়ারতের অনুমতি আছে।

নারীদের নিষেধ করার তাৎপর্য এই যে, ইলম ও সবরের স্বল্পতার কারণে তারা ওখানে গিয়ে অস্থিরতা, কান্নাকাটি এবং বিদআত ও গায়রে শরয়ী আচরণ থেকে বিরত থাকতে পারে না। যেহেতু তাদের ওখানে যাওয়ায় ফিতনার আশঙ্কাই প্রবল তাই তাদেরকে বিশেষভাবে নিষেধ করে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং যদি কোনো নারী ওখানে গিয়ে কোনো প্রকারের বিদআত ও গায়রে শরয়ী কার্যকলাপে লিপ্ত না হন তাহলে তার অনুমতি আছে। তবে বৃদ্ধা নারীরা যেতে পারেন, যুবতীদের না যাওয়াই ভালো। -ফাতাওয়ায়ে শামী খ. ২ পৃ. ২৪২, নতুন মুদ্রণ, মিশর

দুই. শুধু নিজ শহরের কবরস্থানে যাওয়া যাবে, নাকি অন্যান্য শহরেও নেককার অলী-বুযুর্গের কবর যিয়ারতে যাওয়ার অনুমতি আছে? কিছু মনীষীর সিদ্ধান্ত, কেউ যদি অন্য কোনো শহরে গিয়ে থাকে, তাহলে ওখানের কবরও যিয়ারত করতে পারে। কিন্তু শুধু কবর যিয়ারতের উদ্দেশ্যে যাওয়া সহীহ না।

তবে ইমাম গাযালী রাহ.সহ আরো অনেক মনীষীর মতে এরও অনুমতি আছে। আর এটাই সহীহ। তবে এই শর্তে যে, ওখানে গিয়ে শরীয়ত পরিপন্থী কোনো কাজে লিপ্ত হবে না। -প্রাগুক্ত

২. কবর-যিয়ারতের পদ্ধতি

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবর যিয়ারতের এই তরীকা বলেছেন যে, কেউ যখন কবরস্থানে যায়, তো কবরবাসীদের যেন এ বলে সালাম দেয়-

السلام عليكم دار قوم مؤمنين، أنتم لنا فرط ونحن لكم تبع، وإنا إن شاء الله بكم لاحقون، نسأل الله لنا ولكم العافية.

অর্থ : হে মুমিনদের বসতি! তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। তোমরা আমাদের পূর্বসূরী আর আমরা তোমাদের উত্তরসূরী। আর ইনশাআল্লাহ আমরা তোমাদের সাথে যুক্ত হব। আমরা আল্লাহর কাছে আফিয়াত চাই। আমাদেরও জন্য এবং তোমাদেরও জন্য। -মুসলিম ১/৩১৩,৩১৪; সুনানে নাসায়ী ১/২২২; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২২৯৮৫

এরপর কবরবাসীর জন্য মাগফিরাতের দুআ করবে এবং কিছু পড়ে ঈসালে ছওয়াব করবে। হাদীসে কিছু কিছু সূরার কিছু বিশেষ ফযীলতও উল্লেখিত হয়েছে। তেমনি দরূদ শরীফেরও ফযীলত এসেছে। তো দরূদ শরীফ, সূরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসী, সূরা ইখলাস এবং আরো যেসব সূরা ইচ্ছা পড়ে ঈসালে ছওয়াব করবে। ওখানের দুআ হয়তো হাত না উঠিয়ে করবে অথবা কবরের দিকে পিঠ দিয়ে কিবলামুখী হয়ে করবে। -ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী খ. ৫ পৃ. ৩৫০ কিতাবুল কারাহিয়্যা

 ৩. কবর যিয়ারতের উদ্দেশ্য

কবর-যিয়ারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য, যা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন তা এই যে, কবরের দৃশ্য দেখে দুনিয়ার ক্ষণস্থায়িত্বের বিশ্বাস তাজা করা, নিজের মৃত্যু ও কবর-জীবনকে স্মরণ করা এবং আখিরাতের প্রস্তুতির সংকল্প গ্রহণ করা।

দ্বিতীয় উদ্দেশ্য, আত্মীয়-স্বজনের হক আদায় করা এবং মাগফিরাতের দুআ ও ঈসালে ছওযাবের মাধ্যমে তাদের উপকৃত করা। আর আল্লাহওয়ালাদের কবর যিয়ারতের দ্বারা যে পথে চলে তারা আল্লাহর দরবারে মাকবূল হয়েছেন ঐ পথে চলার পাক্কা এরাদা করা।

৪. কবর বিষয়ে প্রান্তিকতা

কবরের বিষয়ে শরীয়ত ইফরাত-তাফরীত (কোনো প্রকারের প্রান্তিকতা) অনুমোদন করে না। সুতরাং কবরের অসম্মানও যেমন নিষেধ তেমনি সম্মানে সীমা অতিক্রম করাও। হযরত জাবির রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবর পাকা করতে, এর উপর গম্বুজ নির্মাণ করতে আর কবরের উপর বসতে নিষেধ করেছেন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৯৭০; মিশকাতুল মাসাবীহ পৃ. ১৪৮

এক হাদীসে আছে, কবরের উপর বসবে না, কবরের দিকে ফিরে নামাযও পড়বে না-সহীহ মুসলিম, হাদীস ৯৭২

আরেক হাদীসে আছে, তোমাদের কেউ যেন কবরের উপর না বসে। সে জ্বলন্ত

কয়লার উপর বসুক, যার কারণে তার পরিধেয় কাপড় পুড়ে তার শরীরও পুড়ে যায়- এ-ও তার জন্য ভালো। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৯৭১

এক হাদীসে আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবর পাকা করতে, তার উপর কিছু লিখতে এবং তা পদদলিত করতে নিষেধ করেছেন। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১০৫২

অন্য হাদীসে আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবী আমর ইবনে হায্ম রা.-কে কবরে হেলান দিয়ে বসে থাকতে দেখে বলেছেন, কবরের অধিবাসীকে কষ্ট দিও না। -(মুসনাদে আহমাদ) মিশকাতুল মাসাবীহ পৃ. ১৪৯

এ সকল হাদীস থেকে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, কবরের অসম্মানও কাম্য নয়, সীমাতিরিক্ত সম্মানও কাম্য নয়। তবে কবরের উপর খেলাফে শরা কর্মকাণ্ড হলে তা সংশোধন করা জরুরি। হযরত আলী রা. বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এ কাজে পাঠিয়েছিলেন যে, যে ছবি বা মূর্তিই দেখি তা যেন বিলুপ্ত করি আর যে কবরই উঁচু দেখি তা যেন সমান করি। -(সহীহ মুসলিম) মিশকাত শরীফ পৃ. ১৪৮

এই হাদীসগুলো থেকে প্রমাণিত হয়, পাকা কবর বানানো বা কবরের উপর গম্বুজ নির্মাণ জায়েয নয়। স্বয়ং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর দুই সাহাবী (হযরত আবু বকর ও ওমর রা.)-এর কবরও পাকা নয়, কাঁচা। -(সুনানে আবু দাউদ) মিশকাতুল মাসাবীহ পৃ. ১৪৯

এখন ঐসব কার্যকলাপ সম্পর্কে চিন্তা করুন, যা আমাদের অজ্ঞ আওয়াম  ওলী-বুযুর্গদের কবরে করে থাকে। যেমন কবরে গেলাফ চড়ানো, বাতি জ্বালানো, কবরে সিজদা করা, তাওয়াফ করা, কবরে চুমু খাওয়া, কপাল ঘষা, কবরের সামনে হাত বেধে এমনভাবে দাঁড়ানো যেভাবে নামাযী আল্লাহর সামনে হাত বেধে দাঁড়ায়, কবরের সামনে রুকুর মতো ঝোঁকা, কবরের উদ্দেশ্যে মান্নত মানা, নিয়ায চড়ানো ইত্যাদি।

আপনি যদি কখনো কোনো বুযুর্গের মাযারে গিয়ে থাকেন তাহলে এই সকল কার্যকলাপ স্বচক্ষেই দেখেছেন। অথচ আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআত ও ফিকহে হানাফীর কিতাবাদিতে এই সকল বিষয়কে না-জায়েয লেখা হয়েছে। 

৫. পাকা মাযার ও গম্বুজ

কবর পাকা করার নিষিদ্ধতা সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কিছু বাণী ইতিপূর্বে বর্ণনা করেছি। আমাদের আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের ইমামগণ এসকল হাদীসের আলোকেই তা হারাম হওয়ার ফতোয়া দিয়েছেন।

ইমাম মুহাম্মাদ রাহ. (যিনি ইমাম আবু হানীফা রাহ.-এর শাগরিদ ও তাঁর মাযহাবের সংকলক) বলেন-

ولا نرى أن يزاد على ما خرج منه، ونكره أن يجصص أو يطين ... إن النبي صلى الله عليه وسلم نهى من تربيع القبور وتجصيصها. قال محمد : به نأخذ وهو قول أبي حنيفة.

কবর খনন করতে যে মাটি কবর থেকে বের হয়েছে তার চেয়ে বেশি দেওয়া আমরা সহীহ মনে করি না। কবর পাকা করা ও লেপ দেওয়াকে মাকরূহ মনে করি। ... নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবর চতুষ্কোণ বানাতে ও পাকা করতে নিষেধ করেছেন। এ-ই আমাদের মাযহাব। আর এটাই (ইমাম ) আবু হানিফা রাহ.-এর কওল। -কিতাবুল আছার পৃ. ৯৬

যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আলী রা.-কে প্রত্যেক উঁচু কবর ধ্বসিয়ে সমান করার আদেশ করেছিলেন তাই ইমাম শাফেয়ী রাহ. বলেন, এ হাদীস অনুসারে আমি মক্কা মুকাররমার ইমামগণকে কবরের উপর নির্মিত ইমারত ধ্বসিয়ে দেওয়ার আদেশ করতে দেখেছি। -শরহে মুসলিম, নববী খ. ১ পৃ. ৩১২

এ থেকে জানা গেল যে, কোনো কোনো ওলী-বুযুর্গের কবরের উপর যে ইমারত ও গম্বুজ বানানো হয়েছে, এর সাথে ঐ বুযুর্গদের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা না একাজ কখনো পসন্দ করেছেন, না এর অনুমতি দিয়েছেন। আর না অসীয়ত করেছেন। এর দায় ঐসকল দুনিয়াদার আমীর-ওমরার যারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র ইরশাদের বিরোধিতা করে এই গর্হিত কর্ম বৈধ রেখেছে। আর এখন তো লোকেরা কবর পাকা হওয়া আর কবরের উপর শানদার ইমারত নির্মিত হওয়াকেই বেলায়েতের মানদণ্ড মনে করে।

এমন অনেক ঘটনা হয়ত আপনারও জানা আছে যে, কোনো কবর-ব্যবসায়ী স্বপ্নের দোহাই দিয়ে বা কাশ্ফ-ইলহামের কথা বলে কোথাও একটি জাল কবর বানাল। এরপর লোকেরা তার পূজা করতে আরম্ভ করল। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

তো হানাফী মাযহাবের প্রায় সকল নির্ভরযোগ্য কিতাবে যেমন, আলমগীরী, কাযিখান, সিরাজিয়্যাহ, দুররে মুখতার, কাবীরী ইত্যাদিতে এ কাজকে না-জায়েয লেখা হয়েছে।

আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী রাহ. বলেন-

أما البناء فلم أر من اختار جوازه

আর (কবরে) ইমারত নির্মাণ বিষয়ে কাউকে দেখিনি যিনি এর বৈধতা অবলম্বন করেছেন। -খ. ২ পৃ. ২৩৭, নতুন মুদ্রণ, মিশর

কাযী ছানাউল্লাহ হানাফী পানিপথী রাহ. বলেন-

و آنچہ برقبور  اولياء   عمارتہاۓ رفیع  بنا می  کنند ،   و چراغان  روشن کنند  وازيں قبیل  ہر  چہ  می  کنند حرامست

আর এই যে ওলী-বুযুর্গের কবরের উপর উঁচু উঁচু ইমারত নির্মাণ করে, বাতি জ্বালায় এবং এজাতীয় আরো যা কিছু করে সব হারাম। -মা-লা-বুদ্দা মিনহু পৃ. ৮৪ মুজতাবাঈ ১৩১১ হি.

৬. কবরে গিলাফ চড়ানো

কবরে গিলাফ চড়ানোও জায়েয নয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাহাবা-তাবেয়ীন ও হেদায়েতের ইমামগণের পুণ্য-যুগে কারো কবরে চাদর দেওয়া হয়নি। আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী রাহ. বলেন-

في الإحكام عن الحجة : تكره الستور على القبور.

আল ইহকাম কিতাবে আলহুজ্জাহ থেকে নকল করা হয়েছে যে, কবরে চাদর দেওয়া মাকরূহ। -রদ্দুল মুহতার খ. ২ পৃ. ২২৮

৭. কবরে বাতি জ্বালানো

কবরে বাতি জ্বালানোর বিষয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধু নিষেধই করেননি; বরং এ কাজ যে করে তাকে লানত করেছেন।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন-

لعن رسول الله صلى الله عليه وسلم زائرات القبور والمتخذين عليها المساجد والسرج.

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লানত করেছেন ঐ সকল নারীর উপর, যারা কবরে যায় এবং ঐ সকল লোকের উপর, যারা কবরকে সিজদাগাহ বানায় ও তাতে বাতি জ্বালায়। -সুনানে আবূ দাউদ, ৩২৩৬; জামে তিরমিযী, হাদীস ৩২০; সুনানে নাসায়ী, হাদীস ২১৮১; মিশকাত পৃ. ৭১

আল্লামা আলী কারী হানাফী এ হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন-

 النهي عن اتخاذ السرج لما فيه من تضييع المال، لأنه لا نفع لأحد من السراج ولأنها من آثار جهنم، وإما للاحتراز عن تعظيم القبور كالنهي عن اتخاذ القبور مساجد

কবরে বাতি জ্বালানোর নিষেধ হয়ত এজন্য যে, তা সম্পদ নষ্ট করা। কারণ এ বাতি কারো কোনো কাজে আসে না এবং এজন্যও যে, আগুন তো জাহান্নামের নিদর্শন (সুতরাং একে কবর থেকে দূরে রাখা চাই)। অথবা এ নিষেধ কবরের তাযীম থেকে রক্ষা করার জন্য। যেমনটা কবরকে সিজদাগাহ বানানোর নিষিদ্ধতাও একারণেই। -হাশিয়া মিশকাত

কাযী ছানাউল্লাহ পানিপথী হানাফী রাহ. বলেন-

 قبور  اولیاء  بلند کردن۔ و  گنبد  بر آں  ساختن  وعرس  وامثال  آں  و چراغاں  کردن  ہمہ  بدعت  است۔  بعضے  ازاں  حرام  است  و  بعضے  مکروہ ۔  پیمبر  خدا  صلی اللہ علیہ وسلم بر شمع  افروزان  ززد  قبر  و مسجد کنندگاں  را  لعنت  گفتہ وفرمودہ کہ قبر مرا عید ومسجد نکنید۔ در مسجد سجدہ میکند، وروز عید براۓ مجمع روزے در سال مقرر کردہ شدہ، رسول کریم صلی اللہ علیہ وسلم علی رضی اللہ عنہ رافرستادکہ قبور مشرفہ برابر کنند، وہر جاکہ تصویر  بینند  اور امحو کنند.

অর্থ, ওলী-বুযুর্গের কবর উঁচু করা, তাতে গম্বুজ বানানো, ওখানে ওরস ইত্যাদি করা, বাতি জ্বালানো, এসব কাজ বিদআত। এর কোনোটা হারাম, কোনোটা মাকরূহ। আল্লাহর পয়গম্বর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  কবরে বাতি প্রজ্বালনকারীদের ও সিজদাকারীদের লানত করেছেন এবং বলেছেন, আমার কবরকে ঈদ ও মসজিদ বানাবে না। মসজিদে সেজদা করা হয় আর ঈদের দিন সমবেত হওয়ার নির্ধারিত দিন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আলী রা.-কে এ উদ্দেশ্যে পাঠিয়েছিলেন যে, তিনি যেন উঁচু কবরগুলোকে সমান করে দেন। আর যেখানেই কোনো চিত্র দেখেন তা মুছে ফেলেন। -ইরশাদুত তালিবীন পৃ. ২০

(ইখতিলাফে উম্মত আওর সিরাতে মুসতাকীম থেকে। অনুবাদে :

আব্দুল্লাহ আবু মুহাম্মাদ)

 

 

 

 

advertisement