দ্বীনী কিতাবের প্রকাশকগণের খিদমতে
আমাদের এ ভূখন্ডে দ্বীনী কিতাবাদির বড় সংকট ছিল। বাংলা ভাষায় লিখিত দ্বীনী কিতাবও ছিল কম, উর্দু, ফারসী ও আরবী ভাষায় লিখিত কিতাবও বাহির থেকে আনা ও পাঠকের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল নামমাত্র। আল্লাহ তাআলা জাযায়ে খায়ের দিন আমাদের ঐ সকল মুরববীকে, যাঁরা এদিকে মনোযোগ দিয়েছেন, অন্যদের মনোযোগী করেছেন। ফলে একদিকে বাংলা ভাষায় দ্বীনী বইপত্রের রচনা, অনুবাদ ও প্রকাশনার ধারা বিস্তার লাভ করেছে, অন্যদিকে বাহির থেকে বিভিন্ন ভাষার বই-পত্র আসতে শুরু করেছে। আর এখন তো এদেশেই -মাশাআল্লাহ- আরবী ভাষাতেও মৌলিক রচনা ও প্রকাশনার ধারা সূচিত হয়েছে। যদিও বাংলাভাষী প্রাচীন আলিমদের কিছু আরবী পুসিত্মকা এখনো পান্ডুলিপি আকারে আছে আর কিছু নষ্টও হয়ে গেছে।
তো দ্বীনী কিতাবের এ সহজলভ্যতার জন্য আমরা সবার আগে আল্লাহ তাআলার শোকর আদায় করছি। কারণ করার মালিক তো একমাত্র তিনি।
فالحمد لله حمدا كثيرا طيبا مباركا فيه غير مكفي ولا مودع ولا مستغنى عنه ربنا
এরপর অন্তরের অন্তস্তল থেকে ঐ আকাবির ও মুরববীগণেরও শুকরিয়া আদায় করছি, যাঁদের সদিচ্ছা ও নির্দেশনায় এ ধারা শুরু হয়েছে এবং গতিশীল হয়েছে। তেমনি প্রকাশনা জগতের মালিক-প্রকাশকগণেরও আন্তরিক শোকরগোযারি করছি, যারা এ মোবারক কাজকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করে তলাবা-উলামা ও সর্বস্তরের পাঠকের উপর বড় অনুগ্রহ করেছেন এবং দ্বীনী কিতাব সংগ্রহ করা সহজ করে দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা সকলকে জাযায়ে খায়ের দান করুন এবং প্রত্যেকের খিদমতকে খাইর ও বরকতপূর্ণ করুন। আর সকলকে সব ধরনের কামিয়াবী দান করুন। আমীন।
শোকর আদায়ের পর আমরা তাদের প্রতি কল্যাণকামিতা ও তাদের মুদ্রিত, প্রকাশিত ও আমদানিকৃত বই-পত্রের পাঠকদের প্রতি কল্যাণকামিতা থেকে কিছু কথা নিবেদন করছি। যে কল্যাণকামিতা থেকে কথাগুলো লেখা হচ্ছে, আশা করি, ঐরকম কল্যাণকামিতার মনোভাব নিয়েই তা পাঠ করা হবে।
নিবেদনসমূহ
১. যদ্দুর আমার ধারণা, আমাদের দ্বীনী কিতাবপত্রের প্রকাশকগণ -ইনশাআল্লাহ- এই পেশা গ্রহণের ক্ষেত্রে নেক-নিয়তের অধিকারী। তাঁরা হালাল উপার্জন, দ্বীনী ইলমের অন্বেষী পাঠকবৃন্দের সেবা, তলাবায়ে কেরাম ও উলামায়ে কেরামের খিদমত ও ইলমে ওহীর প্রচার-প্রসারে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যেই এ পেশা অবলম্বন করে থাকবেন। ইনশাআল্লাহ তাদের উদ্দেশ্য হয়ে থাকবে এ হাদীসের মধ্যে শামিল হওয়া-
التاجر الصدوق الأمين مع النبيين والصدقين والشهداء
অর্থাৎ, সত্যবাদী আমানতদার ব্যবসায়ী নবী, সিদ্দীক ও শহীদগণের সঙ্গী। [জামে তিরমিযী, হাদীস ১২০৯ (হাসান)] তবুও নিয়তের নবায়ন ছওয়াবের কাজ এবং সংকল্পকে শানিত করার এক কার্যকর উপায়। এ কারণে আশা করি, আমরা উপরোক্ত নিয়তের নবায়নও করতে থাকব।
২. মুমিনের শি‘আর ও নিদর্শন হচ্ছে আমানত। হাদীস শরীফে আছে-
لا إيمان لمن لا أمانة له ولا دين لمن لا عهد له.
যার মাঝে আমানত নেই তার মাঝে ঈমান নেই। আর যার মাঝে অঙ্গীকারের মর্যাদা নেই তার মাঝে দ্বীন নেই। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১২৩৮৩; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস ১৯৪
ইলম অনেক বড় আমানত। ইলমে ওহী সবচেয়ে বড় আমানত। মুমিন তো সব বিষয়েই আমানতদারি রক্ষা করবে। আর যে কোনো ব্যবসায় আমানত রক্ষা করা ও খিয়ানত থেকে বেঁচে থাকা ফরয। কিন্তু তিজারতের সম্পর্ক যখন হয় ইলমের সাথে এবং সরাসরি ইলমে শরীয়ত ও ইলমে ওহীর সাথে তখন আমানতদারি রক্ষা করা কত বড় ফরয তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এ কারণে, আমরা ঈমান-রক্ষার জন্যও এবং ব্যবসায় সফলতার জন্যও আমানতদারি রক্ষার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
৩. এ আমানতদারির-ই একটি দিক, অনির্ভরযোগ্য অযীফার বই, অনির্ভরযোগ্য রচনা-অনুবাদ, তথা সব ধরনের অনির্ভরযোগ্য বই-পত্রের প্রকাশনা থেকে বিরত থাকা। প্রকাশনার এ কোনো নীতি হতে পারে না যে, বাইরে থেকে যে পুসিত্মকাই আসবে তা-ই তরজমা করে প্রকাশ করা হবে। বাইরের হওয়া আর নির্ভরযোগ্য হওয়া এক কথা নয়। ভিতরের হোক বা বাইরের সব কিছু নির্ভরযোগ্য হতে হবে এবং তরজমাও মানসম্মত হতে হবে।
তরজমার ক্ষেত্রে আরো বিবেচনা করা দরকার যে, এ কিতাব আসলেই সাধারণ পাঠকের উপযোগী কি না। দেখুন, কিতাবমাত্রই অনুবাদ-যোগ্য হয় না এবং কিতাবমাত্রই সাধারণ পাঠকের উপযোগী হয় না। তেমনি যে কোনো দরসী কিতাবের তরজমাও তালিবে ইলমদের জন্য উপকারী হয় না। ইলমের খিদমতের রেয়ায়েতকারী প্রকাশকগণ কিন্তু এ সকল বিষয় খেয়াল করে থাকেন।
৪. আমানতদারির এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, ভুল সম্বন্ধ না করা। সংকলন একজনের, নাম আরেকজনের এ-ও খিয়ানত। কিছু দিন আগে একটি সংকলন চোখে পড়ল, যাতে উস্তাযে মুহতারাম হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মাদ তাকী উসমানী দামাত বারাকাতুহুমের নাম ছাপা হয়েছে। ভিতরে দেখা গেল, গোটা পুস্তিকার হয়তো দুই-তিন জায়গায় তাঁর কোনো কথা আছে। বাকী সবকিছু এদিক-সেদিক থেকে সংকলিত। অথচ প্রচ্ছদে নাম হযরাতুল উস্তাযের। বিভিন্ন লক্ষণ থেকে বোঝা গেল, এ কাজ অর্থাৎ হযরতের নামের ভুল ব্যবহার সংকলকের কাজ নয়, প্রকাশকের কাজ।
যে কোনো ক্ষেত্রে যে কারো নামের ভুল ব্যবহার গোনাহ, আর ইলমী কিতাবে, উপরন্তু শাইখুল ইসলামের মতো ব্যক্তিত্বের নাম! এখানে ভুল বিবরণ কত বড় অপরাধ!
৫. আরেকটি বিষয়, যা সরাসরি খিয়ানত না হলেও, আমানতের দাবির পরিপন্থী এবং শরাফত ও ভদ্রতার সম্পূর্ণ বিরোধী। যাকে বলা যায় অন্যায় প্রতিযোগিতা বা অর্থহীন পুনরাবৃত্তি।
একটি কিতাবের অনুবাদ হয়ে গেছে, অনুবাদ ও মুদ্রণ মানসম্মতও বটে, এখন তা দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রকাশকের পক্ষ থেকে তরজমা করানো ও প্রকাশ করা প্রশংসনীয় নয়। এ হচ্ছে অন্যায় প্রতিযোগিতা, যা নিন্দা-যোগ্য। বিশেষত, দ্বিতীয় কাজ যদি হয় প্রথমটির চেয়ে নিমণমানের, তাহলে তো সেটা আরো আপত্তিকর।
হযরাতুল উস্তাযের এক অতি গুরুত্বপূর্ণ কিতাব, ‘ঈসাইয়্যাত কেয়া হ্যায়’। এর একটি বাংলা-তরজমা হয়েছিল, এরপরও দ্বিতীয় তরজমার প্রয়োজন ছিল। আমি হযরত মাওলানা আবুল বাশার ছাহেবকে অনুরোধ করি। তাঁর দ্বিধা হয়, প্রথম অনুবাদককে জিজ্ঞাসা করেন। এরপর ভূমিকায় এর উপর লম্বা ওযরখাহী করেন। জাযাহুল্লাহু খায়রান।
শায়খ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ রাহ.-কে দেখেছি, কত কিতাবের তাহকীক তা‘লীকের; পান্ডুলিপি সম্পাদনা ও টীকা লেখার কাজ শুরু করেও স্থগিত করে দিয়েছেন বা কাজ শেষ করার পরও ছাপেননি। কারণ অন্য কোনো প্রকাশক তা ছেপে ফেলেছে। ঐ প্রকাশকের সম্পাদনা ও মুদ্রণ যদিও শায়খের মানদন্ডে উত্তীর্ণ নয় কিন্তু সামগ্রিক বিচারে গ্রহণযোগ্য। এ কারণে শায়খ আগে কাজ শুরু করেও নিজের ইচ্ছাকে সংযত করেছেন।
যাই হোক, কখনো কখনো কোনো কোনো কিতাবের অনুবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরও বাস্তবেই এর উপর আবার কাজ করার প্রয়োজন হয়; এটা পুরোপুরি অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু এটুকু তো অবশ্যই হওয়া দরকার যে, মানহীন অনুবাদ ও মুদ্রণের দ্বারা মানসম্পন্ন তরজমা ও মুদ্রণের মোকাবেলা যেন না করা হয়। আজকাল বিশেষ কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়াই বড় বড় ইলমী কিতাবেও এ অপ্রিয় প্রতিযোগিতা জারি আছে। এ থেকে যথাসাধ্য বেঁচে থাকাই আমাদের জন্য মঙ্গল।
তবে হাঁ, এমন কোনো পুস্তিকা, যার বিষয়বস্ত্ত সাধারণ এবং যার ব্যাপক প্রচার কাম্য, যা প্রত্যেক পাবলিক লাইব্রেরি; বরং প্রতিটি ঘরে থাকা দরকার এ ধরনের সহজ-সরল প্রয়োজনীয় বিষয় ও দাওয়াতী পুস্তক-পুসিত্মকার কথা আলাদা। এ ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রচারের স্বার্থে ব্যাপক অংশগ্রহণের রেওয়াজ সব জায়গায় আছে। এ ক্ষেত্রেও মান-রক্ষা জরুরি এবং অন্যের হক নষ্ট করা না-জায়েয।
৬. কিন্তু যা পরিষ্কার খিয়ানত, যাতে কোনো ব্যাখ্যা-তাবীলের অবকাশ নেই, তা এই যে, অন্য কোনো লেখক বা প্রকাশকের কিতাব, তা স্বদেশের হোক, বা বিদেশের, হুবহু ফটো নিয়ে বা নামকেওয়াস্তে এখানে-ওখানে কিছু পরিবর্তন করে প্রকাশ করা। আবারো বলছি, এ কাজ পরিষ্কার খিয়ানত। এতে তাবীলের কোনো সুযোগ নেই। হীলা-বাহানা তো ঐ ক্ষেত্রে বের করা যায় যে, কোনো জরুরি কিতাব একশ-দেড়শ বছর আগে ছাপা হয়েছে, এখন তা পাওয়া যাচ্ছে না, প্রকাশকের ওয়ারিছদেরও সন্ধান পাওয়া যায় না তো প্রয়োজনের খাতিরে কোনো প্রকাশক যদি তা ছাপেন তাহলে এতে যা হোক এক ধরনের ব্যাখ্যা-তাবীল হতে পারে। তেমনি এমন কোনো জায়গা যেখানে বাইরে থেকে কিতাব আনানোর ব্যবস্থা নেই ওখানে বাইরের কোনো প্রকাশকের কিতাব যদি ছাপা হয় তাহলে তার কাটতি প্রভাবিত হয় না, এমন ক্ষেত্রেও কেউ কোনো হীলা বের করতে পারে, যদিও সব হীলার দ্বারা কাজ জায়েয হয়ে যায় না। কিন্তু এখন এমন দেশ কোথায়? এখন তো গোটা বিশ্ব একটি গ্রাম। এখন তো প্রকাশকেরা শুধু ভারত পাকিস্তান থেকেই নয়, মিশর, মধ্যপ্রাচ্য থেকেও প্রচুর কিতাব আনছেন। এমনকি আমাদের এই ক্ষুদ্র দেশেও। তো এখানে অন্য প্রকাশকদের হক নষ্ট করে, তাদের পরিশ্রমে পানি ঢেলে দিয়ে, তাদের কিতাবসমূহের হুবহু ফটোকপি প্রকাশ করা যে, এক নিকৃষ্ট অপরাধ এ বিষয়ে কি কারো কোনো সংশয় থাকতে পারে?
এই ধারণা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন যে, বাইরের প্রকাশকেরা জানলে নারাজ হবেন না বা অনুমতি দিয়ে দিবেন। উভয় ধারণাই ভুল ও কল্পনাপ্রসূত!
পাকিস্তানের এক প্রকাশক ‘কাওয়াইদ ফী উলূমিল হাদীস’ কিতাবখানা শায়খ আব্দুল ফাত্তাহ রাহ.-এর টীকা সহকারে পাকিস্তানে ছেপে দিয়েছেন। শায়খ আমার সামনে এ প্রকাশকের কঠিন সমালোচনা করেছিলেন এবং সাক্ষাতে স্পষ্ট ভাষায় প্রতিবাদও করেছিলেন। এ ধরনের কাজকে শায়খ স্পষ্ট ভাষায় سرقة(চুরি) বলতেন।
আজ থেকে পনেরো-ষোল বছর আগের কথা, যখন এখানে আরবের কিতাব-পত্র ব্যাপকভাবে আসতো না, এক প্রকাশক শায়খের ছাহেবযাদা মুহতারাম সালমান আবূ গুদ্দাহ -হাফিযাহুল্লাহু তাআলা-কে চিঠি লিখেছিলেন এবং শায়খের কিছু কিতাব এখানে প্রকাশের বিষয়ে তাঁর সাথে আলোচনা করেছিলেন, তিনি বলেছিলেন, ‘হক্কুত তবা’ প্রদানের পরেই তা হতে পারে।
১৪২৮ হিজরীতে ‘কাওয়াইদ ফী উলূমিল হাদীস’-এর দশম এডিশন প্রকাশিত হয়। এর শুরুতে শায়খ সালমান এ কিতাবের ‘বে-শরা’ ও ‘চুরি করা’ (অননুমোদিত) সংস্করণসমূহেরও উল্লেখ করেছেন।
এখন এদেশে শায়খের ও তাঁর আলিম সঙ্গী ও শাগরিদদের কিতাব-পত্র কী নির্দয়ভাবে প্রকাশ করা হচ্ছে! বিনা অনুমতিতে ছাপানোর পাশাপাশি অঙ্গ-সজ্জাও প্রায় শূন্যের কোঠায়। এ দেখে আমার মন খুব কাঁদে। আর এসব কিতাবের প্রকাশক ও সম্পাদকগণের কাছে যখন এ সংবাদ পৌঁছে তখন তারা খুব অসন্তুষ্ট হন এবং অত্যন্ত কঠিন বাক্য ব্যবহার করেন। সুতরাং ঐ প্রকাশকদের মৌন সম্মতির দাবি আত্মপ্রবঞ্চনা ছাড়া আর কিছু নয়।
এখানের এক প্রকাশক ‘ফাতাওয়া উছমানী’ ছাপার জন্য হযরাতুল উস্তাযকে চিঠি লিখেছিলেন। হযরত ইজাযত দেননি, তিনিও ছাপেননি।
যাই হোক, ‘সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত’ কথাটা আমরা নিজেরা যখন লিখি তখন তা অর্থপূর্ণ; আর অন্য প্রকাশক লিখলে ‘অর্থহীন’- এ স্ববিরোধী নীতি বা চিন্তা নিন্দনীয় নয় কি? তো আমাদের কি ভেবে দেখা উচিত নয়?
আমি যখন শুনি যে, বিনা অনুমতিতে কেউ অন্যদের কোনো কিতাব প্রকাশ করেছেন তখন আমার খুব কষ্ট হয়। বিভিন্ন প্রকাশকদের তরফ থেকে এ ধরনের কিছু কিতাবের কপি আমার কাছে হাদিয়া হিসেবে পাঠানো হয়েছে। আমি তা গ্রহণ করিনি; বরং আমি তো এমন কিতাব আমার তালিবে ইলম ভাইদেরও কিনতে বলব না। কারণ তা অন্যের হক নষ্ট করায় সহযোগিতার মধ্যে পড়ে, যা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।
মাসিক আলকাউসারে বিভিন্ন মাকতাবা (লাইব্রেরি)র বিজ্ঞাপন আসে। এতে পাঠকদেরও ফায়েদা হয়। আজকাল দেখছি, ঐ সকল বিজ্ঞাপনে বাইরের কিতাব-পত্রের ফটো-মুদ্রণেরও উল্লেখ থাকছে। বিজ্ঞাপন যারা পাঠান তাদের কাছে আমাদের জোর নিবেদন, তারা যেন তাদের বিজ্ঞাপনে এমন কোনো কিতাবের উলেস্নখ না করেন যার মুদ্রণ-স্বত্ত্ব অন্য কারো, আর তিনি তা বিনা অনুমতিতে এখানে প্রকাশ করেছেন। কেউ যদি এমন কোনো বিজ্ঞাপন আলকাউসারে পাঠান তাহলে আল্লাহর কাছে তাকে জবাবদিহী করতে হবে।
আলকাউসারের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলকেও বলা হচ্ছে, এ ধরনের অন্যায় উপায়ে মুদ্রিত কোনো কিতাবের উলেস্নখ বিজ্ঞাপনে থাকার কথা যদি তাদের জানা থাকে তাহলে যেন এমন বিজ্ঞাপন কোনোভাবেই গ্রহণ না করেন।
কথা অনেক হয়ে গেল। সম্মানিত প্রকাশকবৃন্দের সমীপে আমাদের নিবেদন, আল্লাহ তাআলা যখন আপনাদেরকে কিতাবের খিদমতের মতো উঁচু ও মহৎ পেশা অবলম্বনের তাওফীক দিয়েছেন তখন আপনারা এর হক আদায় করুন। বড় প্রকাশকগণ যদি চান, তাহলে নিজের মাকতাবার জন্য আলাদা ‘দারুত তাসনীফ’ (রচনা বিভাগ) ও ‘মাকতাবু তাহকীকিত তুরাছ’ (পান্ডুলিপি-সম্পাদনা বিভাগ)ও খুলতে পারেন। আপনারা ইচ্ছা করলে নিজেদের এ পেশাকে এত উঁচুতে নিয়ে যেতে পারেন যে, আপনাদের ‘সম্পাদিত’ ও ‘মুদ্রিত’ কিতাবসমূহ ছাপার জন্য অন্য দেশের প্রকাশকেরা আপনাদের কাছে অনুমতি প্রার্থনা করবেন। শুধু সাহস ও সদিচ্ছার প্রয়োজন। আমরা সেই শুভ দিনটির প্রতীক্ষায় রইলাম।
১৭/ ৩/ ১৪৩৬ হি.
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত,
১ টা ৩০ মিনিট