Zilqad 1435   ||   September 2014

মনীষীদের স্মৃতিচারণ

হযরত মাওলানা তাফাজ্জুল হক হবিগঞ্জী

[এ মূল্যবান লেখাটির প্রথম কিসিত্ম অনুলেখকের মমত্মব্যসহ প্রকাশিত হয় শাবান-রমযান ৩৫ হিজরী মোতাবেক জুন-জুলাই ১৪ ঈ. সংখ্যায়। এটি এ লেখার দ্বিতীয় কিসিত্ম।]

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

সিলেট বিভাগীয় আলেমদের স্মৃতিচারণ

সিলেটকে বলা হয় আধ্যাত্মিক জগতের রাজধানী। এটি ছিল অবিভক্ত ভারতে আসাম প্রদেশের অন্যতম জেলা। এর অধীনে ছিল হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সিলেট সদর এই চারটি  মহকুমা। এর মধ্যে হবিগঞ্জ অন্যতম। বর্তমানে এটি একটি স্বতন্ত্র জেলা। এ অঞ্চলে তৎকালীন হাক্কানী এক পীর ছিলেন আল্লামা শাহ আসাদুল্লাহ রাহ.। তাঁর কিছু আলোচনা পূর্বে শিক্ষাজীবনের বিবরণ শিরোনামে করা হয়েছে। এখানে আরো কিছু তথ্য তুলে ধরা হল। তিনি ১২৮২/৮৩ বাংলায় জন্মগ্রহণ করেন। সম্পর্কে তিনি আমার নানা। নিজ গ্রাম রায়ধরে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করার পর চুনারুঘাট উপজেলার ফান্দাইল গ্রামে, ফান্দাইল মাদরাসায় ওলীয়ে কামেল শাহ সুফি মাওলানা মোহাম্মদ সায়্যিদ উরফে কনু মিয়া রাহ.-এর কাছে দ্বীনী ইলম ও মারেফতের জ্ঞান হাসিল করেন। এরপর তৎকালীন ত্রিপুরা জেলা (বর্তমান কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত) হরিতলা গ্রামের মাওলানা হাসান আলী ছাহেবের খিদমতে দু বছর পর্যন্ত ফিক্হ, হাদীস ও তাফসীরসহ অন্যান্য বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা লাভ করেন। এরপর আধ্যাত্মিক জ্ঞান লাভের জন্য পূর্বোক্ত শাহ সুফি কনু মিয়ার খেদমতে প্রায় ২০ বছর অতিবাহিত করেন। এরপর কনু মিয়া ছাহেব তাঁর পীর ও মুর্শিদ আল্লামা আব্দুল হক মুহাজিরে মক্কী রাহ.-এর খেদমতে তাকে পাঠান। এ উদ্দেশ্যে তিনি মক্কায় গমন করেন। সেখানে কয়েক বছর অবস্থান করে তাঁর কাছ থেকে খিলাফত লাভ করেন। খিলাফতের আলামতস্বরূপ আব্দুল হক ছাহেব তাকে একটি তরবারী হাদিয়া দিয়েছিলেন। নানাজী এটি সবসময় সাথে রাখতেন। আমরা সে তরবারিটি দেখেছি, এখনো সেটি আছে।

ফকীহুন নফস রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী রাহ. ও হাকীমুল উম্মত আশরাফ আলী থানভী রাহ.-এর সান্নিধ্যে তাঁর যাওয়ার সুযোগ না হলেও তাঁদের সাথে চিঠি আদান-প্রদান করতেন। এরপর দেশে প্রত্যাবর্তন করে দ্বীনি শিক্ষা, সমাজ সংস্কার ও আধ্যাত্মিক শিক্ষা প্রদানের খেদমতে আত্মনিয়োগ করেন। প্রথমে হবিগঞ্জ শহরের জামে মসজিদকে কেন্দ্র করে দ্বীনি শিক্ষা ও সমাজ সংস্কারের কাজ শুরু করেন।

দ্বীনী কাজ করতে গিয়ে এখানে সুলতানশী এলাকার লোকদের সাথে তাঁর বিরোধ হয়। তারা বিদআত, কবরপূজা, তাজিয়া-মর্সীয়া ইত্যাদি অনৈসলামিক কাজ করত। তিনি এসবের তীব্র প্রতিবাদ করেন। এরপর একসময় নিজ গ্রাম রায়ধরে  চলে যান। সেখানে খানকাহ ভিত্তিক তালীম, তরবিয়ত ও সমাজ সংস্কারমূলক কাজ আরম্ভ  করেন। তৎকালীন হিন্দু জমিদারদের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন। এছাড়া নাচ, গানসহ  ষাঁড়ের লড়াই, বর্ষাকালের নৌকা-বাইচ, মহররমের তাজিয়া, নবজাতক সন্তানের নাড়িকাটা[1], ধুতি পরা ইত্যাদি প্রায় পনেরটি বিদআতি ও মানবতাবিরোধী কুপ্রথার বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলেন এবং শেষ পর্যন্ত আশানুরূপ সফলকাম হন। এসব কাজের জন্য তাঁর মুজাহিদ বাহিনী ছিল। এসময় তাকে জুমআ লা-জুমআ ফেৎনারও মুকাবেলা করতে হয়। আলেমদের মধ্যে জুমা নামায বিষয়ে তখন দুটি মত দেখা যায়। কেউ গ্রামে জুমা পড়ার পক্ষে ছিলেন কেউ বিপক্ষে। অনেক বহছ-মুবাহাছা হয়েছে এ মাসআলা নিয়ে। এ বিষয়ে তখন বহু ইস্তেফতা ভারতের আলেমদের নিকট পাঠানো হয়। ধীরে ধীরে ফেতনাটি নির্মূল হয়ে যায়।

আকাইদ ও ফেকাহ শাস্ত্রে তাঁর অগাধ জ্ঞান ছিল। শরীয়ত নামামারেফত নামা কিতাব দুটি তাঁর অমূল্য অবদান। এ এলাকায় তাঁর একজন পীর ভাই ছিলেন। শায়েস্তাগঞ্জ থানার দাউদ নগর নিবাসী মৌলবী সৈয়দ শাহ আহমাদুল্লাহ ছাহেব। তিনি একজন কামেল বুযুর্গ ছিলেন। তাঁর কবর ওখানেই আছে। আমি সময় পেলে এই বুযুর্গের কবর যিয়ারত করতে যাই।

সে সময়ে মাওলানা মীর ওয়াজেদ আলী রাহ. নামে একজন আলেম ছিলেন। চুনারম্নঘাটের জিকুয়া গ্রামে তাঁর জন্ম। তিনিও সমাজ-সংস্কারমূলক কাজ করতেন। আসাদুলস্নাহ মারহুমের সাথে তাঁর এ ব্যাপারে মতবিনিময় হত। একসময় মীর ওয়াজেদ আলী ছাহেব হিজরত করে  ছেবরী নামক স্থানে চলে যান। ছেবরী ত্রিপুরায় পাহাড়বেষ্টিত একটি এলাকার নাম।  বালস্না সীমামত্ম থেকে কয়েক মাইল দূরে । বর্তমানে এটি ভারতের অধীন । তিনি সেখানে একটি মুসলিম জনপদ গড়ে তোলেন। অবশ্য দেশ বিভাগের পর সে জনপদটি আর বাকি থাকেনি। তিনি ছেবরীর মীর ছাহেব হিসাবে প্রসিদ্ধ ছিলেন।

এদিকে হবিগঞ্জের বাহুবল থানায় ছিলেন বড় আলেম দৌলতপুর নিবাসী মাওলানা আব্দুল্লাহ রাহ.। তাকে আমি পাইনি। তিনি আসাদুল্লাহ মারহুমের মুজাহিদ বাহিনীর একজন সদস্য ছিলেন। 

হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং গ্রামে অনেক আলেম ছিলেন। এটি এশিয়া মহাদেশের  সবচেয়ে বড় গ্রাম। এখানে একবার শাইখুল ইসলাম হুসাইন আহমদ মাদানী রাহ. অসুস্থতার কারণে এক মাস ছিলেন। তাঁর বরকতে বানিয়াচং থেকে তখন সব ধরনের শিরক-বিদআত দূর হয়। এজন্য তাঁকে এ অঞ্চলে দ্বিতীয় শাহজালাল বলা হয়। এ গ্রামের মানুষকে তিনি অনেক মহববত করতেন। একবার তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে শুধু ঈদের নামাযের (ঈদুল আযহা) ইমামতির জন্য  সুদূর দেওবন্দ থেকে বানিয়াচং-এ এসেছিলেন।

মাদানী রাহ. সিলেট এলে প্রায়ই এ গ্রামে আসতেন। মাদানী ছাহেব যখন সিলেট নয়াসড়কে আসতেন তখন বানিয়াচংয়ের আলেমরাও তাঁর সান্নিধ্যে যেতেন। এ গ্রামে মাদানী রাহ.-এর অনেক খলীফা ছিলেন। তৎকালীন সময়ে এ গ্রামের উল্লেযোগ্য আলেম হলেন মাওলানা বুরহানুদ্দীন, মাদানী রাহ.-এর শাগরেদ ও খলীফা মাওলানা মুযাফ্ফার হাসান গেদু মিয়া; তিনি তাসাওউফের অনেক বড় আলেম ছিলেন। মাদানী রাহ. তাঁর জন্য জুববা পাঠিয়েছিলেন। তাঁরা  ছিলেন তিন ভাই। ভাইদের মধ্যে তিনিই বড় । বাকী দুই ভাই হলেন, মাওলানা মুয়াজ্জাম হাসান, অনেক বড় মুহাদ্দিস ছিলেন। মাওলানা মুফাজ্জল হাসান চনু মিয়া। তিনি বরুনার পীর ছাহেব মাওলানা লুৎফুর রহমান বর্ণবী রাহ.-এর খলীফা ছিলেন।

এ গ্রামের আলিয়া মাদরাসাটি প্রথমে কওমী মাদরাসা ছিল।  এটি প্রতিষ্ঠা করেছেন মাদানী রাহ.-এর এক খাছ শাগরেদ মাওলানা ইউনুছ ছাহেব। তাকে মাদানী রাহ. বাংলাদেশে কাদিয়ানী ফেৎনা মোকাবেলার জন্য বিশেষভাবে পাঠিয়েছিলেন। বি.বাড়িয়ায় এ ফেতনা বেশি ছিল। তাই তিনি এ  উদ্দেশ্যে সেখানে একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন, যা বর্তমানে জামেয়া ইউনুসিয়া নামে মশহুর। এ মাদরাসা প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিল কাদিয়ানী ফেৎনা মোকাবেলা করা। এছাড়া বি.বাড়িয়ার সায়দাবাদেও তিনি একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন। জীবনের শেষ দিকে অসুস্থতার কারণে তিনি নিজ বাড়িতে (সম্ভবত বিহার) চলে যান। আর ফিরে আসা হয়নি। সেখানেই তাঁর কবর।

প্রকাশ থাকে যে, মাওলানা ইউনুস নামে হবিগঞ্জ শহরের পার্শ্ববর্তী গ্রাম আলমপুরেও একজন বড় আলেম ছিলেন। তাঁর নিজস্ব কুতুবখানা ছিল। একসময় তিনি হবিগঞ্জ শহরের জামে মসজিদে দরস দিতেন। এখানেই তাঁর কাছে পড়েছেন আল্লামা শরফুদ্দীন শায়খে বেড়াখালী রাহ.। বেশ কয়েক বছর বানিয়াচংয়ের আলিয়া মাদরাসায় শিক্ষকতা করেছেন। হবিগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী উমেদনগর মাদরাসায়ও শিক্ষকতা করেছেন।

ওই সময় হবিগঞ্জ শহরের পার্শ্ববর্তী গ্রাম হাফীজপুরে একজন পীর সাহেব ছিলেন। তাঁর বাড়িতে মাদানী রাহ., বরুনার পীর ছাহেব এসেছিলেন। আমিও গিয়েছি। হবিগঞ্জ শহরের চৌধুরী বাজারের পাশে নোয়াবাদ এলাকায় তাঁর মুরীদান ছিল। চৌধুরী বাজার জামে মসজিদে (তৎকালীন সময়ে এটি বাজার মসজিদ নামে পরিচিত ছিল) একসময় বরুনার পীর ছাহেব ইতেকাফ করেছিলেন। আমি সাত বছর এ মসজিদে তাফসীর করেছি।

শায়েস্তাগঞ্জের করীমপুর গ্রামে  মাওলানা মুযাফ্ফর হুসাইন নামে এক আলেম ছিলেন। তখনকার সময়ে তিনি দারম্নল উলূম দেওবন্দে দাওরায়ে হাদীসের নাম্বারে আওয়াল ছাত্র ছিলেন। হযরত আনোয়ার শাহ কাশ্মীরী রাহ.-এর শাগরিদ। অনেক বড় আলেম ছিলেন। আরবীতে তাঁর রচিত কিছু চমৎকার রিসালা আছে।

মৌলভীবাজারে এক বড় আলেম ছিলেন হাবীবুর রহমান রায়পুরী।  মাজযূব প্রকৃতির লোক ছিলেন।  তিনি মাওলানা নুরুদ্দীন গহরপুরী রাহ.-কে খেলাফত দিয়েছেন। হাটহাজারীর মুফতী আহমদুল হক ছাহেব হুযুর তাঁর খুবই ভক্ত ছিলেন। তাঁর আসল বাড়ী নোয়াখালীর রায়পুরে। ওখান থেকে মৌলভীবাজারে আসেন। এখানেও গ্রামের নাম রায়পুর। মাদানী রাহ.-এর খলীফা ছিলেন।

আরেক রায়পুর হল হিন্দুস্তানের রায়পুর। সেখানের প্রসিদ্ধ বুযুর্গের নাম আব্দুল কাদের রায়পুরী রাহ.।

মৌলভীবাজারের রাজনগর থানার ইন্দেসরের আলেম, মাওলানা আব্দুন নূর। তিনিও মাদানী রাহ.-এর শাগরেদ। সিলেট সরকারি আলিয়ায় ছাত্রাবস্থায়ই তিনি ফার্সীতে কাফিয়ার শরাহ নাজাতুন্নুহাত  লিখেছেন। তাঁর বাবাও বড় আলেম ছিলেন।

মৌলভীবাজারের মারকুনার এক আলেম ছিলেন হাফেজ মাওলানা আব্দুল খালেক। তাকে আমি পেয়েছি। একসাথে আমরা বিভিন্ন জায়গায় ওয়ায করেছি।

আরেকজন ছিলেন সাখাওয়াতুল আম্বিয়া। তিনি শমশের নগর, বানুরগাছী নিবাসী। ওখানে পূর্ব বাংলায়  আসাম প্রদেশের মধ্যে  জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দের প্রথম কনফারেন্স হয়।

আরেকজন হলেন, মাওলানা আব্দুর্ রায্যাক ছাহেব। তিনি দরবেশ সাহেব  নামে মাশহুর ছিলেন। আমাদের বাড়িতেও এসেছিলেন। তাঁর বাড়িতেও গিয়েছি। শায়েস্তাগঞ্জের বার্ষিক তাফসীর মাহফিলে আসতেন। বড় আলেম হিসাবেই তাকে জানি। স্বপ্নেও তাঁকে বহুবার দেখেছি। তাঁকে হাদীসও শুনিয়েছি। তাঁর সাথে আমার চিঠি আদান-প্রদান হত। একসময় সিলেট আলিয়ায় খেদমত করেছেন। তাঁর আজীব ইতিহাস হল, ইন্তেকালের পর তাঁর কবর থেকে মেশকের মতো সুঘ্রাণ বের হত। আমি নিজেও এর সাক্ষী। কৌড়িয়ার শেখ ছাহেব মাওলানা আব্দুল করীম ছাহেবের সাথে তাঁর কবর যিয়ারত করতে গিয়ে এ ঘ্রাণ পেয়েছি।

আরেকজন হলেন শায়খে বাঘা মাওলানা বশীরুদ্দীন ছাহেব। আশেকে মাদানী হিসাবে মাশহুর। তিনি হাটহাজারী মাদরাসায় অনেকবার গিয়েছেন। মাদানী ছাহেবের প্রধান খলীফাদের মাঝে তিনি একজন। শাইখে বাঘা কুরআনের আশেক ছিলেন। ওয়াযে বেশির ভাগ কুরআন তেলাওয়াত করতেন। ১৯৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর ইন্তেকাল করেন।

আরেক জন হলেন শাইখে কৌড়িয়া মাওলানা আব্দুল করীম ছাহেব। তাঁর সাথে বহুবার বিভিন্ন জায়গায় সফর করেছি। মাদানী রহ.-এর বিশিষ্ট খলীফা ছিলেন। তাঁর ভাই ও বাবা নামের আগে সৈয়দ শব্দ যোগ করলেও তিনি তা করতেন না। তিনি বলতেন, কোনো আওলাদে রাসুলের সাথে আমার বংশ সম্পৃক্ত হওয়ার ব্যাপারে আমার কাছে কোনো সনদ নেই। সুতরাং এই নিসবত আমি ব্যবহার করতে পারি না

সৈয়দ শব্দটি আরবী সায়্যিদ থেকে। এর এক অর্থ, জনাব। সম্মান বুঝানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। আরবে এর ব্যবহার রয়েছে। আরেক হল নিজেকে নবীর বংশের একজন সদস্য মনে করে এ শব্দ ব্যবহার করা। এর জন্য প্রমাণ থাকতে হবে। প্রমাণ ছাড়া এ উদ্দেশ্যে উক্ত নিসবত ব্যবহার করা যাবে না। আমাদের দেশে সাধারণত নিসবত বুঝানোর জন্য যারা এ শব্দ ব্যবহার করে তাদের কাছে এ ব্যাপারে না আছে কোনো সনদ, না আছে তাদের বংশ তালিকা সংরক্ষিত। যাই হোক, মূল আলোচনায় ফিরে আসি। আরেকজন হলেন আমার পীর ও মুর্শীদ শায়খে রেংগা মাওলানা বদরুল আলম ছাহেব। তিনি বলেন, প্রথমে মুফতী আযম রাহ.-এর কাছে বাইয়াত হয়েছিলাম। মুফতী ছাহেবের ইন্তেকালের সময় আমি ছিলাম হজ্বে। সেখানে থাকাবস্থায় ইস্তেখারা করে ঠিক করলাম শায়খে রেংগার কাছে বাইআত হব। এরপর হজ্ব থেকে এসে শায়খে রেংগা ছাহেবের কাছে বাইআত হই। তিনি মুফতী আযম রাহ.-এর মতো খুব সাদাসিধা মানুষ ছিলেন। বেলা-তাকাল্লুফ তথা লৌকিকতা মুক্ত। বেড়াখালের শেখ ছাহেব (মাওলানা শরফুদ্দীন রাহ.,মাদানী রাহ.-এর বিশিষ্ট শাগরেদ)  বলতেন, লোকটার গায়ে জুববা-পাগড়ী না থাকলেও চেহারার দিকে তাকালেই বুঝা যায় তিনি আল্লাহওয়ালা মানুষ।

(চলবে ইনশাআলস্নাহ)

                টীকা : এভাবেই হযরত বলেছেন, কিন্তু কেউ কেউ বলেন, এ তিন বুযুর্গের নামের দ্বিতীয় অংশ হবে হাসান -এর স্থলে হুসাইন।



[1] নবজাতকের নাভী কাটাকে হীন  ও কুলণে মনে করা হত। নিজেরা তা না করে বেদে সম্প্রদায়ের লোকদের তলব করা হত। 

 

advertisement