মুহাম্মাদ জহিরুল ইসলাম - সিলেট
প্রশ্ন
আমরা যারা নেযামুল আওকাত মোতাবিক পড়ালেখা করি অনেক সময় আমাদেরকে উস্তাদের কোনো কাজে যেতে হয়। পরবর্তীতে হুজুরের কাজ থেকে ফারিগ হওয়ার পর আমাদের নেযামুল আওকাত আর ঠিক থাকে না। এমতাবস্থায় আমরা কী করব? জানালে উপকৃত হব।
উত্তর
আরে দোস্ত! এত সামান্যতেই কি নেযামুল আওকাত নষ্ট হতে পারে? উস্তাদের খেদমতের পর আবার নেযামুল আওকাতের অনুসরণ করবেন। মাঝে সময়ের কাজগুলো কিছু কিছু করে হলেও করে নেবেন! আমাদের সকল আকাবির নেযামুল আওকাতের পাবন্দ ছিলেন। এক্ষেত্রে হযরত হাকীমুল উম্মত থানভী রাহ.-এর কথা তো বলাই বাহুল্য। তার একটি ঘটনা ‘আশরাফুস সাওয়ানেহ’ থেকে উদ্ধৃত করছি। তাঁর বিশাল রচনা-ভাণ্ডার এবং তাঁর সময়ে বরকত হওয়ার পঞ্চম কারণ হল, তার অত্যন্ত কঠোর সময় নিষ্ঠা। তিনি বলতেন, সময়নিষ্ঠ না হলে দ্বীনের অল্প বিস-র যে খেদমত আমার দ্বারা হয়েছে তা কিছুতেই হতে পারত না।
সময়নিষ্ঠার ব্যাপারে হযরতের এতই পাবন্দী ছিল যে, মুহতারাম উস্তাদ হযরত মাওলানা মাহমুদ হাসান রাহ. একদা মেহমান হলে মেহমানদারী ও আরামের সকল আয়োজন করে দেওয়ার পর হযরত নিতান্ত আদবের সাথে ইজাযত হাসিল করে লেখার কাজে মশগুল হলেন। যদিও মন না বসায় একটু পরেই হযরতের খেদমতে হাযির হয়ে গেলেন, কিন্তু সেদিনও একেবারে ‘নাগা’ করেননি। (আশরাফ চরিত, বাংলা ৬৭৭)
এটিই হল নেযামুল আওকাতের উপর আমলের উসূল।
নেযামুল আওকাতে উস্তাদের খেদমতের জন্যও কিছু সময় বরাদ্দ রাখা উচিত। এর দ্বারা কয়েকটি ফায়েদা হবে : এক. নেযামুল আওকাতে বরকত হবে দুই. এ সময় ঐ সব কাজও করা যাবে যা অন্য সময় উস্তাদের খেদমত করার কারণে করা যায়নি। চেষ্টা করলে এই সময় থেকে এই ফায়দাও নেওয়া যায় যে, এই সময় কোনো উস্তাদের যিয়ারতে যাওয়া, আপনার করার মতো তাঁর কোনো কাজ আছে কি না বিনয়ের সাথে তা জানতে চাওয়া ইত্যাদি।
সর্বোপরি নেযামুল আওকাত তো একটি নেযামই। ‘আহাম-ফালআহাম’ হিসেবে তাতে এদিক ওদিক হতেই পারে। সচেতন তালিবে ইলমের উচিত এতে সু-সমন্বয় করে নেওয়া। সামান্য কারণে নেযামুল আওকাত ভেঙ্গে গেছে মনে করে হাল ছেড়ে দেওয়া ঠিক নয়। কারণ নেযামুল আওকাত ছাড়া কোনো তালিবে ইলমের যিন্দেগী বনতে পারে না।