জুমাদাল উলা ১৪৪৩ || ডিসেম্বর ২০২১

মুহাম্মাদ কেফায়েত উল্লাহ - চরমোনাই মাদরাসা

প্রশ্ন

বিসমিল্লাহির রাহমানির রহীম

আসসালামু আলাইকুম ওয়রাহমাতুল্লাহ। হযরত আপনার কাছে দুটি বিষয়ে জানতে চাই।

১. আমি আরবী ভাষা ও সাহিত্য শিখতে আগ্রহী। প্রাথমিক আরবী শেখার জন্য আমাদেরকে এসো আরবি শিখি প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড পড়ানো হয়। মিযান জামাতে দ্বিতীয় খণ্ড পড়ানো হয়। আমি এসো আরবী শিখি-এর সাথে সাথে আততামরীনুল কিতাবী-এর মাধ্যমে মেহনত চালিয়েছি। এরপর নিজস্বভাবে তৃতীয় খণ্ড পড়েছি এবং মোটামুটি যথাযথভাবে পড়ার চেষ্টা করেছি। এখন আলহামদু লিল্লাহ ছোট ছোট আয়াত-হাদীস বুঝতে পারি। সহজ আরবী শিশু-সাহিত্যের কিতাবাদিও বুঝে আসে। এরপর নাহবেমীরে এসে পড়ানো হল, রওযাতুল আদব। এ সময় আমার কাছে দুটি প্রশ্ন দাঁড়ায় : 

ক. এসো আরবী শিখির বর্ণনাশৈলী এবং উপস্থাপনা-পদ্ধতি থেকে অনুভূত হয় আরবী শুধু পড়ে পড়ে বুঝতে পারা নয়; বরং আরবীকে মুখের ভাষা এবং কলমের লেখার মাধ্যমরূপে গ্রহণ করতে হবে। এক কথায় আরবী ভাষায় বলা এবং লেখার যোগ্যতা অর্জন করা। কিন্তু রওযাতুল আদবে বলা এবং লেখার যোগ্যতাকে প্রাধান্য দেয়া হয়নি; বরং কুরআন-হাদীস পড়ে বুঝতে পারার বিষয়টিকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। যেমন এসো আরবী শিখির যে কয়টি দরস প্রতিটি দরস শেষ করার পর সে অনুপাতে বাক্য তৈরি করা, বাংলা থেকে আরবী করা অত্যন্ত সহজ, কিন্তু রওযাতুল আদবে এটা প্রায় অসম্ভব। সেখানে বাংলা থেকে আরবী করতে বলা হলে দুর্বোধ্য ছেলার এবং শব্দের মারপ্যাঁচে পড়েই সব সাঙ্গ প্রায়।

খ. শুনেছি, রওযাতুল আদব নাকি আরবী ভাষা শেখার জন্য নয়; বরং তারকীব শেখার জন্য। হুজুরের কাছে আবেদন, কিতাবটির আসল উদ্দেশ্য ও মাকসাদ কী এবং তা অর্জনের পদ্ধতি কী- জানিয়ে বাধিত করবেন।

২. প্রায়ই একটা কথা শোনা যায়- ‘নলেজ রাখতে হবেএজন্য নিয়মিত দৈনিক পত্র-পত্রিকা পড়া চাই। দেশ-বিদেশের খবর এবং দেশীয় হালচাল জানা চাই। কোথায় কী হচ্ছে তা জানা চাই। হুজুরের কাছে আবেদন, আকাবিরের দৃষ্টিতে ছাত্রদের জন্য পত্রিকা পাঠ কেমন? জানিয়ে বাধিত করবেন। আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন- আমীন।

উত্তর

১. ভাষা শেখার অনেক দিক রয়েছে। রওযাতুল আদব থেকে যে দিকটি নেয়ার সেটি নেবেন। উসতাযের দরস ও দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কিতাবটি পড়বেন; ইনশাআল্লাহ অনেক ফায়দা হবে। কোনো কোনো উসতায এই কিতাবকে নাহবেমীর ও মীযান-মুনশায়িব ও পাঞ্জেগাঞ্জের নিয়মকানুনগুলোর তামরীনের স্থান হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন। আমার আব্বাজান রাহ. এই কিতাবকে গুরুত্ব দিতেন। আমার উস্তায মামাজান মাওলানা সাইফুল্লাহ ছাহেব দামাত বারাকাতুহুম আমাকে বলেছেন, ‘আমরা তোমার আব্বার কাছে রওযাতুল আদব পড়েছি; ফলে আমার নাহবেমীরও হল হয়ে গেছে। এই কিতাবে অনেক কালিমাতুল হিকমা (প্রজ্ঞাপূর্ণ বাণী)ও আছে। সেগুলো অনেক উপকারী।

الطريق إلى العربية যেহেতু অনেক চিন্তা-ভাবনা ও মেহনত-মুজাহাদার পর তৈরি হয়েছে এবং ক্রমাগত এর উপর মেহনত হতেই রয়েছে সেইসঙ্গে এর রচয়িতা শিক্ষাকারিকুলাম বিষয়ে তাজদীদী মাহারাত রাখেন সেহেতু এর উপকারিতা যেমন ব্যাপক তেমনি পূর্ণাঙ্গ। এর দ্বারা যেভাবে আরবী বলা ও লেখার স্বভাবজাত রুচি তৈরি হয়, আরবী বোঝার সঠিক যোগ্যতাও হয়। এই কিতাব কুরআন কারীম ও হাদীস শরীফ বোঝার প্রথম পর্যায়ের চাবিকাঠি হিসেবেই লেখা হয়েছে। অবশ্য এর তিন খণ্ডেরই পাঠ গ্রহণ মুসান্নিফের উসূল মোতাবেক হওয়া উচিত এবং আততামরীনুল কিতাবীসহ হওয়া উচিত।

২. তালিবে ইলমীর যামানায় অত্যন্ত একাগ্রতার সঙ্গে তলবে ইলমের কাজে লেগে থাকা উচিত। এ সময় পত্রিকা পড়া নয়; বরং এ থেকে দূরে থাকা জরুরি।

এই সংখ্যার অন্যান্য শিক্ষা পরামর্শসমূহ পড়ুন