শাওয়াল ১৪৩৮ || জুলাই ২০১৭

(নামবিহীন) - ঢাকা

প্রশ্ন

মুহতারাম, আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছেন। আমি শরহে বেকায়া জামাতের ছাত্র এবং মাসিক আলকাউসারের নিয়মিত পাঠক।

হুযুরের কাছে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর কামনা করছি। প্রশ্নগুলো বিস্তৃত হলেও দ্রুত উত্তর প্রদানে বাধিত করবেন। আল্লাহ তাআলা আপনাকে সর্বদা সিরাতে মুসতাকিমে অবিচল রাখুন। আমীন। প্রশ্নগুলো এই :

ক. অনুবাদ প্রসঙ্গে : আরবী আদব ও কুরআন-হাদীসের অর্থ কীভাবে তুলতে হয় এবং অর্থ তোলার ক্ষেত্রে যে সকল নিয়ম আছে সেগুলোর উদাহরণসহ কামনা করছি। অনুবাদ প্রসঙ্গে কোনো কিতাব লেখা হলে তার নামও কামনা করছি।

খ. আরবী আদবের কিতাব সম্পর্কে :

আরবী আদবের এমন কী কী কিতাব আছে, যাতে সহজ সহজ আরবী تعبيرات রয়েছে এবং তাবীরগুলোর বাংলায় অনুবাদও রয়েছে।

গ. বাংলা থেকে আরবী লুগাত হিসাবে কোনটি বেশি ভালো? যাতে শব্দের অর্থের সাথে সাথে ব্যবহার দেওয়া হয়েছে?

ঘ. অনেক সময় দেখা যায় আরবী হরফসমূহ বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়, কিন্তু নাহবের কিতাবসমূহে এমনকি লুগাতসমূহেও তার এমন অর্থ পাওয়া যায় না। যেমন,  فصيحة- فاء অর্থে, تفريع - حتى  অর্থে ইত্যাদি।

তো এগুলোর জন্য কোনো কিতাব আছে কি না? তার নাম কামনা করছি।

ঙ. আরবী বালাগাত শাস্ত্রের কি এমন কোনো কিতাব রয়েছে, যাতে শুধু আরবী বালাগাতের কায়দাসমূহ এবং মূল মূল আলোচনা রয়েছে এবং তাতে কোনো ইখতিলাফ নেই- তার নাম কামনা করছি। সাথে সাথে তার গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ও?

৬. মাকামাতুল হারীরী কিতাবের শব্দার্থ থেকে সঠিক অর্থ কীভাবে তোলা যায় এবং ভাবানুবাদের ক্ষেত্রে কী কী নিয়ম মানতে হয়?

উত্তর

(ক) অনুবাদ শেখার জন্য নমুনা হিসেবে হযরত মাওলানা আবু তাহের মেসহাব দামাত বারাকাতুহুম এর ‘আত-তরীক ইলাল কুরাআনিল কারীম’ দেখতে পারেন। এমনিভাবে ‘কাসাসুন নাবীয়্যীন’ কিতাবের যে নুসখাটি হযরত আবু তাহের মেসবাহ দামাত বারাকাতুহুমের পরিশিষ্ট ও অনুশীলনীসহ ছেপেছে সেটির সহযোগিতা নিতে পারেন। এর শুরুতে হযরতের যে ভূমিকাটি রয়েছে তা ভালোভাবে পড়–ন।

(খ) এর জন্য আসল করণীয় হল, নিজে আরবী ভাষার ইস্তেদাদ ও যওক হাসিল করা এবং বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের রুচিবোধ অর্জন করা।

(গ) বাংলা থেকে আরবী বা আরবী থেকে বাংলা মানসম্মত ও সমৃদ্ধ অভিধানের বড়ই অভাব। আপনি হযরত মাওলানা আবূ তাহের মেসবাহ দামাত বারাকাতুহুমের ‘আল-মানার’ বাংলা-আরবী অভিধানটির সহযোগিতা নিতে পারেন। তবে মনে রাখতে হবে, তালিবে ইলমের জন্য আসল করণীয় হল, সরাসরি আরবী লুগাত ও আদবের কিতাব থেকে ইস্তেফাদা করা। আর বাংলা প্রতিশব্দ ও বাকধারা এবং বাকরীতি জানার জন্য নিজে মেহনত করা এবং উস্তাযের সহযোগিতা নেয়া।

(ঘ) হুরুফুল মায়ানী সম্পর্কে স্বতন্ত্র কিতাব রয়েছে। যেমন ইমাম আহমদ ইবনু আব্দিন নূর আল-মালাকী (৭০৬ হি.) রচিত- رصف المباني في شرح حروف المعاني । এছাড়া ইমাম ইবনে হিশাম নাহবী রাহ.-এর المغني গ্রন্থেও হুরুফুল মায়ানী সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে।

(ঙ) আপনি বালাগাতের যে ধরনের কিতাব তালাশ করছেন, নেসাবভূক্ত دروس البلاغة কিতাবটি তো সে ধরনেরই একটি কিতাব। আপনি এর সাথে মিসর থেকে প্রকাশিত البلاغة الواضحة কিতাবটি পড়তে পারেন। এটি প্রায়োগিক বালাগাতের দৃষ্টিকোণ থেকে রচিত, অনুশীলনভিত্তিক গ্রন্থ।

(চ) মাকামাতুল হারীরী কিতাবের যে বাংলা অনুবাদটি মাওলানা আহমদ মায়মুন সাহেব করেছেন তা থেকে ইস্তেফাদা করতে পারেন।

এই সংখ্যার অন্যান্য শিক্ষা পরামর্শসমূহ পড়ুন