ইবনে আবু বকর - ভবানীপুর মাদরাসা, গোপালগঞ্জ
প্রশ্ন
সালামে মাসনূন বাদ হযরতওয়ালা দামাত বারাকতুহুম-এর কাছে জানতে আগ্রহী, إن বা أن তথা الحرف المشبه بالفعل -এর اسم থাকা জরুরি। অথচ হিদায়া কিতাবের অনেক স্থানে বিশেষ করে দ্বিতীয় খণ্ডের ৩৪৭ পৃষ্ঠায় ব্যবহৃত হয়েছে, ولنا أن مع التباين حقيقة وحكما لا ينتطم ... الخ তদ্রƒপ হাদীসের মধ্যেও এসেছে, فإن بالمعصية حل سخط الله ফলে এ ব্যাপারে কোনো নাহবী কিতাবের উদ্ধৃতিতে সমাধান দিতে হুযুরের সুমর্জি কামনা করছি। (খ) বায়যাবী শরীফে وبالآخرة هم يوقنون আয়াতের ব্যাখ্যায় উল্লেখ হয়েছে, لا يوصف باليقين علم الباري تعالى ولا العلوم الضرورية অথচ نخبة الفكر গ্রন্থের ১০ নং পৃষ্ঠায় হযরত মুসান্নেফ রাহ. উল্লেখ করেছেন, المتواتر وهو المفيد للعلم اليقيني আর এখানে উদ্দেশ্য علم ضروري তাহলে এর সমন্বয় কীভাবে? আল্লাহ তাআলা আপনাকে সিহ্হাত ও কামিয়াবী দান করুন।
উত্তর
হাদীস থেকে এবং হিদায়া কিতাব থেকে যে উদাহরণ দুটি উল্লেখ করেছেন তাতে ‘ইন্না’-এর ইসমটি মাহযুফ বা উহ্য রয়েছে, যা মূলত একটি যমীরে শান। নাহবের কিতাবে এধরনের আরো শাওয়াহেদ উল্লেখ রয়েছে। যেমন, إن بك زيد مأخوذ এবং إن في الدار يجلس أخوك। (দ্রষ্টব্য শরহুর রযী আলাল কাফিয়া ২/৩৬১-৩৬২; খিযানাতুল আদব, আব্দুল কাদের বাগদাদী ১০/৪৪৪-৪৪৫) (খ) ‘ইয়াকীন’ শব্দটি দ্বিধা ও সন্দেহমুক্ত ইলমে ইস্তেদলালীর জন্য খাস নাকি স্বতঃসিদ্ধ ইলমে ইজতেরারীর জন্যও প্রয়োগ করা হবে- এ ব্যাপারে ফালসাফা ও ইলমুল কালাম শাস্ত্রবিদদের মাঝে ইখতেলাফ রয়েছে। কারো কারো মত হল, ইয়াকীন শব্দটি ইলমে ইস্তেদলালীর জন্য খাস। বায়যাবী রাহ. এখানে এই মতটিকেই গ্রহণ করেছেন। অন্যথায় অধিকাংশের মত হল, ‘ইয়াকীন’ শব্দটি যে কোনো সন্দেহাতীত ইলম ও বিশ্বাসের জন্য প্রয়োগ করা যাবে। এতে ইলমে ইস্তেদলালী ও ইলমে ইজতেরারীর মাঝে কোনো ফারাক নেই। নুখবাতুল ফিকার কিতাবে অধিকাংশের এই মতটিকে গ্রহণ করা হয়েছে। দ্রষ্টব্য : হাশিয়াতুত শিহাব আলাল বায়যাবী ২/২৩৯; হাশিয়া মুহিউদ্দীন শায়েখ যাদাহ ১/২০২ যাহোক উপরোক্ত ইখতেলাফ আমার জানামতে কেবল ইলমুল কালাম ও ফালসাফার ইস্তেলাহের ইখতেলাফ। অন্যথায় আরবী ভাষায় মূলত যে কোনো সন্দেহাতীত ইলম ও বিশ্বাসের জন্য ইয়াকীন শব্দটি প্রয়োগ হয়। আরবী ভাষার নির্ভরযোগ্য বিশদ অভিধানসমূহ দেখলে একথাই বুঝে আসে। তবে একথা ঠিক যে, আল্লাহ তাআলার সিফাতে ইলমের জন্য ইয়াকীন শব্দটি ব্যবহার হয় না। কারণ, আল্লাহ তাআলার ইলম তো ইলমে যাতী। অথচ ইয়াকীন শব্দটি ইলমে কাসবীর জন্য নির্দিষ্ট।