ইবনে আব্দিল খালেক - খুলনা
প্রশ্ন
নিচের বিষয়গুলো আপনার কাছে জানতে চাই।
ক) ফিকহে হানাফীর আলমাবসূত গ্রন্থে যেমন সমস্ত প্রসিদ্ধ মাসাইল কুরআন ও সুন্নাহর দলীলসহ উল্লেখ আছে তেমনি বাকি তিন মাযহাব ও গায়রে মুকাল্লিদের অনুরূপ একটি করে কিতাবের নাম।
খ) আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের ‘আকীদাতুত তহাবী’ ব্যতীত আক্বীদা সম্পর্কিত নির্ভরযোগ্য ও বিস্তৃত কিতাবের নাম।
গ) চার মাযহাবের ফিকহী উসূল কি ভিন্ন? ভিন্ন হলে একটি বা দু’টি করে নির্ভরযোগ্য উসূলের কিতাবের নাম।
ঘ) রিজাল শাস্ত্রে পারদর্শিতা অর্জনের জন্য পরামর্শ ও এ বিষয়ক প্রয়োজনীয় কিতাবের নাম।
ঙ) উসূলে হাদীসের কিছু কিতাবের নাম।
উত্তর
ক. ফিকহে মালেকীতে এ ধরনের কিতাব ইবনে আবদুল বার রাহ. (৪৬৩ হি.) -এর‘আলইসতিযকার শরহুল মুয়াত্তা’, ফিকহে শাফেয়ীতে নববী রাহ. (৭৭৬ হি.) -এর ‘আলমাজমু শরহুল মুহাযযাব’, ফিকহে হাম্বলীতে ‘আলমুগনী’ ইত্যাদি। ফিকহে হানাফীতে সারাখসী রাহ.-এর‘আলমাবসূত’-এর চেয়ে তার পূর্বের তহাবী, জাসসাস, কুদূরী প্রমুখের লিখিত গ্রন্থগুলো অধিক গভীরতা ও মৌলিকত্বের অধিকারী।
গায়রে মুকাল্লিদদের কোনো আলাদা ‘ফিকহ’ নেই, যদি আপনি তাদেরকে জাহেরী মাযহাবের সমকালীন অনুসারী বলে গণ্য করেন তাহলে ইবনে হাযম জাহেরীর ‘আলমুহাল্লা বিল আছার’-এর কথা বলা যায়।
মিসরের সাইয়্যেদ সাবেক রাহ. ‘ফিকহুল কিতাবি ওয়াসসুন্নাহ’ নামে একটি কিতাব লিখেছেন, যা গায়রে মুকাল্লিদদের মধ্যে খুব প্রচলিত। প্রজ্ঞাবান আলেমদের জন্য এ কিতাবটি অধ্যয়নযোগ্য। তবে এ কিতাবটির প্রকৃত নাম হওয়া উচিত ‘ফিকহুস সাইয়্যেদ সাবেক ফিল কিতাবি ওয়াস সুন্নাহ।’ গায়রে মুকাল্লিদদের অন্যতম অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানী রাহ. সাইয়্যেদ সাবেক সাহেবের এই কিতাবের উপর ‘তামামুল মিন্নাহ ফিত তা‘লীকি আলা ফিকহিস সুন্নাহ’ নামে খন্ডন লিখেছেন। অধ্যয়নের সময় এ কিতাবটিও পাশে থাকা জরুরি।
খ. এ বিষয়ে আবু বকর বাকেল্লানী (৪০৩ হি.)-এর কিতাব ‘আনইনসাফ’, সদরুল ইসলাম বাযদভী (৪৯৩ হি.)-এর ‘উসূলুদ্দীন’, মুহাম্মদ ইবনে মায়মূন মাকহুলী -এর ‘তাবসিরাতুল আদিল্লা’, গাযালী রাহ.-এর ‘কাওয়াইদুল আকাইদ’, ইবনুল হুমাম রাহ. (৮৬১ হি.)-এর ‘আলমুসায়ারাহ’ ও তার ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘আলমুসামারাহ’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। নতুন কিতাবসমূহের মধ্যে ড. মুস্তফা আলখান এর ‘আল আকীদাতুল ইসলামিয়া’ ও শায়েখ জামালুদ্দিন কাসেমীর দালায়েলুত তাওহীদের কথাও বলা যায়।
গ. এ বিষয়ে আবু বকর জাসসাস আলহানাফী (৩৭০ হি.)-এর ‘আলফুসূল ফিলউসূল’, কাযী আবুল ওয়ালিদ বাজী আলমালেকী এর ‘আলইহকাম’। আবুল মুজাফফর সামআনী আশশাফেয়ী রাহ.-এর‘কাওয়াতিউল আদিল্লা, বদরুদ্দীন যরকাশী আশশাফেয়ী রাহ.-এর ‘আলবাহরুল মুহীত ফী উসূলিল ফিকহ’, সুলায়মান ইবনে আবদুল কাভী আততুফী আলহাম্বলী-এর ‘শরহু মুখতাসারি রওযাতিত তালেবীন’ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
ড. আবদুল করীম আননামলাহ-এর কিতাব ‘আলমুহাযযাব ফী ইলমি উসূলিল ফিকহিল মুকারান’যা পাঁচ খন্ডে প্রকাশিত হয়েছে আলেমদের জন্য মুতালাআযোগ্য।
ঘ. ইলমে আসমাউর রিজাল অনেকগুলো ‘ফন’-এর সমষ্টি। ‘আলমাদখাল ইলা উলূমিল হাদীসিশ শরীফ’ (মারকাযুদ দাওয়াহ থেকে প্রকাশিত) এবং ‘বুহুছুন ফিসসুন্নাতিল মুশাররফা’ ড. আকরাম ওমারী থেকে এই ইলম সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা অর্জন করা যেতে পারে।
এই ফনের আমলী মুতালাআর সূচনা যে কিতাবগুলো দ্বারা করতে পারেন তা হচ্ছে:
১. খায়রুদ্দীন যিরিকলী-এর ‘আলআ’লাম’
২. হাফেয ইবনে হাজার রাহ.-এর ‘তাকরীবুত তাহযীব’
৩. শামসুদ্দীন আযযাহাবী রাহ.-এর ‘আলকাশিফ’ ও ‘তাযকিরাতুল হুফফায’।
‘তাকরীব’ ও ‘কাশিফ’ এই দুই কিতাবের শায়খ মুহাম্মদ আওয়ামা-এর তাহকীককৃত এডিশন সংগ্রহ করা উচিত।
ঙ. এ বিষয়ে ‘আলমাদখাল ইলা উলূমিল হাদীসিশ শরীফ থেকে প্রাথমিক দিক-নির্দেশনা পাওয়া যেতে পারে।
আপনার চিঠির সঙ্গে জবাবী খাম আমি পাইনি এবং চিঠিতে ঠিকানাও ছিল না। এজন্য জওয়াব আলকাউসারে প্রকাশ করে দিচ্ছি ।