যিলক্বদ ১৪৩৫ || সেপ্টেম্বর ২০১৪

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক - মারকাযুল বুহূস আলইসলামিয়া, ঢাকা

প্রশ্ন

(ক) হযরত ওয়ালা দামাত বারাকাতুহুম-এর কাছে জানতে আগ্রহী যে, আমরা জানি ইমাম আবু যোহরা রাহ. একজন অনেক বড় আলেম ছিলেন। তিনি স্বীয় কিতাব উসূলুল ফিকহ-এর বহসুল মানদুব-এর ৪১ নং পৃষ্ঠায় লিখেছেন, ‘দাড়ি লম্বা করা এটা সুনানে আদিয়ার অন্তর্ভুক্ত। যে এটাকে দ্বীনের অংশ বা আবশ্যকীয় কোনো বিষয় মনে করবে তাহলে সে দ্বীনের মাঝে এমন বিষয় উদ্ভাবন করল যা তাতে নেই।’ এখানে হযরত ওয়ালা দামাত বারাকাতুহুম-এর কাছে জানার বিষয় হল ইমাম আবু যোহরা রাহ.-এর তাহকীক বা রচনাকৃত এ কিতাবের মান কী? তিনি কোন পর্যায়ের ব্যক্তিত্ব ছিলেন? তিনি কোন কোন দলিলের ভিত্তিতে দাড়িকে সুন্নতে আদিয়া লিখেছেন এবং আহলে হক্বের পক্ষ থেকে সেগুলোর উত্তর কী?

(খ) হযরত ওয়ালা দামাত বারাতুহুম-এর কাছে জানতে আগ্রহী যে, শায়খুল ইসলাম তকী উসমানী দামাত বারাকাতুহুম-এর উসূলুল ইফতা ওয়া আদাবুহু কিতাবের নতুন নুসখার ৯৩ নং পৃষ্ঠায় ২নং হাশিয়ার ৭ নম্বর লাইনের وجامعه موجود حتى اليوم في قازان وزرته...  -এ ইবারত থেকে হযরত ওয়ালা দামাত বারাকাতুহুম-এর কাছে জানার বিষয় হল; যেই جامع -এর সাথে তাকী উসমানী ছাহেব দামাত বারাকাতুহুম সাক্ষাৎ করেছেন সেই جامع দ্বারা স্বয়ং নাযুরাতুল হক-এর মুসান্নিফ উদ্দেশ্য, নাকি অন্য কোনো  সংকলক উদ্দেশ্য? যদি ناظورة الحق -এর মুসান্নিফ উদ্দেশ্য হয় তাহলে তিনি কত বসর হায়াত পেয়েছেন? আর যদি অন্য কোনো সংকলক উদ্দেশ্য হন তাহলে তাঁর পরিচয় কী? মেহেরবানি করে তা জানাবার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা গেল। জাযাকুমুললস্নাহু খাইরান।

উত্তর

(ক) শায়খ মুহাম্মাদ আবু যাহরা রাহ. (১৩১৬-১৩৯৪ হি.) গত শতকে মিসরের হানাফী মাযহাবের অনুসারী একজন মুহাক্কিক আলেম ও মুসান্নিফ। তাঁর লিখিত ‘উসূলুল ফিকহ’ কিতাবটি সহজবোধ্য এবং মুফীদ। এ কিতাব থেকে ইস্তেফাদার সময় কোনো বিষয় শায বা গরীব মনে হলে সে ক্ষেত্রে স্থানীয় মুহাক্কিক আহলে ইলমদের শরণাপন্ন হতে হবে এবং তাঁদের রায়কে প্রাধান্য দিতে হবে।

দাড়ি সম্পর্কে উপরোক্ত কিতাবে উল্লিখিত রায়টি মুনকার। মাসনূন তরীকায় দাড়ি রাখা একটি ওয়াজিব আমল এবং সুন্নতে হুদার গুরুত্বপূর্ণ শাখা। দাড়ি লম্বা করার নির্দেশ সম্বলিত হাদীসসমূহের ব্যাখ্যা শরহে হাদীসের নির্ভরযোগ্য কিতাবে পাঠ করলেও বিষয়টি বুঝতে পারবেন। এ ব্যাপারে শায়খুল হাদীস যাকারিয়া রাহ. রচিত ‘ডারহীকা উজুব’ নামক পুস্তিকা দ্রষ্টব্য।

 

(খ) উক্ত ইবারত একটু খেয়াল করে পড়লে বুঝতে পারবেন, এখানে جامع  অর্থ সংকলক নয়, বরং মসজিদ। ‘নাযুরাতুল হক ফী ফরযিয়্যাতিল ইশা ওয়া ইনলাম ইয়াগিবিশ শাফাক’ কিতাবের মুসান্নিফ হলেন, হিজরী তের শতকের হানাফী ফকীহ হারুন ইবনে বাহাউদ্দিন আল মারজানী (১২৩৩-১৩০৬ হি.) রাহ.। তিনি বর্তমান রাশিয়ার কাযান শহরের অধিবাসী ছিলেন। এই কাযান শহরের যে মসজিদে তিনি থাকতেন এবং দরস দিতেন সেটি তাঁর নামের সাথে সম্বন্ধ করে মসজিদে মারজানী নামে এখনো পরিচিত। এই মসজিদের কথাই উস্তাযে মুহতারাম মাওলানা মুহাম্মাদ তকী উসমানী দামাত বারাকাতুহুম উক্ত ইবারতে বলেছেন। রাশিয়া সফরকালে তিনি পরিদর্শন করেছেন। এ সম্পর্কে তিনি তাঁর সফরনামা ‘সফর দর সফর’ -এ বিস্তারিত লিখেছেন, আপনি তা দেখতে পারেন।

এই সংখ্যার অন্যান্য শিক্ষা পরামর্শসমূহ পড়ুন