নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক - বাইতুল উলূম ঢালকানগর
প্রশ্ন
হুজুরের কাছে জানার বিষয় হল, হাদীসে মুসালসাল-এর যে রেওয়াজ চলছে আমাদের মাঝে, ইলমী দৃষ্টিকোণ থেকে এর গুরুত্ব কতটুকু এবং এর ফয়েদাই বা কী?
বিশেষ করে যখন এর মধ্যে মওযূ’ হাদীসের সংখ্যা প্রচুর।
হাদীসুল মুসালসালাত-এর ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ হব।
উত্তর
উলূমুল হাদীসের একটি উপশাখার আলোচ্য বিষয় হল, হাদীসে মুসালসাল সংক্রান্ত আলোচনা। এর বিভিন্ন ধরন ও প্রকার রয়েছে। হাদীস বর্ণনার সময় আনুষাঙ্গিক কোনো বিষয় বা ঘটনার অবতারণা বা উল্লেখের তাসালসুল ও ধারাবাহিকতা সাহাবায়ে কেরাম থেকেই শুরু হয়েছে। তবে প্রথমে তা ঘটেছিল স্বাভাবিক নিয়মে, যা পরবর্তী রাবীগণ নকল ও অনুকরণ করেছেন কৃত্রিমরূপে।
এই তাসালসুল রক্ষা করা কোনো ওয়াজিব বা অপরিহার্য বিষয় নয়। এটি মূলত ইকতিদা ও অনুকরণের জযবা, বরকত লাভের আশা এবং রেওয়ায়েতের ক্ষেত্রে তাফান্নুন ও বৈচিত্র সৃষ্টির প্রবণতা থেকে উৎসারিত।
তাসালসুল যদি সহীহও প্রমাণিত হয় তবে তা সনদের একটি গুণ ও বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ কারণে তাসালসুলের কোনো কোনো প্রকার এ কথার নিশ্চয়তা প্রদান করে যে, সনদটি সব ধরনের ইনকেতা ও বিচ্ছিন্নতা থেকে মুক্ত। অনুরূপভাবে তাসালসুলের কোনো কোনো প্রকার অর্থাৎ হাদীস বর্ণনার সময় সংশ্লিষ্ট কোনো ঘটনার উল্লেখ প্রমাণ বহন করে যে, রাবী মূল হাদীসটি সঠিকভাবে যবত করেছেন ও মনে রেখেছেন।
বাকি থাকল ‘আসরুর রিওয়ায়াত’ এর পরেও বর্তমান যমানা পর্যন্ত হাদীসে মুসালসালের দরস ও রেওয়ায়েতের রেওয়াজ চালু রাখার প্রসঙ্গ। তো এর কারণ হচ্ছে বিশেষ ধরনের এই সনদের ধারাবাহিকতা রক্ষার মাধ্যমে নিছক বরকত লাভের আকাঙ্খা। কিন্তু বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এই বরকত লাভের জন্যও জরুরি হল, মূল হাদীসের রেওয়ায়েত ও এর তাসালসুল সহীহ ও প্রমাণিত হওয়া। কারণ কোনো মওযূ বা অবাস্তব তাসালসুলের মাধ্যমে বরকত লাভ হতে পারে না। হাদীসে তাসালসুল সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানার জন্য নিম্নোক্ত কিতাবগুলো দেখা যেতে পারে : ১. যফারুল আমানীতে মুসালসালের বহছ, শায়খ আবদুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ রাহ.-এর তালীকসহ।
২. আলওজীয ফীমা ইয়াবতাগীহিল মুসতাজিয, শায়খ যাহেদ আলকাউসারী রাহ.-এর মুকাদ্দিমা।
৩. আলআওয়াইলুস সুনবুলিয়াহ-এর শুরুতে শায়খ আবদুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ রাহ.-এর মুকাদ্দিমা।
৪. ইমাম সুয়ূতী রাহ.-এর জিয়াদুল মুসালসালাত’ কিতাবের শুরুতে শায়খ মুহাম্মাদ আওয়ামাহ এবং শায়খ মাজ্দ আলমক্কী-এর মুকাদ্দিমা।