রুহুল আমীন - মাদানীনগর
প্রশ্ন
(ক) আমি একজন জামাতে শরহে জামীর ছাত্র, আমাদের দরসের পাঠ্য কিতাবগুলো হচ্ছে, শরহে তাহযীব, শরহে জামী, তরজমাতুল কুরআন (২১-৩০), লামিয়াতুল মু‘জিযাত, কানযুদ্দাকায়েক, নূরুল আনওয়ার ও মাআরিফুল হাদীস। এগুলোর মধ্য থেকে শরহে জামী, শরহে তাহযীব ও নূরুল আনওয়ারের এমন কিছু বহছ রয়েছে যা সহজে বুঝতে সক্ষম হই না.....
খ) বর্তমান সময়ে অনেক ছাত্র-উস্তাযের মাঝে ইলমে বালাগাত ও ইলমে মান্তেকের প্রতি অনিহা দেখা যাচ্ছে, আসলেই কি এখন এই দুই ফনের জ্ঞানের প্রয়োজন নেই? নাকি তারা ধোকার মধ্যে আছে। বর্তমান যামানায় উক্ত দুই ফনের উপর কী পরিমাণ জ্ঞান রাখা দরকার এবং আমরা কীভাবে এখন সফল হতে পারবো এ বিষয়ে মুহতারামের নিকট পরামর্শ কামনা করছি।
গ) বুযুর্গরা বলে থাকেন রাস্তা-ঘাটে চলতে ফিরতে যিকিরে ফিকিরে চলা। কিন্তু একজন তালিবে ইলমের জন্য তালিবে ইলম হাইছিয়্যাতে কোন্ দুআটি পড়লে ইলমে-আমলে তারাক্কি হবে এবং রিযায়ে ইলাহীর মাধ্যম হবে? জানালে উপকৃত হব।
উত্তর
(ক ও খ) আপনার প্রশ্নের উল্লেখিত বিষয়সমূহ এবং মানতেক সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব ইতোপূর্বে শিক্ষাপরামর্শ বিভাগে কয়েকবার দেওয়া হয়েছে। সুতরাং ‘তালিবানে ইলম : পথ ও পাথেয়’ নামে মাকতাবাতুল আশরাফ থেকে প্রকাশিত বইটিতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপরামর্শগুলো দেখতে পারেন। বাকী থাকল ইলমুল বালাগাতের প্রসঙ্গ। তো বালাগাত অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি ফন। কারণ, আল্লাহর কালাম কুরআনের মূল إعجاز হলো বালাগাত। সুতরাং বালাগাতের পরিপূর্ণ জ্ঞান ও রুচি অর্জন ছাড়া কালামুল্লাহর إعجاز অনুধাবন করা সম্ভব নয়। এছাড়াও যে কোনো আরবী ইবারত ও নুসুসের সঠিক ভাব ও মর্ম উদ্ধার এবং সহীহ ও সুন্দর অনুবাদের ক্ষেত্রে বালাগাতের জ্ঞান প্রয়োজন হয়। তাফসীর ও শরহে হাদীসের অনেক কিতাবে ইলমুল বালাগাতের পরিভাষা ব্যবহৃত হয়েছে। আর আদব ও সাহিত্যের অঙ্গনে তো বালাগাতের রুচিবোধ অপরিহার্য বিষয়। এসব কারণে একজন তালিবে ইলমের জন্য তত্ত্বীয় ও প্রায়োগিক উভয় দিক থেকে বালাগাত শাস্ত্রের সাথে সুনিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলা বাঞ্চনীয়।
উত্তর : গ) একজন তালিবুল ইলমের কর্তব্য হলো, দরস, মুতালাআ ও তামরীনের বাইরেও ইবাদত-বান্দেগী ও নির্ধারিত মামুলাত আদায়ের পর সর্বাবস্থায় অর্থাৎ চলতে ফিরতে, উঠতে-বসতে, এমনকি ঘুমানোর জন্য বিছানায় যাওয়ার পর ঘুম আসা পর্যন্ত ইলমের চর্চা ও ইলমের ফিকিরে মশগুল থাকা। যেমন- কোনো মাসায়েল মুখস্ত করতে থাকবে বা চিন্তা করতে থাকবে, জটিল কোনো মাসাআলার সমাধান নিয়ে ভাববে আর একজন তালেবে ইলম হিসেবে বিভিন্ন সময়ের ও অবস্থার মাসনূন দুআগুলোর পাশাপাশি ইলম ও আমলের উন্নতির জন্যও বেশি বেশি দুআ করবে। এ বিষয়েও অনেক মাসনূন ও মাছূর দুআ রয়েছে। যেমন-
اللهم إني أسئلك علما نافعا ورزقا طيبا وعملا متقبلا
(মুসনাদে আহমাদ, ৬/২৯৪; আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলা, নাসায়ী ১০২; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস: ৯২৫)
اللهم انفعني بما علمتني وعلمني ما ينفعني وزدني علما
(মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বাহ, হাদীস: ৩০০০৬; জামে তিরমিযী, হাদীস: ৩৫৯৯
اللهم إني أعوذ بك من علم لا ينفع ومن قلب لا يخشع ومن نفس لا تشبع ومن دعوة لا يستجاب لها
(সহীহ মুসলিম, হাদীস: ২৭২২)