মুহাম্মদ উসমান গনী - কিশোরগঞ্জ

প্রশ্ন

আমি জালালাইন জামাতের একজন ছাত্র। আমার মনে প্রায় সময় একটি প্রশ্ন জাগে যে, আমরা হানাফী মাযহাবের অনুসারী। যার ফলে যে কোনো মাসআলা অন্য কোনো ইমামের সাথে মতানৈক্য হলে দলীল প্রমাণ দিয়ে আমাদের মাযহাবকে প্রমাণ করি এবং অন্য ইমামদের মাযহাবকে কখনো বাতিল আবার কখনো অনুত্তম বলে প্রমাণ করি। তাই আমার প্রশ্ন হল, অন্যান্য ইমামগণ কি সারা জীবন বাতিল বা অনুত্তম মাসআলার উপর আমল করেছেন? এবং এরই দিকে জাতিকে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন? আশা করি উক্ত প্রশ্নের জবাব দিয়ে আমাকে চিরকৃতজ্ঞ করবেন। আল্লাহ তাআলা আপনাকে উভয় জাহানে কল্যাণ দান করুন।

উত্তর

ইমামগণের মাঝে ফুরুয়ী মাসায়েলের ব্যাপারে যেসব ইখতিলাফ সেসব তো হক-বাতিলের ইখতেলাফ নয়, বরং সওয়াব খতা-র ইজতিহাদী ইখতেলাফ। কোনো মুহাক্কিক আলেম এ ধরনের মাসায়েলের দালিলিক আলোচনায় দলিলনির্ভর কোনো ইজতিহাদী রায়কে বাতিল বলেন না। তাই এ নিয়ে পেরেশানীর কোনো কারণ নেই। বিষয়টি যথাযথ অনুধাবন করতে নিম্নোক্ত কিতাবগুলো মুতাআলা করুন।

১. ইখতিলাফে উম্মত আওর সীরাতে মুস্তাকীম মাওলানা মুহাম্মদ ইউসুফ লুধিয়ানবী রহ.

২. আদাবুল ইখতিলাফ ফী মাসাইলিল ইলমি ওয়াদ্দীন শায়খ মুহাম্মদ আওয়ামা

৩. আছারুল হাদীসিশ শরীফ ফিখতিলাফিল আইম্মাতিল ফুকাহা শায়খ মুহাম্মদ আওয়ামা

শেয়ার লিংক

মুহাম্মদ মহিউদ্দীন আনিস - হাটহাজারী, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ।

প্রশ্ন

ক. ..., খ. ...

গ. আমাদের জামিয়ায় শরহে বেকায়া নামক কিতাবটি পড়ানো হয় না। তাই আমি আগামী বছর হিদায়া ১ম বর্ষে পড়ব। আমি হিদায়ার দুটি শরাহ কিনেছি। তন্মধ্যে একটি হচ্ছে, আশরাফুল হিদায়া (উর্দু) যা ৯ ভলিউমে ১৬ খণ্ডে সমাপ্ত। আর অপরটি হচ্ছে, দরসে হিদায়া (উর্দু) যা শুধু হিদায়া আওয়ালাইনের শরাহ এবং ৩ ভলিউমে ৪ খণ্ডে সমাপ্ত।

হুজুর, আমি হিদায়ার আরও কিছু শরাহ কিনার চিন্তা-ভাবনা করেছি। সেগুলো হচ্ছে, ১. ফাতহুল ক্বাদীর, ২. আল-বিনায়া এবং নাছবুর রায়া ফী তাখরীজি আহাদীসিল হিদায়া, এখন হুজুরের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ এই যে, উল্লেখিত শরাহগুলোর কোনটির কি বৈশিষ্ট্য রয়েছে, তা উল্লেখ করবেন। আর এই কিতাবগুলো আমি কিনব কি না? কিনলে আমার লাভ কতটুকু হবে, তাও উল্লেখ করবেন।

ঘ. ........

উত্তর

ক. দাওরাপূর্ব শিক্ষার জন্য বাহিরের সফর এমনিতেই সমীচীন নয়। আর আপনি নিজেই যে পরিস্থিতি উল্লেখ করেছেন সে প্রেক্ষাপটে কোনোক্রমেই তা ঠিক হবে না। আরব দেশের কোনো জামিয়ায় পড়তে হলে সেক্ষেত্রে দেশেই দাওরায়ে হাদীস পড়া উচিত এবং দাওরার পর হাদীস ও ফিকহের কোনো মাহির আলেমের সোহবতে থেকে তাখাসসুস-এর নেসাবও পুরা করা উচিত। তারপরই আরব দেশের ইলমী সফর মুফীদ বা কল্যাণকর হবে।

খ. আপনার জন্য এ পদক্ষেপ ঠিক হবে না। যে তালীমে আল্লাহ তাআলা লাগিয়েছেন ইস্তেকামাতের সাথে তা সম্পন্ন করার ব্যাপারে সচেষ্ট থাকুন।

গ. হিদায়ার ইবারত হল করার জন্য আলবিনায়া কিতাবটি বেশি উপকারী। সুরতে মাসআলা স্পষ্টকরণ ও ওজহে ইস্তেদলাল-এর সঠিক মর্ম উদ্ধার করার জন্য ফাতহুল কাদীর বেশি উপযোগী। হিদায়ায় উল্লিখিত আহাদীস আছার-এর হাওয়ালা ও সনদগত অবস্থান জানার জন্য নসবুর রায়া-এর কোনো বিকল্প নেই। তবে শেষোক্ত কিতাবটির সাথে ইমাম কাসেম ইবনে কুতলুবুগা সংকলিত মুনইয়াতু আলমায়ী কিতাবটি অবশ্যই মুতালাআ করতে হবে। আর নসবুর রায়ার যে সংস্করণ জেদ্দা দারুল কিবলা থেকে ৬ খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে সেটিই সংগ্রহ করার উচিত।

তদ্রূপ আলবিনায়া-এর মাওলানা যায়েদ আহমদ কর্তৃক সংকলিত ও মুলতান থেকে প্রকাশিত সংস্করণটিই নির্ভরযোগ্য।

উল্লেখিত কিতাবগুলো সংগ্রহ করা যে আপনার জন্য উপকারী হবে তা বলাই বাহুল্য।

ঘ.  اِنَّ اللّٰهَ هُوَ الرَّزَّاقُ ذُو الْقُوَّةِ الْمَتِیْنُ

তাই জরুরি কিতাব সংগ্রহ এবং অন্যান্য জরুরি কাজে উক্ত অর্থ ব্যয় করাই আপনার জন্য অধিক সমীচীন। তবে সর্বাবস্থায় ইসরাফ থেকে বাঁচা জরুরি।

শেয়ার লিংক