আসসালামু আলাইকুম। আল্লাহ আপনাকে জাযায়ে খায়ের দান করুন। হুযুর! আমি জামাতে কাফিয়ায় পড়ি। আমার প্রশ্ন হল :
ক. আরবী পড়তে আমার খুব ভালো লাগে, কিন্তু আমি এবারত পড়ে যথাসম্ভব অর্থ তুলতে পারি না।
খ. আরবী পত্রিকা পড়ার চেষ্টা করি। কিন্তু ভালো করে বুঝি না। বিশেষ করে যে লেখাগুলো বিদেশী পত্রিকা থেকে দেওয়া হয়।
গ. লিখতেও চেষ্টা করি, কিন্তু সুন্দরভাবে লিখতে পারি না। একই শব্দ বারবার ব্যবহার করতে হয়। নতুন শব্দ ব্যবহারে প্রায় অক্ষম। যদিও ব্যবহার করি, কিন্তু বেশিদিন মনে রাখতে পারি না। এখন হযরতের কাছে জানার বিষয় হল, কীভাবে আমি এই সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পেতে পারি? আশা করি জানিয়ে বাধিত করবেন।
ক. ‘অর্থ তুলতে পারি না’ এটা কেমন কথা! আপনি অর্থ তুলতে যাবেন কেন? অর্থ আপনি বুঝবেন এবং উপলদ্ধি করবেন। কাফিয়া জামাত পর্যন্ত যেসব আরবী কিতাব পড়া হয়েছে তা থেকে তো এই যোগ্যতা অর্জন হওয়ার কথা যে, যে কোনো আরবী কিতাব আপনি বুঝে বুঝে পড়বেন, যেভাবে কোনো বাংলা বই আপনি বুঝে বুঝে পড়েন।
যাইহোক, ‘অর্থ তুলতে পারি না’Ñ একথার উদ্দেশ্য যদি হয় সঠিক অর্থ ও মর্ম বুঝতে না পারা, তবে মনে রাখতে হবে, নাহু, সরফ এবং লুগাতের মাবাদিয়াত সম্পর্কে পাঠ গ্রহণ করার পরও কিতাবের ইবারত পড়ে যথাযথ অর্থ বুঝতে না পারার নানা কারণ রয়েছে। এক. নাহবী তারকীব যথাযথ বুঝতে না পারা। যেমন, কোনটি ফায়েল এবং কোনটি মাফউল, কোনটি মুবতাদা এবং কোনটি খবর, কোন যমীরের মারজে কী, ইসমে ইশরার মুশারুন ইলাই কীÑ এসব বিষয় সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে না পারা।
দুই. কোনো শব্দের মূল অর্থ জানা, ব্যবহারিক অর্থ না জানা। এজন্য লুগত থেকে এবং ইবারতের পূর্বাপর থেকে শব্দের উদ্দিষ্ট ব্যবহারিক অর্থ বোঝার চেষ্টা করতে হবে।
তিন. কিতাবটি যে ফনের সে ফনের পরিভাষা এবং বুনিয়াদী বিষয়াবলী সম্পর্কে ওয়াকিফহাল না থাকা।
তো কী কারণে আপনি যথাযথ অর্থ ও মর্ম উদ্ধার করতে পারেন না তা আগে আপনাকে নির্ণয় করতে হবে এবং তা করতে হবে কোনো উস্তাযের কাছ থেকে নিজের অবস্থা যাচাই করে। অতপর সেই কারণটি দূর করার মেহনত করতে হবে উস্তাযের নেগরানীতে।
আর যদি আপনার কথার উদ্দেশ্য হয় অর্থ বুঝতে পারা সত্ত্বেও মুখে প্রকাশ করতে না পারা, তবে তো এর জন্য কথা প্রকাশের অনুশীলন প্রয়োজন। আর এ কাজটি আপনি নিয়মিত তাকরারে অংশগ্রহণের মাধ্যমে করতে পারেন।
খ-গ. দেখুন, আরবী পত্র-পত্রিকা পড়া এবং আরবীতে প্রবন্ধ-নিবন্ধ লেখার অনুশীলন এসব ইযাফী কাজ। আপনার মূল কাজ হল নেসাবের নির্ধারিত কিতাবসমূহের মুতালাআ, দরস, তামরীন এবং তাকরার। তো এসব কাজ ঠিকঠাকভাবে সম্পন্ন করার পরেই কেবল ইযাফী কাজ করতে পারেন উস্তাযের অনুমতিক্রমে এবং তাঁর তত্ত্বাবধানে। সুতরাং আপনি কি এ বিষয়ে আপনার উস্তাযের অনুমতি এবং পরামর্শ গ্রহণ করেছেন? যদি তা করে থাকেন তবে তো আপনার উস্তায আপনাকে এ বিষয়ে আপনার উপযোগী নির্দেশনা দান করবেন। আর সে অনুসারেই আপনাকে অগ্রসর হতে হবে। আল্লাহ তাআলা আপনাকে তাওফীক দান করুনÑ আমীন।