মোল্লা আলী ক্বারী রাহ. শরহে নুখবার শরাহ- شرح الشرح -এ حافظ , حجة ও حاكم -এর সংজ্ঞা এভাবে দিয়েছেন-
إن الحافظ : هو من أحاط علمه بمئة ألف حديث، ثم بعده الحجة وهو من أحاط علمه بثلاث مئة ألف حديث، ثم الحاكم وهو الذي أحاط علمه بجميع الأحاديث المروية متنا وإسنادا، جرحا وتعديلا وتاريخا. كذا قالت جماعة من المحققين.
কিন্তু সদ্য প্রকাশিত উলূমুল হাদীসের একটি বই হাতে পেলাম। যা তাকমীল মারহালার উলূমুল হাদীস বিষয়ক পরীক্ষার জন্য বেফাক বোর্ডের সকল প্রশ্নের সহজ বাংলা উত্তর সম্বলিত।
উক্ত বইয়ের ৪৩ পৃষ্ঠায় حافظ এর পূর্বোল্লিখিত সংজ্ঞাটি লিখে বি. দ্র.-এ বলা হয়েছে-
মুহাক্কিক উলামাদের মতে এ অর্থটি সঠিক নয়। এবং ৪৪ পৃষ্ঠায় حجة -এর সংজ্ঞা লিখে একই মন্তব্য করা হয়েছে। এবং حاكم -এর সংজ্ঞা লিখে বলা হয়েছে, উক্ত অর্থটি সম্পূর্ণ অবাস্তব ও ভুল। আসলেই কি এ সংজ্ঞাগুলোতে তাসামুহ হয়েছে ? আশা করি বিস্তারিত জানিয়ে আমাদের সংশয় দূর করবেন।
পরিভাষাগুলোর সংজ্ঞা বর্ণনায় মোল্লা আলী কারী (রাহ.)-এর তাসামুহ হয়ে গেছে। আর তিনি যে এই সংজ্ঞাগুলোর নিসবত একদল মুহাক্কিক আলিমের দিকে করেছেন, মুহাক্কিক আলিমগণ এর কোনো বাস্তবতা খুঁজে পাননি। এ বিষয়ে শায়েখ আবদুল্লাহ বিন সিদ্দীক আলগুমারী রাহ. তাঁর কিতাব توجيه العناية إلى تقسيم علم الحديث إلى رواية ودراية -এ এবং শায়েখ আবদুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ রাহ. তাঁর রিসালা أمراء المؤمنين في الحديث -এ তাম্বীহ করেছেন।
বস্তুতঃ الحافظ শব্দটি বিজ্ঞ ও প্রাজ্ঞ মুহাদ্দিসদের উপাধি। হাফেজ ইবনে হাজার রাহ. ‘নুযহাতুল আলবাব ফীল আলক্বাব’ গ্রন্থে (১/১৮৮) বলেছেন,لقب من مهر في معرفة الحديث তিনি এ উপাধিটির আরো বিস্তারিত ব্যাখ্যা ও পরিচয় পেশ করেছেন তাঁর প্রসিদ্ধ কিতাব النكت على مقدمة ابن الصلاح -এর الفائدة الثانية من النوع الأول -এ-
للحافظ في عرف المحدثين شروط، إذا اجتمعت في الراوي سموه حافظا، وهو الشهرة بالطلب والأخذ من أفواه الرجال لا من الصحف، والمعرفة بطبقات الرواة ومراتبهم، والمعرفة بالتجريح والتعديل، وتمييز الصحيح من السقيم، حتى يكون ما استحضره أكثر مما لا يستحضره مع استحضار الكثير من المتون.
الحجة শব্দটি রাবীকে تعديل وتوثيق করার ক্ষেত্রে একটি বহুল ব্যবহৃত শব্দ। এর অর্থ হলো, যিনি হাদীস বর্ণণার ক্ষেত্রে হুজ্জত বা যার বর্ণনা দ্বারা দলীল পেশ করা যায়। এ ছাড়া এটি আইম্মায়ে হাদীসের লক্বব বা উপাধি হিসেবেও ব্যবহার হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে অর্থ হবে র্জাহ-তা‘দীল,তাসহীহ-তাজয়ীফ-এর ক্ষেত্রে যিনি প্রামাণ্য ব্যক্তিত্ব। আর الحاكم শব্দটি তো মুহাদ্দিসীনে কেরামের উপাধিই নয়; বরং এটি কাযী বা বিচারকদের একটি উপাধি, হাদীস মুখস্থ বা বর্ণনার সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই।