মোহাম্মাদ নাসিমুদ্দিন - লালমাটিয়া

প্রশ্ন

পরসমাচার, আশা করি ভালো আছেন এবং নিয়মিত আলকাউসার প্রকাশ করায় ব্যস্ত আছেন।

আপনার কাছে আমার দুটি আরজ। (ক) আমি জালালাইন জামাতের ছাত্র। ইনশাআল্লাহ আগামী বছর মিশকাত পড়ব এবং হাদীসের কিতাব পড়ব। রাবীদের জীবনী সম্বলিত কয়েকটি আরবী ও বাংলা কিতাবের নাম জানিয়ে কৃতার্থ করবেন।

(খ) অনেকদিন থেকে ‘চুপ থাকা ও নীরবতা পালন করা’ এবং ‘কম হাসা ও বেশি কাঁদা’ সম্পর্কে কয়েকটি বাংলা বা আরবী কিতাব খুঁজছিলাম। কিন্তু আজো পাইনি। তাই এ সম্পর্কে কয়েকটি আরবী বা বাংলা কিতাবের নাম জানিয়ে কৃতার্থ করবেন।

উত্তর

(ক) মেশকাত কিতাবের শেষে সংযুক্ত মুসান্নিফের নিজের লিখিত ‘আলইকমাল ফী আসমাইর রিজাল’ নামক কিতাবটি তো মেশকাত জামাতের প্রত্যেক তালিবে ইলমের পড়া উচিত।

      রাবীদের জীবনী জানার জন্য তো কুতুবু আসমায়ির রিজাল-এর বিশাল সম্ভার রয়েছে। বিস্তারিত ও সংক্ষিপ্ত বিভিন্ন ধরন ও কলেবরের কিতাব রয়েছে। আরবী কিতাবপত্র পাওয়া যায় এমন কোনো লাইব্রেরীতে খোঁজ নিতে পারেন তাহলে সহজেই বেশ কিছু কিতাব সম্পর্কে জানতে পারবেন।

(খ) এসব বিষয়ে হাদীসের কিতাবসমূহের যুহদ ও রকায়েক অধ্যায়ে হাদীস ও আছার সন্নিবেশিত হয়েছে। মেশকাতের যুহদ ও রকায়েক অধ্যায়ের সংশ্লিষ্ট হাদীসগুলো শরাহসহ পড়া যেতে পারে। মেশকাতের এই অধ্যায়ের হাদীসগুলোর স্বতন্ত্র একটি উর্দূ শরাহ লিখেছেন মাওলানা হাবীবুল্লাহ মুখতার রাহ.। এর একটি বাংলা অনুবাদ ‘যে কথায় পাথর গলে’ নামে মাকতাবাতুল আশরাফ থেকে ছেপেছে।

২. হাফেজ আব্দুল আজীম মুনযিরী (মৃত্যু ৬৫৬ হি.)-এর ‘আততারগীব ওয়াততারহীব’ কিতাবে সংশ্লিষ্ট অধ্যায়ের হাদীসগুলো পাঠ করতে পারেন। মাওলানা মুহাম্মাদ উসমান (মুকীমে মদীনা) দামাত বারাকাতুহুম ‘আলবাশীর ওয়ান নযীর’ নামে ওই কিতাবের একটি উর্দূ তরজমা ও শরাহ লিখেছেন।

 

৩. كتاب الرقة والبكاء  এবং الصمت وآداب اللسان ইমাম ইবনু আবীদ দুনইয়া (২৮১ হি.)। এ দুটি রিসালা ভিন্নভাবে ছেপেছে এবং ‘মওসুআতু ইবনে আবীদ দুনইয়া’ নামে তাঁর যে রেসালা ও আজযা-এর সমগ্র বের হয়েছে তাতেও রিসালা দুটি পাওয়া যাবে।

শেয়ার লিংক

নাদিম - ডেমরা, ঢাকা

প্রশ্ন

(ক) উসূলে বযদবী এবং উসূলে সারাখসীর সবচে’ ভাল তা’লীক ও তাহকীক কোনটি এবং তা কোন লাইব্রেরীর?

(খ) কিছু আমল জানতে চাই যার মাধ্যমে মেধা বাড়বে।

(গ) সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ -এ সীরাত গ্রন্থটি কোন মানের? সবচেয়ে ভাল সংস্করণ কোনটি (তা’লীক ও তাহকীকসহ) জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

(ক) ইমাম আবু বকর আস-সারাখসী রাহ. (৪৯০ হি.) রচিত ‘উসূলুস সারাখসী’-এর যে নুসখাটি শায়খ আবুল ওফা আফগানী রাহ.-এর তাহকীকসহ লাজনাতু ইহইয়ায়িল মায়ারিফিন নু’মানিয়্যাহ থেকে প্রকাশিত হয়েছে তা একটি ভালো নুসখা। আর ইমাম ফখরুল ইসলাম বযদবী রাহ. (মৃত্যু ৪৮২ হি.) রচিত উসূলে ফিকহের কিতাব যা উসূলুল বাযদাবী নামে পরিচিত-এর একটি নুসখা মীর মুহাম্মাদ কুতুবখানা করাচী থেকে প্রকাশিত হয়েছে। এই নুসখাটির হাশিয়ায় ছাপা হয়েছে হাফেয কাসেম ইবনে কুতলুবুগা হানাফী (৮৭৯ হি.) রাহ. কৃত কিতাবে উল্লেখিত হাদীস ও আছারের তাখরীজ এবং এর শেষে রয়েছে মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুর রশীদ নুমানী রাহ. লিখিত ইমাম বযদবী রাহ.-এর জীবনী। এই কিতাব দুটির নতুন আরো ভালো ও মুহাক্কাক কোনো নুসখা ছেপেছে কি না তা আমার জানা নেই।

      আলাউদ্দিন আবদুল আযীয বুখারী (মৃত্যু ৭৩০ হি.) ‘কাশফুল আসরার’ নামে উসূলুল বাযদাবীর যে শরাহ লিখেছেন তা এই কিতাবের একটি উত্তম শরাহ। এতে তিনি ইমাম সারাখসীসহ উসূলে ফিকহের অন্যান্য অনেক মুসান্নিফের রায় ও ইবারত নকল করে শরাহ করে থাকেন। আর আমীরে কাতেব আল ইতকানী (৭৫৮ হি.) রাহ. রচিত ‘আশ শামিল’ শারহু উসূলিল বাযদাবী তো একটি সমৃদ্ধ গ্রন্থ। কিন্তু তা এখনো অমুদ্রিত পাণ্ডুলিপি বা মাখতুতা আকারে রয়েছে।

(খ) এ বিষয়ে ইমাম বুখারী রাহ.-এর উক্তি বিশেষভাবে স্মরণীয়। মুহাম্মাদ ইবনু আবী হাতেম আল অররাক (যিনি ইমাম বুখারী রাহ.-এর শাগরিদ ও লিপিকার) বলেন, আমি শুনতে পেলাম যে, আবু আব্দিল্লাহ বুখারী নাকি হিফয  ও স্মরণশক্তি বর্ধক কোনো দাওয়াই পান করেছেন। তাই আমি তাঁকে একামেত্ম জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে, হিফয ও স্মরণশক্তির পক্ষে ফলদায়ক কোনো দাওয়াই আছে কি না? তিনি তখন উত্তরে বলেছিলেন, لا أعلم شيئا أنفع للحفظ من نهمة الرجل ومداومة النظر অর্থাৎ অদম্য স্পৃহা এবং অবিরাম অধ্যয়নের তুলনায় হিফয ও স্মরণশক্তির জন্য অধিক ফলদায়ক আর কোনো কিছু আছে বলে আমার জানা নেই।

      মনে রাখতে হবে, ওহীর ইলম (কুরআন ও হাদীস) পড়ে নেওয়া যদিও মানুষের সাধ্যের অধীন কিন্তু ‘তাফাক্কুহ ফিদ্দীন’-এর নেয়ামত লাভ করা নির্ভর করে আল্লাহ তাআলার দানের উপর। এ বিষয়টি পরিষ্কার বুঝে আসে নিমেণাক্ত হাদীস থেকে-

 من يرد الله به خيرا يفقهه في الدين، وإنما أنا قاسم والله يعطي -সহীহ বুখারী, হাদীস ৭১। এজন্য এই নেআমত অর্জন করতে হলে সেই পথই অবলম্বন করতে হবে যে পথে আল্লাহ তাআলা তা দান করেন। আর তা হল, আহলে ফন ও আহলে দিলের সান্নিধ্য। যথাযথ মেহনত ও মুজাহাদা এবং তাকওয়া ও তাহারাত।

(গ) মুহাদ্দিস মুহাম্মাদ ইবনু ইউসূফ আস সালেহী আশ শামী (মৃত্যু ৯৪২) রচিত ‘সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খাইরিল ইবাদ’ বৃহৎকলেবরের একটি সুসংহত সীরাত গ্রন্থ যা অন্যান্য সীরাত গ্রন্থের তুলনায় নির্ভরযোগ্য। তবে কোনো কিতাব নির্ভরযোগ্য হওয়ার অর্থ এই নয় যে, এ কিতাবে উল্লেখিত প্রত্যেক কথাই সঠিক ও নির্ভরযোগ্য; বরং অর্থ এই যে, সার্বিক বিবেচনায় কিতাবটি নির্ভরযোগ্য। এজন্য আকাইদ ও আহকামের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন কোনো বিষয় সেখানে আসলে বা কোনো রেওয়ায়েত কিংবা যে কোনো বিষয় সম্পর্কে সংশয় হলে অত্যন্তসতর্কতার সঙ্গে তাহকীক করা জরুরি। দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, বায়রুত থেকে ১৪১৪ হিজরী সনে এর একটি সংস্করণ তাহকীক ও তালীকসহ বেরিয়েছে। এছাড়া অন্য কোনো নুসখার কথা আমার জানা নেই। 

শেয়ার লিংক

আব্দুল হালীম - শরহে বেকায়া সিলেট

প্রশ্ন

(ক)حروف تحضيض   হলো মোট পাঁচটি যথা : ألا - هلا - لولا - لوما - ألَّا  এভাবেই ‘মাওসুআতুন নাহব ওয়াস সারফ’ এবং ‘জামিউদ দুরূসিল আরাবিয়্যাহ’ এবং আরো অনেক কিতাবে বলা হয়েছে। কিন্তু ‘মুখতাসারুল মাআনী’-এর ২০৮ নং পৃষ্ঠার তিন নম্বর হাশিয়ায় ‘তাজরীদ’-এর হাওয়ালায় ব্যক্ত করা হয়েছে যে حروف تحضيض ছয়টি। ছয় নাম্বার হরফ হল لو এখন প্রশ্ন হল لو  কি তাহদ্বীদ্ব-এর জন্য আসে? যদি তা ব্যবহার হয় তাহলে তার ‘শাহেদ’সহ জানালে উপকৃত হব আর যদি ব্যবহার না হয় তাহলে এ হাশিয়ার ব্যাখ্যা কী?

(খ)عشر  ও عشرة  -এর শীন হরফের হরকতের ব্যাপারে ‘মাওসুআতুন নাহব ওয়াস সারফ’-এ বলা হয়েছে عشرة -এর শীন যবর বিশিষ্ট হবে যদি তা মুফরাদ হয়। আর যদি মুরাক্কাব হয় তাহলে কখনও সাকীন হবে বা মাফতূহ হবে বা মাকসূর হবে। আর عشر -এর শীন সাকীন হবে মুফরাদ-এর সুরতে। আর মুরাক্কাবের মধ্যে মাফতুহ হবে। অথচ আলকাউসারের নভেম্বর ২০১০ সংখ্যায় ‘জামিউদ দুরূসিল আরাবিয়্যাহ’-এর হাওয়ালায় বলা হয়েছে যে, যদি মা’দূদটি মুযাক্কার হয় তাহলে উভয়টির শীন মাফতুহ হবে। আর যদি মা’দূদটি মুআন্নাস হয় তাহলে শীনের হরকত সাকীন হবে। হুযুরের কাছে আকুল আবেদন এই যে, দয়া করে উভয়ের মধ্যে কোন কায়দাটি সঠিক তা জানিয়ে আমাদেরকে উপকৃত করবেন।

উত্তর

(ক) প্রসিদ্ধ হল ‘হুরূফুত তাহদ্বীদ্ব’ চারটি। যথা :

 هلَّا - لولا - لوما - ألَّا মুখতাসারুল মাআনীতে এই চারটির কথাই উল্লেখ করা হয়েছে। তবে পরবর্তী কোনো কোনো আরবী ভাষাবিদ لو এবং ألا এ দুটিকেও হুরূফে তাহদ্বীদ্ব এর মধ্যে গণ্য করেছেন। মুখতাসারুল মাআনীর হাশিয়ায় যে ‘আত তাজরীদ’-এর হাওয়ালা দেয়া হয়েছে তা মুখতাসারুল মাআনীরই একটি হাশিয়া। এটি তৈরি করেছেন তের শতকের মিসরের আদীব শায়খ মুসত্মফা ইবনু মুহাম্মাদ আল-বান্নানী। তিনি এর অধিকাংশই মূলত তালখীস করেছেন নিজ শায়খ মিসরের আদীব ও ভাষাবিদ মুহাম্মাদ ইবনে আলী আস-সাববান (মৃত্যু ১২০৬ হি.) লিখিত মুখতাসারুল মাআনীর হাশিয়া থেকে।

      যাহোক لو এবং ألا কখনো কখনো তাহদ্বীদ্ব তথা উৎসাহ ও উদ্দীপনার জন্য ব্যবহার হয়ে থাকে। কিন্তু এই অর্থটি কি এই হরফ দুটির স্বতন্ত্র অর্থ নাকি এ দুটির العرض و الطلب -এর অর্থ থেকেই উৎপন্ন বা এরই অংশ- এ বিষয়ে আরবী ভাষাতাত্ত্বিক বিশেস্নষণে মতানৈক্যের অবকাশ রয়েছে। لو  এই হরফটি ‘তাহদ্বীদ্ব’-এর অর্থে ব্যবহার হওয়ার পক্ষে শায়খ বান্নানী ‘আত তাজরীদ’-এ কোনো শাহেদ বা উদাহরণ পেশ করেননি। তবে ড. আববাস হাসান রচিত ‘আন-নাহবুল ওয়াফী’ কিতাবে এই অর্থে দুটি উদাহরণ পেশ করা হয়েছে- لو تحترم القانون فتأمن العقوبة এবং কোনো হাসপাতালে কোনো কৃপণ ব্যক্তিকে দেখে কেউ বলল  لو تتبرع لهذا المستشفى فتنال خير الجزاء দ্রষ্টব্য, আন নাহবুল ওয়াফী ৪/৩৬৯ এবং ৫০৩।

(খ)عشر  ও عشرة   এর শীন হরফের হরকত সম্পর্কে আরবী লোগাতে বিভিন্নতা রয়েছে। আলকাউসারে এ সম্পর্কে যে যাবেতাটি উল্লেখ করা হয়েছে তা এ বিষয়ের সুপ্রসিদ্ধ একটি যাবেতা, যা লুগাতের নির্ভরযোগ্য কিতাবের উদ্ধৃতিতে লেখা হয়েছে। আর আপনি ‘মাওসুআতুন নাহব’-এর বরাতে যা উল্লেখ করেছেন সেটিও  হয়ত এ বিষয়ের একটি ভিন্ন যাবেতা। কিন্তু মাশহুর লোগাত অনুসারে, عشر  ও عشرة  মুফরাদ হোক বা মুরাক্কাব হোক উভয় অবস্থায় মা’দূদটি মুযাক্কার হলে শীন মাফতুহ হবে। আর মা’দূদটি মুআন্নাস হলে শীনের হরকত সাকীন হবে। (‘আননাহবুল ওয়াফী, খ- ৪ পৃষ্ঠা ৫২০-৫২২) ‘মাওসুআতুন নাহব’ কিতাবটি এ মুহূর্তে আমার সামনে নেই। তবে আপনি যেভাবে উল্লেখ করেছেন তাতে তা মাশহুর লোগাতের সাথে কোথাও কোথাও সাংঘর্ষিক হবে। কিন্তু আপনার উল্লেখিত এই যাবেতার সাথে যদি একটি কয়েদ যোগ করা হয় তবে তখন আর তেমন কোনো তাআরুয বাকি থাকে না। সেটি হলো যা ড. মুহাম্মাদ আব্দুল আযীয আন-নাজ্জার উল্লেখ করেছেন। তিনি ‘যিয়ায়ুস সালিক ইলা আউযাহিল মাসালিক’ ৪/১২৪ -এ লিখেছেন-

الأفصح في شين عشرة الفتح مع التاء والتسكين بدونها إذا كانت مفردة، والعكس إذا كانت مركبة

অর্থাৎ মুফরাদ অবস্থায় শেষে যদি ‘তা’ (আলামাতে তানীছ) যুক্ত হয় তবে শীনে ফাতাহ হবে। আর যদি শেষে ‘তা’ যুক্ত না হয় তবে শীনে সাকিন হবে। কিন্তু মুরাক্কাব অবস্থায় এর বিপরীত হবে অর্থাৎ আলামাতে তানীছ ‘তা’ যুক্ত হলে শীনে সাকিন হবে এবং শেষে ‘তা’ যুক্ত না হলে শীনে ফাতাহ হবে’।

এখন চিন্তা করলেই দেখবেন যে যাবেতার এই তাবীর এবং আলকাউসারে বর্ণিত তাবীরের মাঝে প্রকৃতপক্ষে কোনো সংঘর্ষ নেই বরং কেবল ইবারতের পার্থক্য। 

শেয়ার লিংক

হামিদুল্লাহ শরীয়তপুরী - নূরে রাহমানিয়া, ফেনী

প্রশ্ন

আমি একজন জামাতে হেদায়াতুন্নাহব-এর ছাত্র। আমার আগ্রহ হল হাদীস শরীফ মুখস্থ করা। তবে সহজে ও প্রাথমিক পর্যায়ে হাদীসের কোন কিতাব পড়তে পারি ও তরজমাতুল কুরআনের উর্দূ জাদীদ অর্থের জন্য কোনটি অধ্যয়ন করতে পারি  উক্ত বিষয়দ্বয় জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।

 

উত্তর

প্রাথমিক পর্যায়ে হাদীসের হিফয ও মুতালাআর জন্য শায়খ মুহিউদ্দিন আওয়ামাহ রচিত ‘মিন সিহাহিল আহাদিসিল কিসার’ রাখতে পারেন। এর বাংলা অনুবাদ হয়েছে। সেটিও সামনে রাখতে পারেন। এরপর ইমাম মুহিউদ্দীন আননববী (৬৩১-৬৭৬ হি.) রাহ.-এর রিয়াযুস সালেহীন মুতালাআ করতে পারেন। আর জাদীদ উর্দূভাষায় রচিত এবং সম্প্রতি প্রকাশিত তরজমাতুল কুরআনের জন্য শায়খুল ইসলাম মুফতী তকী উসমানী দামাত বারাকাতুহুম রচিত আসান তরজমায়ে কুরআন দেখতে পারেন।

শেয়ার লিংক

ইবনে আব্দুল কুদ্দুস বাহুবলী - দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী, চট্টগ্রাম

প্রশ্ন

শুনেছি, আল্লামা আবুল হাসান আলী নদভী রাহ.-এর লিখিত আরবী কিতাবের সংখ্যা নাকি প্রায় দু’শ! আমি শরহে বেকায়া জামাতের একজন ছাত্র। আরবী কিতাবাদি মোটামুটি বুঝি। প্রিয় হযরত! দয়া করে এই জামাতের তালিবে ইলমের উপযোগী তাঁর কয়েকটি আরবী কিতাবের নাম বলে দিলে এগুলো থেকে ইস্তেফাদা করতে পারব। আল্লাহ তাআলা আপনার মঙ্গল করুন। আমীন।

উত্তর

মাওলানা আবুল হাসান আলী নদভী রাহ.-এর (মৃত্যু ১৪২০ হি.)-এর আরবী ও উর্দূ ভাষায় বিভিন্ন ধরনের কিতাবপত্র, রিসালা ও পুস্তিকা এবং মাকালা ও প্রবন্ধ রয়েছে। দাওয়াতী, ফিকরী, ইসলাহী, আদবী, তারীখী, ইলমী রচনাবলী, সফরনামা, বক্তৃতা ও ভাষণের সংকলন, চিঠিপত্রের সংকলন, সাক্ষাৎকার এবং বিভিন্ন কিতাবের উপর তাঁর লিখিত মুকাদ্দিমা ও ভূমিকা। তাঁর রচিত কিতাবসমূহের মধ্যে শরহে বেকায়া জামাতের তালিবে ইলমদের জন্য নিমেণাক্ত কিতাবগুলো উপযোগী হবে বলে আশা করি। আরবী আদব ও সাহিত্য সম্পর্কে: ১.  قصص النبيين (৩-৫ খ-) ২.القراءة الراشدة  (৩য় খ-) ৩. مختارات من أدب العرب (১-২ খ-) সীরাত ও শামায়েল বিষয়ে :  السيرة النبوية দাওয়াত বিষয়ে : روائع من أدب الدعوة في القرآن والسيرة । এসব ছাড়াও আরো কিতাব রয়েছে। 

শেয়ার লিংক

আহমদ শাহ - কুমিল্লা

প্রশ্ন

আশা করি ভাল আছেন। আমি অধম আপনার জন্য দুআ করি। আল্লাহ যেন আপনাকে উভয় জগতের সমসত্ম কল্যাণ দান করেন এবং আপনার নেক হায়াত বাড়িয়ে দেন। আজ কিছু হতাশা নিয়ে আমি আপনার কাছে চিঠি লিখতে বসেছি। আমি মীযান জামাতের একজন ছাত্র। ক্লাশে মধ্যম ধরনের ছাত্র। আমার একজন উস্তায বলেছেন যারা তাকরার করায় তারাই ভাল আলেম হয়। কিন্তু আমি মাঝে মাঝে সহজ কিতাব তাকরার করাই। কিন্তু কঠিন কিতাব তাকরার করাই না। তাই আমি কি ভাল আলেম হতে পারব না? আমি সাধারণত একটি কিতাব কোন রকম একবার পড়ে রেখে দেই। তাই একটি কিতাব কতবার পড়লে পড়া হয়েছে বুঝব। আবার মাঝে মাঝে অলসতা জাগে যে সামনের বছর থেকে ভাল করে পড়ব। এমন করে প্রথম জামাত থেকে এ পর্যন্ত এসেছি। আবার মাঝে মাঝে পড়া না পারলে মনে মনে ভাবি কোনো রকম দাওরা পর্যন্ত যেতে পারলেই হল। কিন্তু আমার এবং আমার বাবা-মা তাদের অনেক  আশা, আমি একজন বড় আলেম হব। তাদের এ আশা আমার অলসতার কারণে কি শেষ হয়ে যাবে? আমার আরবীতে কথা বলার অনেক ইচ্ছে। কিন্তু আরবীতে তেমন কথা বলতে পারি না। তাই অনেকে বলে মাদানী নেসাবে ভর্তি হওয়ার জন্য। তাই এ বিষয়ে আমাকে পরামর্শ দিয়ে বাধিত করবেন। আমি ছোট মানুষ তাই লেখার মধ্যে ভুল থাকলে ক্ষমা করে দিবেন বলে আশা রাখি। 

উত্তর

আপনি আমার জন্য দুআ করেছেন, আমীন, জাযাকাল্লাহু খায়রান। আমিও আপনার জন্য দুআ করি। আল্লাহ আপনাকে রুসূখ ফীল ইলম এবং তাফাককুহ ফিদ্দীন নসীব করুন। হতাশার কোনো কারণ নেই। নিজের মধ্যে ইলমের মহববত ও তৃষ্ণা তৈরি করুন। নিজের কোনো অভিজ্ঞ ও মেহেরবান উস্তাযকে তালীমী মুরুববী হিসেবে গ্রহণ করুন। তাঁর পরামর্শ অনুসারে ইলমী সফর জারী রাখুন। প্রত্যেক জামাতের কাঙ্ক্ষিত যোগ্যতা কতটুকু অর্জিত হয়েছে এবং কিতাবাদি আপনি কতটুকু বুঝেছেন এবং আত্মস্থ করতে পেরেছেন তা নিজ উস্তাযকে দিয়ে পরীক্ষা করুন। আপনি মাদানী নেসাবের মাদরাসায় ভর্তি হওয়ার কথা জিজ্ঞেস করেছেন। এ বিষয়ে আপনার তালীমী মুরুববীই আপনার হালত অনুসারে মুনাসিব পরামর্শ দিতে পারবেন। কারণ,  কেবল নেসাব পরিবর্তন করাই একমাত্র সমাধান নয়।

শেয়ার লিংক

আমানুল্লাহ আল মাহমুদ - হাটহাজারী, চট্টগ্রাম

প্রশ্ন

বাদ তাসলীম আরয এই যে, হাদীস শরীফ অধ্যয়নের পরও যে আমাদের ফিকহ ও ফুকাহার শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন এবং ফিকহে ইসলামের যথেষ্ট গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এই বিষয়ে কুরআন ও হাদীসের আলোকে এবং সালাফে সালিহীনের উক্তিসহ বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত্বসহ জানতে কোন কোন কিতাব মুতালাআ করতে পারি? এই বিষয়ে একক কোনো প্রবন্ধ-নিবন্ধ আছে কি না? এ ব্যাপারে সুপরামর্শ দিয়ে উপকৃত করতে হুযুরের একান্ত মর্জি কামনা করছি।

আল্লাহ হুযুরকে যুগোপযোগী খেদমতের ওছিলায় কবুল করুন। আমীন।

উত্তর

এ বিষয়ে মৌলিক কিছু কথা ও নির্দেশনা নিম্নোক্ত লেখাগুলোতে দেখতে পারেন।

১. মাযহাব ও তাকলীদ কি ও কেন (অনুবাদ : মাওলানা যয়নুল আবেদীন)-এর ভূমিকা, যা মাকতাবাতুল আশরাফ, বাংলাবাজার থেকে প্রকাশিত। ২.‘নবীজীর নামায’ (অনুবাদ : মাওলানা যাকারিয়া আব্দুল্লাহ, মাকতাবাতুল আশরাফ কর্তৃক প্রকাশিত)-এর ভূমিকা। ৩. উম্মাহর ঐক্য : পথ ও পন্থা, যা মারকাযুদ দাওয়াহ আলইসলামিয়া ঢাকা থেকে প্রকাশিত।

 

৪. শায়খ মুহাম্মদ আওয়ামা কতৃক রচিত ‘আছারুল হাদীসীশ শরীফ’ ও ‘আদাবুল ইখতিলাফ ফি মাসায়িলিল ইলমি ওয়াদদ্বীন’।

শেয়ার লিংক

তালেবে নাজাত, - সিলেট

প্রশ্ন

দীর্ঘ একটি চিঠি

উত্তর

কোনো মন্দ স্বভাব থেকে বেঁচে থাকার জন্য অথবা কোনো জরুরী আমলের অভ্যাস গড়ার জন্য হিম্মতের কোনো বিকল্প নেই। শুধু দুআর দ্বারা সব ঠিক হয়ে যাবে -এটা আল্লাহ তাআলার সাধারণ নিয়ম নয়। হিম্মত ও মুজাহাদার ভিত্তিতেই আল্লাহর রহমত লাভ হয়।

 

এখনই কারো বায়আত হলেন না, কিন্তু কারো সাথে ইসলাহী তাআল্লুক অবশ্যই রাখা চাই। প্রতিদিন একশতবার ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর যিকির করুন, ইনশা আল্লাহ ফায়দা হবে। 

শেয়ার লিংক