হযরতের কাছে একটু দুআ চাচ্ছি আর নিম্নোক্ত তিনটি বিষয়ের যেসব কিতাব বাজারে পাওয়া যাবে তার শুধু নামগুলো লিখে দেওয়ার আবেদন করছি। চাই তা মুস-াকিল কিতাব হোক অথবা কোনো তাফসীরের কিতাব হোক। ‘আততারীখুল ইসলামী’, ‘ই’রাবুল কুরআন’, ‘মুফরাদাতুল কুরআন’।
হযরতের কাছে একটু দুআ চাচ্ছি আর নিম্নোক্ত তিনটি বিষয়ের যেসব কিতাব বাজারে পাওয়া যাবে তার শুধু নামগুলো লিখে দেওয়ার আবেদন করছি। চাই তা মুস-াকিল কিতাব হোক অথবা কোনো তাফসীরের কিতাব হোক। ‘আততারীখুল ইসলামী’, ‘ই’রাবুল কুরআন’, ‘মুফরাদাতুল কুরআন’।
আল্লাহ তাআলা আপনার দুআ কবুল করুন। আমার জন্য, আপনার জন্য এবং সকলের জন্য। আমীন। কিছু কিতাবের নাম উল্লেখ করা হল। ক. মুফরাদাতুল কুরআন ১. আলমুফরাদাত ফী গরীবিল কুরআন, রাগিব আসফাহানী (৫০২ হিজরী) ২. আলগরীবাইন, আবু উবাইদ আলহারাভী (৪০১ হিজরী) ৩. মাআনিল কুরআনি ওয়া ই’রাবুহ্, আবু ইসহাক আযযাজ্জাজ (৩১১ হিজরী) ৪. মা‘আনিল কুরআন, আবু যাকারিয়্যা আলফাররা (২০৭ হিজরী) ৫. তাফসীরু গরীবুল কুর‘আনিল আযীম, আবু আবদুল্লাহ আররাযী (৬৬৬ হিজরী) (ইনি ফখরুদ্দীন আররাযী নন।) ৬. কালিমাতুল কুরআন, হাসানাইন মুহাম্মাদ মাখলূফ (১৪১০ হিজরী) ৭. লুগাতুল কুরআন (উর্দূ) হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রশীদ নু’মানী রাহ. (শেষ দুই পারা মাওলানা সাইয়েদ আবদুল দা-ইম জালানী করেছেন।) খ. ই’রাবুল কুরআন ১. মুশকিলু ই’রাবিল কুরআন ২. ই’রাবু ছালাছীনা সূরাতাম মিনাল কুরআনিল কারীম, ইবনে খালূয়াহ (৩৭০ হিজরী) ৩. ইমলাউ মা মান্না বিহির রাহমান, আবুল বাকা আলউকবারী (৬১৬ হিজরী) ৪. আদ্দুররুল মাসূন ফী উলূমিল কিতাবিল মাকনূন, আসসামীন আলহালাবী (৭৫৬ হিজরী) ৫. ই’রাবুল কুরআন ওয়া বয়ানুহু ওয়া ছরফুহ, মাহমুদ সাফী ৬. আল জাদওয়াল ফী ই’রাবি কিতাবিল্লাহিল মুরাততাল ৭. ই’রাবুল কুরআন, মুহিউদ্দীন আদদারবেশ গ. আততারীখুল ইলামী ১. তারীখুল ইসলাম, শামসুদ্দীন যাহাবী (৭৪৮ হিজরী) ২. আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া, ইবনে কাছীর আদদিমাশকী (৭৭৪ হিজরী) ৩.ইরবাউল গুম্র ফী আম্বাইল উম্র, ইবনে হাজার আসকালানী (৮৫২ হিজরী) ৪. শাযারাতুয যাহাব, ইবনুল ইমাদ আল হাম্বলী ( ১০৮৯) ৫. তারীখে মিল্লাত ৬. আখতাউন ইয়াজিবু আন তুসাহহাহা ফিততারীখ, জামাল আবদুল হাদী ও ওয়াফা মুহাম্মাদ রিফআত। ৭. তারীখে দাওয়াত ওয়া আযীমত, মাওলানা আবুল হাসান আলী নাদাভী।
শেয়ার লিংক
ক) আমি আগামী বছর ‘কাফিয়া’ জামাতে পড়ব। হুজুরের কাছে পরামর্শ চাচ্ছি যে, মাহে রমযান কিভাবে কাটাব। কোন কিতাবগুলো পড়লে ভালো হবে? কাফিয়ার কোন শরাহটি পড়লে ভালো হবে? কার লেখা তরজমায়ে কুরআন পড়ব? জানিয়ে উপকৃত করবেন। এ জামাত সম্পর্কিত সকল পরামর্শ দান করবেন বলে আশা রাখি। খ) আলহামদুলিল্লাহ আমার পড়া তাড়াতাড়ি মুখস' হয়, কিন' বেশিক্ষণ স'ায়ী থাকে না, ভুলে যাই। এ সম্পর্কে করণীয় কী? জানালে খুশি হব।
ক) আপনি যখন এই লেখাটি পড়বেন তখন হয়তো শাওয়াল শুরু হয়ে গেছে। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে রমযানুল মুবারকের খায়র ও বরকত নসীব করুন। মূল উত্তরের আগে একটি বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তা এই যে, আপনি প্রথমে ‘কাফিয়া’র কথা উল্লেখ করেছেন। এরপর ‘তরজমায়ে কুরআন’ সম্পর্কে। অথচ উচিত ছিল, প্রথমে ‘তরজমায়ে কুরআন’কে উল্লেখ করা। বাংলা তরজমাসমূহের মধ্যে এমদাদিয়া থেকে প্রকাশিত তরজমা, যা মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ রাহ. ও মাওলানা আবদুল মজীদ ঢাকুবী প্রমুখ আলিমগণ কর্তৃক সম্পাদিত একটি নির্ভরযোগ্য অনুবাদ। ইসলামিক ফাউণ্ডেশনের অনুবাদটিও তুলনামূলক ভালো। এখানে একটি বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন। তা এই যে, ‘তরজমাতুল কুরআন’ শব্দের চেয়ে ‘তরজমাতু মা‘আনিল কুরআন’ শব্দ ব্যবহার করা অধিক সমীচীন। কেননা, কুরআন কারীমের পূর্ণাঙ্গ ও যথার্থ অনুবাদ মানুষের সাধ্যের বাইরে। ‘কাফিয়া’র সঙ্গে ‘শরীফ’ যুক্ত করার প্রয়োজন ছিল না। কাফিয়ার সংক্ষিপ্ত হাশিয়াগুলোর মধ্যে আমার মতে ‘যীনী যাদাহ’ উপকারী হবে। তবে রযীউদ্দীন ইস-ারাবাদী কৃত শরাহটি, যা শরহুর রাযী নামে পরিচিত, কাফিয়ার ফন্নী শরাহ, যা বিস-ারিত ও প্রামাণিক আলোচনা সমৃদ্ধ। আসাতিযায়ে কেরাম নাহবী মা’লূমাত বৃদ্ধি ও ফনের পরিপক্কতার জন্য কাফিয়ার মূল সূত্র-‘আলমুফাসসাল’ ও তার শুরুহ অধ্যয়ন করতে পারেন। কাফিয়া জামাত হচ্ছে মৌলিক ইসতি’দাদ তৈরির শেষ জামাত। তাই নিজের তা’লীমী মুরব্বীর নির্দেশনা অনুযায়ী নিজের ইসতি’দাদ পরীক্ষা করুন এবং এ প্রসঙ্গে যা কিছু করণীয় যত্নের সঙ্গে করতে থাকুন। খ) মুখস'কৃত বিষয় ভালোভাবে মনে রাখার জন্য বারবার পড়া, অন্যদের সঙ্গে আলোচনা করা এবং বিভিন্ন প্রসঙ্গে তা আলোচনায় আনা-এই কৌশলগুলোই অনুসরণ করতে হয়। জরুরি বিষয়গুলো যদি আলোচনায় রাখা হয় খাতায় নোট করা হয় এবং মাঝে মাঝে তাতে নজর বুলানো হয় তাহলে ধীরে ধীরে স্মৃতিতে বসে যাবে ইনশাআল্লাহ। তবে ভুলে গেলেও সাহস হারানো ঠিক নয়। অতি প্রখর স্মৃতিশক্তির অধিকারী ব্যক্তিও সব কিছু স্মরণ রাখতে পারে না। কিছু জিনিস সেও ভুলে যায়। সর্বোপরি ‘ইনসান’ কীভাবে ‘নিসইয়ান’ থেকে পূর্ণমুক্তি পাবে?
শেয়ার লিংক
আমি হেদায়া আওয়ালাইন পড়ছি। আগামী বছর মেশকাত (সাথে জালালাইনও) পড়ব ইনশাআল্লাহ। আগামী বছরের কিতাবগুলো, বিশেষত তাফসীর ও হাদীস বিষয়ক, ভালোভাবে আয়ত্ত করার জন্য কি কি গ্রন' সহায়ক হতে পারে এবং রমযানের দীর্ঘ ছুটিতে আমাদের এ স-রের ছাত্রীদের জন্য করণীয় কী? উল্লেখ্য, আমি আরবী ও উর্দূ কিতাবাদি পড়লে মোটামুটি বুঝি।
আপনার চিঠি সম্ভবত দেরিতে পৌঁছেছে। এই সংখ্যা পাঠকবৃন্দের সামনে আসতে আসতে রমযানুল মুবারক বিদায় নিয়ে যাবে। রমযানুল মুবারকের মূল কাজ তো হল সিয়ামে রমযান, কিয়ামে রমযান (তারাবী, তাহাজ্জুদ), তিলাওয়াতে কুরআন, মুতালাআয়ে কুরআন, তাওবা-ইসি-গফার ও অধিক পরিমাণে আল্লাহর যিকর। অন্যান্য কাজ শুধু প্রয়োজন পরিমাণে হওয়া চাই। আর যদি আমাদের পূর্বসূরীদের মতো রমযান মাসে রমযানের জন্যই ফারিগ ও সকল ঝামেলা থেকে মুক্ত হওয়া যায় তবে তো নূরুন আলা নূর। মিশকাত-জামাতের কিতাবসমূহের বিষয়ে আমি বেশ কয়েকবার লিখেছি। এখন শুধু এটুকু বলছি যে, আপনি অধিক মনোযোগ দিন যেন হাদীস শরীফের শুদ্ধ ও প্রাঞ্জল তরজমা করতে পারেন এবং তার সঠিক মর্ম অনুধাবন করতে পারেন। দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রয়োজনমতো অন্যান্য ‘ইলমী বহছ’ অধ্যয়ন করুন। উপরোক্ত দুই বিষয়ে সহযোগী গ্রন'সমূহ সম্পর্কে জানতে চাইলে অনুগ্রহপূর্বক আলকাউসারের বিগত সংখ্যাগুলোতে শিক্ষার্থীদের পাতায় দেখুন অথবা আপনার আসাতিযায়ে কেরাম থেকে জেনে নিন।
শেয়ার লিংক
...
যে বিষয়ে আপনি সংশয়ে ভুগছেন তা আপনার তা’লীমী মুরব্বীর সামনে পেশ করুন। তিনিই আপনাকে পরামর্শ দিতে পারবেন। তবে আপনার নিম্নোক্ত বাক্য সম্পর্কে একটু ভাবুন তো - ‘আমি কোন দিকে যাব, আমার মত গ্রহণ করব না হুজুরের’!!
শেয়ার লিংক
আমি একজন মুতাওয়াসসিত দরজার ছাত্র। বর্তমানে হিদায়া আওয়ালাইন পড়ছি। আমার স্বপ্ন দ্বীনের বড় খিদমত করা, কিন' কিভাবে তা বাস-বায়িত হবে এ নিয়ে বেশ চিন-ায় রয়েছি। কারণ আমার মাঝে কয়েকটি বিষয় আড়াল হয়ে রয়েছে। ক) আমি কিতাবাদি কিছুটা বুঝলেও নিজ চেষ্টায় পূর্ণ বুঝি না। কারণ আমি ইলমে নাহুতে দুর্বল। নাহুর সাধারণ মাসআলাগুলো বুঝলেও জটিল মাসআলাগুলো কম বুঝে আসে এবং স্মরণও বেশি থাকে না। এ দুর্বলতার কারণে অনেক সময় আমার ইবারত বুঝতে কষ্ট হয়ে যায়। এ অবস'ায় আমি নাহুর এই দুর্বলতা কাটানোর জন্য এবং ইবারতের ঘাটতি পূরণের জন্য নাহুর কোন কিতাবটি পুনরায় পড়ব এবং কিভাবে পড়ব। কিভাবে তামরীন করলে এ সকল সমস্যার সমাধান হবে। খ) আমার দরসে মন তেমন বসে না। নানা প্রকার চিন-া আসে। তাই কিতাব বুঝতে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। অনেক সময় একেবারেই মুতালাআ করতে ইচ্ছা করে না। এমনকি মনে হয় যেন আমি ছাত্র জীবনে মুতালাআকে আসল উদ্দেশ্য বানাতে পাড়ছি না। ফলে আমি মুতালাআর স্বাদ পাই না। অতএব কিভাবে অধ্যয়ন করতে হবে এবং কি আমল করতে হবে? গ) মনে হয় যেন আমি পরিপূর্ণ ইসতি’দাদ, তাফাক্কুহ ও রুসূখ ফিল ইলম অর্জন করতে পারছি না। এগুলো অর্জনের জন্য আমাকে কি পদ্ধতিতে মেহনত করতে হবে বিস-ারিত জানিয়ে বাধিত করবেন। ঘ) হুজুরের নিকট আমার জন্য একটু খাসভাবে দুআর দরখাস- রইল। আমিও হুজুরের জন্য আন-রিকভাবে দুআ করছি এবং করতে থাকব ইনশাআল্লাহ।
ক) সমস্যা সম্পর্কে আপনার অনুমান যদি সঠিক হয় তাহলে এর জন্য করণীয় হচ্ছে, ‘আননাহবুল ওয়াজিহ’ বা ‘আতত্বরীক ইলান নাহব’ তামরীনসহ পড়-ন। অর্থাৎ যেভাবে কিতাবে তামরীণ করতে বলা হয়েছে সেভাবে তা করতে থাকুন যেন তা এমনভাবে আত্মস' হয়ে যায় যে, কিতাবের বাইরের মিছালসমূহেও তা প্রয়োগ করতে পারেন। এরপর কোনো উস-াদের নিকটে ‘ হেদায়াতুন্নাহব’ কিতাবটি বুঝে বুঝে পড়-ন ও আত্মস' করার চেষ্টা করুন। খ) এর জন্য চিন-া-ভাবনা কমানোর পন'া অবলম্বন করতে হবে। এর সাধারণ কৌশল হল সকল অপ্রয়োজনীয় বিষয় থেকে দূরে থাকা এবং যথাসম্ভব নিজেকে ইলম ছাড়া অন্য সকল ঝামেলা ও ব্যস-তা থেকে মুক্ত রাখা। আর রূহানী চিকিৎসা এই যে, অন-রকে আল্লাহর মহব্বতে পরিপূর্ণ করুন। দুশ্চিন-া দূর করার জন্য মাছূর কিছু দুআ সর্বদা অযীফা আকারে পাঠ করুন। সঙ্গে সঙ্গে একাগ্রতার পক্ষে সবচেয়ে ক্ষতিকর বিষয়-গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার এবং তাওবা-ইসি-গফারের পাবন্দী করার চেষ্টা করুন। আরেকটি রূহানী চিকিৎসা এই যে, নিজের মধ্যে ইলমের মহব্বত পয়দা করার চেষ্টা করা, যার জন্য সম্ভবত ১০ টি কৌশল আলকাউসারের বিগত কোনো সংখ্যায় লেখা হয়েছিল। গ) এ বিষয়েও ইতিপূর্বে কয়েকবার সংক্ষিপ্ত আকারে লেখা হয়েছে। আগামী কোনো সুযোগে বিস-ারিতভাবেও লেখার ইচ্ছা আছে। ঘ) আমীন ওয়া লাকা মিছলু যালিকা ওয়া আয‘আফুহু।
শেয়ার লিংক
অনেক সময় অনেক কষ্ট করেও মুতালাআয় মন বসাতে পারি না। জানতে চাই, মুতালাআয় মন বসানোর জন্য কোনো আমল আছে কি না?
মন কেন বসে না? নিশ্চয়ই কোনো কারণ আছে। অন্যান্য ব্যস-তা কিংবা দুশ্চিন-া-দুর্ভাবনা। যদি প্রথম কারণ হয় তাহলে সেসব অবশ্যই পরিত্যাগ করতে হবে। ইলমের জন্য একনিষ্ঠতা ও ঐকানি-কতা অপরিহার্য। অন্য সকল ব্যস-তা পরিহার করুন ইনশাআল্লাহ মন বসতে থাকবে। আর যদি দুশ্চিন-া ও দুর্ভাবনার কারণে ইলমের প্রতি মনোনিবেশ করতে না পারেন তাহলে তার চিকিৎসা এই যে, আল্লাহ তাআলার দিকে রুজূ করুন। নিজেকে ও নিজের সকল বিষয়কে আল্লাহ তাআলার সোপর্দ করে ভারমুক্ত হোন এবং পড়াশোনায় মগ্ন হয়ে যান। সকাল-সন্ধ্যা নিম্নোক্ত মাছূর দুআ পাঠ করুন : মনে রাখবেন, মন বসে না বলে বসে থাকা রোগবৃদ্ধিতে সহযোগিতা করা ছাড়া আর কিছুই নয়। মন বসে না-এই ওয়াসওয়াসাই মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। মন বসালেই বসবে, জোর করে কাজে লেগে গেলেই মন বসবে। এজন্য ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজে লেগে যান এবং আল্লাহ তাআলার কাছে দুআ করুন। কখনো মুতালাআয় বিরক্তি সৃষ্টি হলে কিছুক্ষণ ইসে-গফার ও দরূদ পাঠ করুন। কোনো সংক্ষিপ্ত সূরা তেলাওয়াত করুন। এরপর পুনরায় মুতালাআ শুরু করুন ।
শেয়ার লিংক