ইসমাঈল - নোয়াখালী

প্রশ্ন

(ক) আমি হিদায়াতুন্নাহু জামাতের তালিবে ইলম। হিদায়াতুন্নাহু কিতাবে নাহুর বিভিন্ন মাসাআলায় বসরী ও কূফী নাহুবিদদের ইখতিলাফ বর্ণনা করা হয়। মেহেরবানী করে যদি কয়েকজন কূফী ও বসরী নাহুবিদ ও তাদের কিতাবাদি সম্পর্কে জানাতেন, খুব উপকৃত হতাম।

(খ) নাহুবিদদের জীবনী সম্পর্কে স্বতন্ত্র কিতাব আছে কি না? থাকলে জানতে চাই।

উত্তর

(ক) : কূফী ও বসরী নাহুবিদদের কয়েকজনের নাম এখানে পেশ করছি। বিস্তৃত মুতালাআর জন্য এ বিষয়ের স্বতন্ত্র কিতাবগুলো দেখা যেতে পারে।

কূফী নাহুবিদদের কয়েকজন :

১. ইমাম কিসায়ী আবুল হাসান আলী বিন হামযা রাহ. (১৮৯ হি.)।

তিনি একইসঙ্গে নাহুবিদ, ভাষাবিদ আবার ইলমুল কেরাতের ইমামও ছিলেন। নাহু বিষয়ে তিনি  মুখতাসাররচনা করেছেন। তার রচিত মাআনিল কুরআন১৪১৯ হিজরীতে কায়রোর দারু কুবা থেকে ছেপেছে।

২. আবু যাকারিয়া ইয়াহইয়া আলফাররা রাহ. (২০৭ হি.)।

ইমাম কিসায়ী রাহ.-এর শাগিরদ। ইলমুন নাহুর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি কয়েকটি স্বতন্ত্র কিতাব রচনা করেছেন। যেমন,

الجمع والتثنية في القرآن، المقصور والممدود، فَعَل وأفعَل، المذكر والمؤنث، البهاء فيما تلحن فيه العامة.

তাঁর রচিত معاني القرآنالمقصور والممدود ছেপেছে।

৩. আবুল হাসান আললিহইয়ানী রাহ. (২২০ হি.)।

তিনিও ছিলেন ইমাম কিসায়ী রাহ.-এর শাগিরদ। প্রসিদ্ধ ভাষাবিদ ইমাম কাসিম বিন সাল্লাম রাহ. (২২৪ হি.)-এর উস্তায। ভাষার দুর্লভ ব্যবহারবিধি নিয়ে তিনি কিতাবুন নাওয়াদেরনামে একটি কিতাব রচনা করেছিলেন। যা একসময়ে অনেক প্রসিদ্ধ ছিল।

৪. ছালাব  (ثعلب) আবুল আব্বাস আহমাদ ইবনে ইয়াহইয়া রাহ. (২৯১ হি.)।

اختلاف النحويين، ما ينصرف وما لا ينصرف، الأوسط في النحو.

এবং مجالس ثعلب তাঁর সমধিক প্রসিদ্ধ রচনাবলির অন্তর্ভুক্ত।

বসরী নাহুবিদদের কয়েকজন :

১. ইমাম সীবাওয়াইহ আমর বিন উসমান রাহ. (১৮০ হি.)।

আখফাশ (কাবীর), খলীল বিন আহমাদ, আবু আমর ইবনুল আলা প্রমুখ নাহুবিদদের থেকে তিনি নাহুশাস্ত্র গ্রহণ করেছেন। নাহুশাস্ত্রে তার রচিত আলকিতাবসুপ্রসিদ্ধ। এটি ১৮৮১ সন থেকে এ যাবৎ বিভিন্ন প্রকাশনা থেকে অনেকবার ছাপা হয়েছে।

২. আখফাশ সাঈদ বিন মাসআদাহ রাহ. (২১৫ হি.)।

বসরী ঘরানার হলেও বহু মাসআলায় তিনি কূফী ইমামদের সাথে সহমত পোষণ করতেন। নাহুশাস্ত্রে তিনি কয়েকটি কিতাব রচনা করেছেন। তার মধ্যে আলমাকায়ীসআলআওসাত ফিন নাহুপ্রসিদ্ধ।

৩. আলমাযিনী আবু উসমান বকর বিন মুহাম্মাদ রাহ. (২৪৯ হি.)।

সীবাওয়াইহ রাহ.-এর কিতাবের ব্যাখ্যাগ্রন্থ রচনা করেছেন। শায়েখ রশীদ আবদুর রহমান আলউবায়দী রাহ. (১৪২৮ হি.)কৃত

أبو عثمان المازني ومذاهبه في الصرف والنحو.

কিতাবে নাহু-সরফে তার ভিন্নমতপূর্ণ মাসআলাগুলো সংকলিত হয়েছে। ১৩৮৯ হিজরীতে কিতাবটি বাগদাদে ছেপেছে।  ইলমুস সরফে ইমাম মাযিনীর রচিত التصريف কিতাবটি সুপ্রসিদ্ধ। المُنصِف شرح تصريف المازني নামে যার ব্যাখ্যাগ্রন্থ লিখেছেন ইমাম আবুল ফাত্হ ইবনে জিন্নী রাহ. (৩৯২ হি.)। ইস্তাম্বুলের দারুল লুবাব থেকে শায়েখ রমাদান আইয়ুবের তাহকীকে সম্প্রতি এটি ছেপেছে।

৪. ইমাম মুবাররিদ আবুল আব্বাস মুহাম্মাদ বিন ইয়াযীদ রাহ. (২৮৫ হি.)।

তাঁর লিখিত আলকামিল ফিল লুগাতি ওয়াল আদাবআলমুকতাযাবএকাধিক প্রকাশনী থেকে ছেপেছে।

৫. আয্যাজ্জাজ আবু ইসহাক ইবরাহীম ইবনুছ ছারি রাহ. (৩১৬হি.)।

তাঁর রচিত

معاني القرآن وإعرابه، خلق الإنسان (في اللغة)، كتاب فعلت وأفعلتُ، تفسير أسماء الله الحسنى، ما ينصرف وما لا ينصرف.

ইত্যাদি কিতাবগুলো ছেপেছে। سر النحو -সহ তাঁর লেখা আরো কিছু রেসালা পা-ুলিপি আকারে সংরক্ষিত আছে।

(খ) নাহুবিদ-ভাষাবিদদের নিয়ে স্বতন্ত্র

কিতাব রচনার ধারা অনেক পুরনো। এ বিষয়ে ছেপে আসা প্রসিদ্ধ কয়েকটি কিতাবের নাম পেশ করছি।

1ـ مراتب النحويين لأبي الطيب عبد الواحد اللغوي (351 هـ).

2ـ أخبار النحويين واللغويين لأبي بكر محمد بن الحسن الزُّبيدي الأندلسي (379 هـ).

3ـ نزهة الألِبَّاء في طبقات الأدباء لأبي البركات ابن الأنباري (577 هـ).

4ـ معجم الأدباء لياقوت الحموي (626 هـ).

5ـ إنباه الرواة على أنباء النحاة لجمال الدين القِفْطي (646 هـ).

6ـ بغية الوعاة في طبقات اللغويين والنحاة للحافظ السيوطي (911 هـ).

শেয়ার লিংক

আশরাফ আলী - খুলনা

প্রশ্ন

আমি শরহে বেকায়া জামাতের তালিবুল ইলম। জানার বিষয় হল, شرح الوقاية কিতাব পরিপূর্ণ বুঝার জন্য কোন্ আরবী শরাহ বেশি উপকারী হবে? সাথে সাথে السعاية নামক শরাহটি কীভাবে পড়ব?

উত্তর

শরহে বেকায়া কিতাব বুঝার জন্য আপনি লখনবী রাহ.-এর হাশিয়া عمدة الرعاية মুতালাআয় রাখুন। আর السعاية কিতাব এখন মুতালাআ করার প্রয়োজন নেই। عمدة الرعاية কিতাবের কোনো মাসআলার দালীলিক আলোচনায় সন্দেহ হলে মাসআলাটি آثار السنن থেকে দেখে নেবেন এবং উস্তাযের কাছ থেকে  বিষয়টি হল করে নেবেন।

শেয়ার লিংক

ইবনে নুরুজ্জামান - সাভার, ঢাকা

প্রশ্ন

ইবনে খাল্লিকান রাহ.-এর وفيات الأعيان কিতাবে আবু যায়দ আনসারী রাহ.-এর তরজমায় লেখা হয়েছে-

كان من أئمة الأدب، وغلب عليه اللغات والنوادر والغريب...

উক্ত বাক্যে النوادر শব্দ ¦ারা কী উদ্দেশ্য?

উত্তর

আরবী সাহিত্যে নাওয়াদের বলতে সাধারণত প্রাচীন আরবী সাহিত্যের এমন গদ্য বা পদ্যকে বুঝায়, যাতে থাকে চমকপ্রদ কোনো ঘটনা, রসাত্মক কোনো বর্ণনা বা প্রজ্ঞাপূর্ণ কোনো বাণী অথবা শব্দ-বাক্যের দুর্লভ ব্যবহার। نوادر শিরোনামেও আরবী সাহিত্যে বহু কিতাব রচিত হয়েছে। স্বয়ং আবু যায়দ আনসারী রাহ. (২১৫ হি.)- বিষয়ে স্বতন্ত্র গ্রন্থ রচনা করেছেন, যা النوادر في اللغة নামে একাধিবার ছেপেছে।

শেয়ার লিংক