(ক) আমি জামাতে শরহে জামীর একজন ছাত্র। আমার প্রধান সমস্যা হল, আমি আরবী বলতে সক্ষম নই। যে কোনো বিষয়ে আরবীতে কিছু লেখা আমার পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠছে না। অথচ আমি দরসী কিতাব-আতত্বরিক ইলাল ইনশা অধ্যয়ন করেছি। এতে তেমন কোনো ফায়দা অনুভব করছি না। তাই কীভাবে আরবীতে বলা ও লেখায় পারদর্শী হতে পারব এবং কী পদ্ধতি অনুসরণ করলে আমার দরসী কিতাবটি হতে উপকৃত হতে পারব জানালে খুশি হব।
(খ) মুতালাআ আমি একদম বুঝি না। বারবার মুতালাআর পরও কোনো বিষয় আমার কাছে সুস্পষ্ট হয়ে ধরা দেয় না। তাই কী করলে সহজে মুতালাআর মাধ্যমে কিতাব আয়ত্ত করা যায়। সামান্য আভাস দিলে ধন্য হব।
(গ) আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহর রহমতে আমার হেফয শক্তি মোটামুটি ভালো। কিন্তু স্মরণশক্তি একদম শূন্যের কোঠায়। শত চেষ্টা করলেও কোনো জিনিস স্মৃতিতে ধরে রাখা আমার পক্ষে সম্ভব হয় না। অবশ্য একটি পড়া বারবার পড়লে মনে থাকে। কিন্তু তাতে কি আমার পোষায়? এত বড় বড় কিতাব বারবার পড়ার সময়টা কোথায়? আশা করি, সুন্দর পরামর্শ দিয়ে উপকৃত করবেন।
(ক) এমনিতেও বিষয়টি পরিষ্কার, তাছাড়া আমিও ইতোপূর্বে একাধিক বার আরজ করেছি যে, লেখা ও বলা এবং রচনা ও বক্তৃতা এই বিষয়গুলো অনুশীলন-নির্ভর। শুধু কিতাবী যোগ্যতা কিংবা ব্যাকরণের জ্ঞান এসব বিষয়ে যথেষ্ট নয়। তাছাড়া এটাও অপরিহার্য নয় যে, প্রত্যেকের মধ্যেই এই যোগ্যতা বিদ্যমান থাকবে।
আমাদের মনে রাখা কর্তব্য যে, মূল বিষয় হল কিতাব বোঝার যোগ্যতা এবং অন্যকে বোঝানো ও কিতাবের বিষয়গুলো সুন্দরভাবে উপস্থাপনের যোগ্যতা। এ দু’টি যোগ্যতা যদি কারো মধ্যে থাকে তাহলে উপরোক্ত বিষয়ে রুচি ও স্বভাবের যোগাযোগ না থাকা সত্ত্বেও তা হাসিল করার জন্য পেরেশান হওয়া একেবারেই কাম্য নয়।
এরপরও যদি প্রয়োজন অনুপাতে এসব বিষয়ে যোগসূত্র গড়ে তুলতে চান তাহলে ‘আতত্বরীক ইলাল আরাবিয়্যা’ ও ‘আততামরীনুল কিতাবী আলাত ত্বরীক ইলাল আরাবিয়্যা’-এ দুটো কিতাব সামনে রেখে অনুশীলন করুন। অন্তত দু’জন একত্র হয়ে ‘মুযাকারা’র আঙ্গিকে পড়তে থাকলে ইনশাআল্লাহ উপরোক্ত সবগুলো বিষয় সহজ হয়ে যাবে। তবে শর্ত হচ্ছে, এ কাজে প্রতিদিন পনেরো মিনিটের অধিক ব্যয় করবেন না এবং এ পরামর্শও আপনার তা’লীমী মুরববীর অনুমতির ওপর মওকুফ থাকবে।
(খ) ‘একদম বোঝেন না’-এ কথা ঠিক নয়। যতটুকু বোঝেন দরসের পূর্বের মুতালাআয় অতটুকুই যথেষ্ট। তবে সাধারণভাবে না বোঝার প্রতিকারের জন্য তিনটি বিষয়ে মনোযোগী হওয়া কর্তব্য।
১. না-বোঝার কারণ চিহ্নিত করে তা ধীরে ধীরে দূর করার চেষ্টা করা।
২. না-বোঝার কষ্ট সহ্য করেও অধ্যয়ন অব্যাহত রাখা।
৩. আল্লাহর কাছে দুআ করতে থাকা।
(গ) বারবার পড়ার পর যদি আপনার স্মরণ থাকে তবে প্রমাণ হয় যে, আপনার মুখস্থ করার শক্তি ও মনে রাখার শক্তি দু’টোই ঠিক আছে। এজন্য আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায় করবেন। আর সব কিতাব বারবার পড়ার প্রয়োজন নেই। গুরুত্বপূর্ণ ও নির্বাচিত কিছু কিতাব বারবার পড়বেন। এটাই যথেষ্ট। আল্লাহ তাআলা তাওফীক দান করুন।