...
...
উত্তর : এই বিষয়ে ফোনে অথবা সরাসরি সাক্ষাতে কোনো পরামর্শ দেব। অন্যথায় আপনার কোনো উস্তাদ বা মুরব্বীর সাথে মাশওয়ারা করে নিন।
শেয়ার লিংক
আমি তাফসীরে জালালাইন জামাতের ছাত্র। আমার সমস্যা হল, দরসের কিতাবাদি বোঝার জন্য আমার নীরব, আওয়াজবিহীন মুতালাআর প্রয়োজন হয়। কিন্তু সেটা আমি করতেই পারি না। পারলেও দশ মিনিটের বেশি কখনো নয়। কারণ ওভাবে বসলেই আমার চোখে ঘুম নেমে আসে। অনেকের কাছে আমি সমস্যাটির সমাধান চেয়েছি। কেউ বলেছেন, চোখ ধুয়ে নিতে, কেউ মাথা ধুয়ে নিতে। কিন্তু বিশেষ ফল পাইনি। আবার কেউ কেউ পরামর্শ দিয়েছেন যে, খাবার কমিয়ে ফেলতে। আসলে যে খাবার গ্রহণ করি তা এমন বেশি নয় যে, তা থেকে খুব একটা কমানো যায়। তবু কাজটি আমি করেছি। ফল একেবারে শূন্যই। উল্টো শারীরিক দুর্বলতার কারণে ঘুম বহু গুণে বেড়ে গেছে। এখন হযরতের নিকট আরজ, আমার সমস্যার কোনো সমাধান দিয়ে প্রকৃত তালিবুল ইলম হওয়ার সাহস যোগাবেন।
উত্তর : আপনার এই সমস্যা বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকতে পারে। প্রথমত : জীবন যাপনে নেযামের অভাব। মনে রাখবেন, প্রকৃত তালিবে ইলম সেই হতে পারে, যার প্রতিটি কাজ-কর্ম নেযাম মোতাবেক হয়। হযরত মাওলানা আবু তাহের মিসবাহ দা.বা. যথার্থই বলেন, ‘নেযামুল আওকাত’ ছাড়া কোনো তালিবে ইলমের যিন্দেগী বনতে পারে না।’ অতএব আপনি দৈনিক পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় ঘুমের জন্য নির্ধারণ করুন। এছাড়া একটি নেযামুল আওকাতের পাবন্দী করে নির্দিষ্ট সময়ে সব কাজ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। ‘ঘুমের সময় পড়া আর পড়ার সময় ঘুমের’ অভ্যাস থাকলে তা একেবারে পরিহার করুন। দ্বিতীয়ত : রাতে বা দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমানোর পরও যদি আপনার একই সমস্যা হয় তাহলে এ বিষয়ে একটি সমাধান আমি পেয়েছি হযরত থানভী রাহ.-এর মালফুযাত, মাকতুবাত ও রাসায়েল থেকে চয়নকৃত ‘উস্তায শাগরিদ কে হুকুক’ নামক কিতাবে। হিম্মত হলে আপনি আমল করে দেখতে পারেন। হযরত থানভী রাহ. বলেন, এই ব্যাপারে আমার একটি প্রস্তাব হল, গোল মরিচ পকেটে রাখবে। যখন ঘুমের প্রকোপ বাড়বে তখন একটি মরিচ চাবাতে থাকবে। এটি দেমাগের জন্যও ‘মুকাব্বী’। তাতে ক্ষতি নেই। কারণ প্রয়োজনমতো পূর্ণ ঘুমানোর পরও যার ঘুম আসে তার এই ঘুমের কারণ হল অলসতা। তাছাড়া কম খেলে ঘুম কম আসে আর বেশি খেলে বেশি। খানা যখন উদর পুরে খাবে তখন ঘুমও চোখ ভরে নামবে। (উস্তাদ শাগরিদ কে হুকুক ৭৬-৭৭) তৃতীয়ত : কারো সামনে বিশাল বড় কোনো কাজ থাকলে কিংবা মাথার উপর গুরুত্বপূণ কোনো কাজ চেপে বসলে তার নিদ্রা তো দূরে থাক, এর চিন্তাও আসতে পারে না। আর তালিবে ইলমের জন্য ইলম অর্জনের চেয়ে বিশাল কোনো কাজ তো পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। অতএব আপনিও ইলমের মর্যাদা ও ওলামাদের মাহাত্ম এবং ইলমের ব্যাপ্তি ও প্রশস্ততার কথা বারবার ভাবুন। নিজের মধ্যে ইলমের জন্য অনির্বাণ জ্বালা ও সীমাহীন তড়প পয়দা করুন। ইলমের জন্য যারা পূর্ণ জীবন-যৌবন উৎসর্গ করেছেন, সকল আরাম-আয়েশ পরিত্যাগ করেছেন, তাদের জীবনী পড়ুন। এতেও ফায়দা পেতে পারেন। তবে এ কথাও ঠিক যে, এই ধরনের সমস্যা অনেক সময় শারীরিক কোনো অসুস্থতার ফলেও হয়ে থাকে। এজন্য আপনি কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন। সুযোগ ও সামর্থ্য থাকলে কুষ্টিয়ার ডাক্তার তানভীর এর সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন অথবা তাঁর সঙ্গে মোবাইলে কথা বলতে পারেন। তাঁর মোবাইল নম্বরটি এই ০১৭১৭-২৮৭২২৭। ইনশাআল্লাহ ভালো কোনো পরামর্শ পাবেন বলে আশা রাখি।
শেয়ার লিংক
মুহতারাম, একজন মানুষকে দাওয়াত দেওয়ার প্রয়োজনে জামাতে ইসলামী ও এর প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আবুল আলা মওদুদী সম্পর্কে জানা আমার খুব প্রয়োজন। এজন্য কোন কোন কিতাবের সাহায্য নিতে পারি, জানালে খুশি হব।
উত্তর : এ বিষয়ে আপনি নিম্নোক্ত কিতাবগুলো নিজে পড়তে পারেন এবং ‘হিকমত’ ও ‘মাওয়িযায়ে হাসানাহ’র মাধ্যমে এবং ‘ওয়া জাদিলহুম বিল্লাতি হিয়া আহসান’ এর উসূলের ভিত্তিতে তার কাছে দাওয়াত পেশ করতে পারেন। কিতাবগুলো নিম্নরূপ : ১. ‘ফিতনায়ে মওদুদিয়ত’ বা ‘জামাতে ইসলামী : এক লামহায়ে ফিকরিয়্যাহ’, শায়খুল হাদীস যাকারিয়া রাহ.। ২. আসরে হাযের মে দ্বীন কি তাফহীম ওয়া তাশরীহ (ইসলামের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ), মাওলানা আবুল হাসান আলী নদভী রাহ.। ৩. আল উসতায আলমাওদুদী, মাওলানা ইউসুফ বানুরী রাহ.। ৪. তানক্বীদ আওর হক্বে তানক্বীদ, মাওলানা ইউসুফ লুধিয়ানভী রাহ.। ৫. হযরত মুআবিয়া আওর তারীখি হাক্বায়িক (ইতিহাসের কাঠগড়ায় হযরত মুআবিয়া), মাওলানা মুফতী তাকী উসমানী দামাত বারাকাতুহুম। ৬. মওদুদী সাহেব, আকাবিরে দেওবন্দ কী নজর মে, মাওলানা হাকীম মুহা্ম্মাদ আখতার দামাত বারাকাতুহুম। ৭. মাওলানা মওদুদী কে সাথ মেরী রেফাকত কী সারগুযাশত আওর আব মেরা মাওকাফ (মাওলানা মওদুদীর সাথে আমার সাহচর্যের ইতিবৃত্ত), মাওলানা মানযুর নুমানী রাহ.। ৮. তা’বীর কী গলতী, মাওলানা ওয়াহিদুদ্দীন খান। উপরোক্ত কিছু কিতাব বাংলাতেও অনূদিত হয়েছে। সেগুলো হাদিয়া দেওয়ার মাধ্যমেও তাকে দাওয়াত দিতে পারেন। সর্বোপরি আল্লাহর কাছে দুআ করুন, আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে দ্বীনের সহীহ ‘সমঝ’ দান করেন। আমীন।
শেয়ার লিংক
আমি একজন তালিবে ইলম। আমি ও আমার মতো অনেকেই এ অবস্থার শিকার যে, আমরা যখনই আসাতিযায়ে কেরামের মুখ থেকে বয়ান ও নসিহত শুনি, আমাদের অন্তরে তা উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি করে এবং পড়াশোনায় বেশ বরকত হতে থাকে। কিন্তু পুনরায় তা হ্রাস পেতে থাকে এবং একসময় আমরা আগের অবস্থায় ফিরে আসি। হুজুরের কাছে বাংলা, উর্দু, কিংবা সহজ আরবী ভাষায় রচিত এমন কিছু কিতাবের নাম জানতে চাই, যেগুলো নিয়মিত মুতালাআ করলে পড়াশোনার প্রতি সর্বদা আগ্রহ জাগরুক থাকবে। প্রশ্ন : খ) দারুল উলূম দেওবন্দের প্রথম দিকের মুরব্বীদের আলোচনা যখনই শুনি তখনই তাদের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ি এবং তাদের মতো হওয়ার জন্য মনে সাধ জাগে। কিন্তু তাদের সম্পর্কে যত আলোচনা শুনি তার বেশির ভাগই তাদের পরিণত সময়ের অথচ আমাদের বেশি জানার দরকার তাদের প্রাথমিক জীবনের কথা। তাদের ছাত্রজীবনের কথা। কীভাবে তারা পড়াশোনা করেছেন এবং নিজেদের জীবন গড়েছেন। হুজুরের কাছে আমি এমন কিছু কিতাবের তালিকা জানতে চাই, যেগুলোতে তাদের প্রাথমিক জীবনের কথা বিশদভাবে আলোচিত হয়েছে।
উত্তর : ক) এ বিষয়ে ছোট-বড় অনেক কিতাব রচিত হয়েছে। তন্মধ্যে নিম্নোক্ত কিতাবগুলি অধ্যয়ন করতে পারেন। ১. পা-জা ছুরাগে যিন্দেগী (জীবনপথের পাথেয়), মাওলানা আবুল হাসান আলী নদভী রাহ.। ২. আপ কৌন হ্যায়, কিয়া হ্যায়, আওর আপকা মানসাব ও মানযিল কিয়া হ্যায়। মাওলানা মনযুর নুমানী রাহ.। ৩. ওলামায়ে সালাফ আওর না-বীনা ওলামা, মাওলানা হাবীবুর রহমান খাঁন শিরওয়ানী। ৪. সাফাহাত মিন সাবরিল ওলামা আলা শাদাইদিল ইলমি ওয়াত তাহসীল, শায়খ আবদুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ রাহ.। ৫. কীমাতুয যামান ইনদাল ওলামা, শায়খ মুহাম্মাদ আবদুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ রাহ.। আর আপনার দ্বিতীয় প্রশ্নের জন্য মাওলানা আসলাম শায়খুপুরীর ‘বড়ো কে বাচপান’ (বড়দের ছেলেবেলা) এবং শায়খুল হাদীস মাওলানা যাকারিয়া কান্ধলভী রাহ.-এর ‘আপ বীতি’ অনন্য কিতাব। ‘আপ বীতি’ মুতালাআ করা প্রত্যেক তালিবে ইলমের একান্ত কর্তব্য।
শেয়ার লিংক