হোদায়া কিতাবের সর্বমোট নুসখা কয়টি এবং সেগুলো কোন কোন ছাপাখানা থেকে প্রকাশিত হয়েছে? বর্তমানে কয়টি নুসখা পাওয়া যায়। আমাদের দেশের নুসখাটি কোন ছাপাখানা থেকে প্রকাশিত হয়েছে। প্রত্যেকটি নুসখার সংক্ষিপ্ত তাআরূফ জানতে চাই।
হোদায়া কিতাবের সর্বমোট নুসখা কয়টি এবং সেগুলো কোন কোন ছাপাখানা থেকে প্রকাশিত হয়েছে? বর্তমানে কয়টি নুসখা পাওয়া যায়। আমাদের দেশের নুসখাটি কোন ছাপাখানা থেকে প্রকাশিত হয়েছে। প্রত্যেকটি নুসখার সংক্ষিপ্ত তাআরূফ জানতে চাই।
আপনার এ প্রশ্ন সম্ভবত রবীউস সানী ১৪২৬ হি. (মোতাবেক ১৫ এপ্রিল ’০৫ঈ.) তে পৌঁছেছিল। অর্থাৎ প্রায় তিন বছর পর এর উত্তর লেখা হচ্ছে। এই বিলম্বের একটি কারণ এই যে, উত্তর দেওয়ার জন্য যে কিতাবগুলো দেখা প্রয়োজন ছিল তা সে সময় আমার কাছে ছিল না। দ্বিতীয় কারণ এই যে, প্রশ্নটি যদিও গুরুত্বপূর্ণ এবং তালিবে ইলমের মধ্যে এ ধরনের মেহনতের মেযাজ অবশ্যই থাকা উচিত তবে বিশেষ করে ‘হিদায়ার ক্ষেত্রে এ বিষয়টির প্রয়োজন তেমন হয় না। কেননা, একেতো এতে নুসখাসমূহের ভিন্নতা কম, দ্বিতীয়ত যেসব স্থানে এই ভিন্নতার কোনো প্রভাব রয়েছে সেসব স্থানে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা অন্য ভাবেও সম্ভব। অর্থাৎ হিদায়ার ব্যাখ্যাগ্রন্থসমূহ এবং হিদায়া-পরবর্তী সময়ে রচিত ফিকহের দীর্ঘ গ্রন্থাবলিতে এতদসংশ্লিষ্ট আলোচনা অবশ্যই থাকবে, যার আলোকে বিষয়টি মীমাংসা করা যায়। এজন্য তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় কিতাবপত্র সংগ্রহ করে উত্তর লেখা হয়নি।
এখন আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহে কিছু কিতাবপত্র এসে গেছে। তাই কিছু কথা পেশ করে দিচ্ছি:
‘মুজামুল মাতবূআতিল আরাবিয়্যা ওয়াল মু’রাবা’ র আলোচনা থেকে বোঝা যায় যে, হিদায়া সর্বপ্রথম ১৭৯১ ঈ. লন্ডন থেকে ইংরেজী তরজমাসহ প্রকাশিত হয়েছিল। এরপর ১৮০৭ ঈ. কলকাতা থেকে গোলাম ইয়াহইয়ার তত্ত্বাবধানে তরজমা ছাড়া প্রকাশিত হয়। এরপর ১৮৮৮ ঈ. চার জুয ও দুই খন্ডে প্রকাশিত হয়। আল্লামা লাখনোবী রাহ. ও তাঁর ওয়ালিদ রাহ.-এর টীকাসহ প্রথম প্রকাশিত হয় কানপুর থেকে ১২৮৯-১২৯০ হিজরীতে। এরপর লখনৌ থেকে ১৩১৩ হিজরী-১৩১৪ হিজরীতে প্রকাশিত হয়। এটাও ছিল চার জুয ও দুই খন্ডে।
আল্লামা লাখনোবী র. এর সমসাময়িক আলমুহাদ্দিসুল ফকীহ শায়খ মুহাম্মাদ হাসান সাম্ভলী র. ( ১৩০৫হি.) হিদায়ার উপর বিস্তারিত হাশিয়া লিখেছেন। তার হাশিয়াসহ হিদায়া প্রথম হিন্দুস্তানে ছাপা হয়। এরপর ১৪১০হি. মোতাবেক ১৯৮৭ ঈসাব্দে করাচীর এইচ. এম. সায়ীদ কোম্পানী ওই হিন্দুস্তানী সংস্করণের ফটো সংস্করণ পেশ করে। এটা এ মুহূর্তে আমার সামনে নেই। তাই হিন্দুস্তানে এর মুদ্রণের সন-তারিখ দেওয়া সম্ভব হল না।
এরপর মূদ্রণ যত উন্নতি করেছে ততই প্রসিদ্ধ কিতাবগুলোর পুনঃমুদ্রিত হয়েছে। হিদায়াও এর ব্যতিক্রম নয়। সকল এডিশন সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়, আর এ মুহূর্তে এর তেমন কোনো প্রয়োজনও নেই। হিদায়ার শরাহ-গ্রন্থগুলোর সঙ্গে, বিশেষত ‘আল বিনায়া’ ও‘ফাতহুল কাদীর’ এর সঙ্গে হিদায়া দীর্ঘদিন থেকে সংযুক্ত রয়েছে এবং বহুবার মুদ্রিত হয়েছে।‘বিনায়া’ তো হিদায়ার ‘হামিলুল মতন’ শরহ। বিনায়ার বিশুদ্ধতম এডিশন হল যা মুলতান থেকে মাওলানা ফয়েয আহমদ মুলতানীর তাহকীকে প্রকাশিত হয়েঠেছ। আপাতত এই বিষয়গুলো আরজ করেই শেষ করছি। হিদায়ার নতুন এডিশনগুলোর মধ্যে ‘ইদারাতুল কুরআন করাচী এবং মাদরাসা ইবনে আববাস করচীর এডিশন দুটো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এগুলোতে কিছু স্বাতন্ত্র রয়েছে।
শেয়ার লিংক