...
...
এ বিষয়ে ইমাম ইবনুল মুবারক রহ.-এর কিতাবের বাংলা তরজমা মাকতাবাতুল আশরাফ থেকে প্রকাশিত হয়েছে। শুরুতে আমার ভূমিকা আছে। আপনি প্রথমে ভূমিকাটি মনোযোগের সঙ্গে পড়ুন। এরপর মাওলানা সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ.-এর কিতাব ‘সীরাতে সাইয়্যেদ আহমদ শহীদ’ মুতালাআ করুন। তৃতীয় পর্যায়ে হযরত হাকীমুল উম্মত রহ.-এর কিতাবসমূহ থেকে নির্বাচিত প্রবন্ধ-নিবন্ধ সংকলন ‘ইসলামী হুকুমত ওয়া দুসতূরে মামলাকাত’ অধ্যয়ন করুন।
এই তিন কিতাবের মুতালাআ শেষ হওয়ার পর কোনো বিষয় জিজ্ঞাসা করার থাকলে জিজ্ঞাসা করবেন। সামর্থ্য অনুযায়ী আপনার প্রশ্নের জওয়াব দেওয়ার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
শেয়ার লিংক
বিভিন্ন কিতাবে মুতাক্বাদ্দিমীন ও মুতাআখখিরীনের আলোচনা পেয়ে থাকি, কিন্তু মুতাক্বাদ্দিমীন ও মুতাআখখিরীন বলতে কারা উদ্দেশ্য তা আমাদের নিকট অস্পষ্ট থেকে যায়। তাই হুজুর সমীপে আকুল আবেদন যে, কোন শাস্ত্রে মুতাক্বাদ্দিমীন ও মুতাআখখিরীন বলতে কারা উদ্দেশ্য তা বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করে উপকৃত করবেন।
‘মুতাকাদ্দিমীন’ ও ‘মুতাআখখিরীন’ বলতে কাদেরকে বোঝানো হয়-এ বিষয়টি হচ্ছে একটি আপেক্ষিক বিষয়। শব্দ থেকেও তা বোঝা যাচ্ছে। এজন্য এ শব্দ প্রয়োগকারী এবং প্রয়োগক্ষেত্র ইত্যাদি বিবেচনা করে বিষয়টি নির্ণয় করতে হবে। আল্লামা লাখনোবী রহ. ‘মুকাদ্দিমায়ে উমদাতুর রিয়ায়া’তে (পৃ. : ১৫) লিখেছেন, ফুকাহা মুতাকাদ্দিমীন বলতে উদ্দেশ্য হচ্ছে, যাঁরা অন্তত ইমাম মুহাম্মদ ইবনুল হাসান রহ. (১৩১হি.-১৮৯ হিজরী) এর যুগ পেয়েছেন। আর তার পরের মনীষীরা‘মুতাআখখিরীন’ এর অন্তর্ভুক্ত।
‘দুসতূরুল উলামা’ (২/১৭৮)তে বলা হয়েছে, শামসুল আইম্মা হালওয়ানী (৪৪৮হি.) থেকে হাফেযুদ্দীন বুখারী (৬৯৩হি.) পর্যন্ত মনীষীগণ ‘উলামায়ে মুতাআখখিরীন’ এর অন্তর্ভুক্ত।
বলা বাহুল্য, প্রথম মতটিই অধিক বাস্তবসম্মত। তবে কোনোটিই ‘কায়েদায়ে কুল্লিয়া’ নয়।
হাদীস শরীফের রাবীগণের ব্যাপারে অনেক মনীষীর বক্তব্য এই যে, হিজরী তৃতীয় শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত সময়কালের রাবীগণ ‘মুতাকাদ্দিমীন’-এর অন্তর্ভুক্ত। এর পরের রাবীগণ ‘মুতাআখখিরীন’। (মীযানুল ই’তিদাল, যাহাবী, মুকাদ্দিমা)।
আপনার তৃতীয় প্রশ্নটি ফিকহী মাসআলা সংক্রান্ত। বিষয়টি কোনো দারুল ইফতা থেকে জেনে নিবেন কিংবা আলকাউসারের প্রশ্নোত্তর বিভাগে চিঠি লিখবেন।
শেয়ার লিংক
(ক) আমি এখন আল্লাহর রহমতে হিদায়া কিতাব পড়ছি এবং তার শরাহ ফাতহুল কাদীর কিনেছি। এখন প্রশ্ন হল কিতাব দুটি কোন নিয়মে মুতালাআ করলে বেশি উপকৃত হব। আশা করি সুন্দর পরামর্শ দিয়ে আমাকে উপকৃত করবেন।
(খ) আলহামদুলিল্লাহ আমি অনেক কিতাব খরিদ করেছি। এখন জিজ্ঞাসা হল আমি তো এইগুলো বাড়ির টাকা দিয়ে খরিদ করেছি। এখন এই কিতাবগুলোতে আমার ভাইরাও কি শরীক হবে? দলীলসহ জানিয়ে বাধিত করবেন।
(ক) হিদায়া ও ফাতহুল কাদীর সম্পর্কে একাধিকবার লেখা হয়েছে। আলকাউসারের মুহাররম ’২৬, ফেব্রুয়ারি ’০৫; সফর ’২৬, মার্চ ’০৫; জুমাদাল উখরা ’২৮, জুলাই ’০৭ সংখ্যাগুলো দেখুন। এরপরও যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে লিখুন।
(খ) এটা তো দারুল ইফতায় জিজ্ঞাসা করা উচিত ছিল।
আপনার মুরববীরা আপনাকে কিতাব কেনার টাকা দেওয়ার সময় যদি একথা না বলে থাকেন যে, এ কিতাব তোমাদের সবার, তাহলে তো বোঝাই যাচ্ছে, এগুলো আপনারই কিতাব। তবে আপনার কিতাব থেকে উপকৃত হওয়ার হকদার আপনার ভাইয়ের চেয়ে অধিক আর কে হতে পারে?
শেয়ার লিংক
(ক) আমি কাফিয়া জামাতের একজন ছাত্র। আমার অসুবিধাগুলো হল-
আমি নাহু এবং ছরফ-এর কাওয়ায়েদগুলো মুখস্থ করেছি এবং ভালোভাবে বুঝেছি। কিন্তু আমি এখনও সহীহ শুদ্ধভাবে ইবারত পড়তে পারি না। তাই ইবারত সহীহভাবে পড়ার জন্য আমাকে কী করতে হবে? নাকি আদব বিভাগে ভর্তি হতে হবে?
(খ) আমি উসূলুশ শাশী কিতাবটি বুঝি না। বিশেষ করে আমরের বয়ানগুলো একেবারেই বুঝি না। এই কিতাবটি বুঝার জন্য আমাকে অন্য কোনো কিতাব মুতালাআ করা লাগবে কি না?
(গ) আরবী লেখার ক্ষেত্রে কোন পদ্ধতি অনুসরণ করলে আমার জন্য সুবিধা হবে। আমার বাংলা লেখা তো দেখছেন, এখন এই বাংলা লেখা চলবে নাকি আরো সুন্দর করতে হবে?
(ক) একদম না। প্রতিদিন বিশ-পঁচিশ মিনিট করে ‘আননাহবুল ওয়াজিহ’ কিংবা ‘আততরীক ইলান নাহব’-এর সাহায্যে নাহবী তামরীন করবেন এবং ‘আততরীক ইলাছ ছরফ’ এর সাহায্যে ছরফী তামরীন করবেন। এই দু’বিষয়ের তামরীন ফলপ্রসূ হওয়ার জন্য যদি ‘আততরীক ইলাল আরাবিয়্যাহ’ এবং ‘আততামরীনুল কিতাবী আলাত তরীক ইলাল আরাবিয়্যাহ’ প্রয়োজন হয় তবে তা-ও সঙ্গে রাখবেন।
আপনার দরসের কোনো আরবী কিতাব থেকে প্রতিদিন তিন-চার লাইন খাতায় লিখবেন। এরপর চিন্তা-ভাবনা করে প্রয়োজনে ‘নাহবেমীর’ ও ‘ইলমুছ ছীগা’ এর সাহায্য নিয়ে এই বাক্যগুলোর‘নাহবী’ ও ‘ছরফী’ তাহকীক করবেন। ই’রাব লাগাবেন এবং বাংলায় তরজমা করবেন। এটাও তামরীনের একটি পদ্ধতি।
দশ পনের দিন এভাবে মেহনত করে দেখুন। ইনশাআল্লাহ কিছু কিছু সুফল পেতে শুরু করবেন।
(খ) ‘তাসহীলু উসূলিশ শাশী’ এবং ‘তাইসীরু উসূলিল ফিকহ’ নামে দু’টো কিতাব তৈরি করেছেন জামেয়া বিন্নুরী টাউন করাচির উস্তাদ মাওলানা আনোয়ার বদখশানী। তবে এতে সহজ করার উদ্দেশ্য পুরোপুরি অর্জিত হয়নি। আপনার আগ্রহ থাকলে কিতাব দুটো সংগ্রহ করতে পারেন অথবা উবায়দুল্লাহ আসআদী ছাহেবের উর্দূ রিসালা-‘উসূলুল ফিকহ’ কিংবা ‘আলওয়াজিহ ফী উসূলিল ফিকহ’ মুতালাআ করতে পারেন। এমনিতে যেহেতু বিষয়টি নতুন তাই প্রথম দিকে কিছুটা অপরিচিতির দূরত্ব অনুভূত হতে পারে। তবে ইনশাআল্লাহ ধীরে ধীরে তা কেটে যাবে এবং বিষয়টি সহজ মনে হবে।
(গ) আপনার হস্তাক্ষর-মাশাআল্লাহ পরিষ্কার। তবে তা আরো সুন্দর করার জন্য মশক করলে ভালো হবে। আরবী হস্তাক্ষর সুন্দর করার জন্য কী করতে হবে-এ বিষয়ে গত সংখ্যায় বা তার আগের সংখ্যায় লিখেছি।
আপনি আরেকটি প্রশ্ন করেছেন। এ বিষয়ে আপনার তা’লীমী মুরববী ভালো বলতে পারবেন। কেননা বিস্তারিত না জেনে এ বিষয়ে মশোয়ারা দেওয়া মুশকিল।শেয়ার লিংক