ক) আমি মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখা করতে চাই, কিন্তু পড়তে বসলে মন এদিক ওদিক ছুটে যায়। তাই মনোযোগ সহকারে পড়ালেখা করতে পারি না। পড়াশোনায় মনোযোগ বসানোর কোনো কৌশল যদি থাকে তাহলে দয়া করে জানালে খুশি হব।
খ) এমন কোনো কৌশল আছে কি, যা অনুসরণ করলে অনেক দিন পড়া মনে থাকে? দয়া করে জানালে কৃতজ্ঞ হব।
ক ও খ) মনোযোগের ক্ষেত্রে কী কী বিষয় প্রতিবন্ধক তা আগে চিহ্নিত করা দরকার। কিন্তু আমার তো মনে হয়, জীবনের এই সময়টাতে মনোযোগ ও একাগ্রতা নষ্ট হওয়ার যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই। রুজি-রোজগারের চিন্তা নেই, জমি-জমার পেরেশানি নেই, বিবি-বাচ্চা ও পরিবারের ঝামেলা নেই, এই অবস্থায় একজন তালিবে ইলমের একমাত্র চিন্তা ইলম অর্জন। একমাত্র কাজ তলবে ইলম।
আসল কথা হল, অন্তরে যে বিষয়ের গুরুত্ব থাকবে তার প্রতি মনোযোগও স্বাভাবিকভাবেই বৃদ্ধি পাবে। আর ইলমে দ্বীনের চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও মাহাত্মপূর্ণ বিষয় আর কী হতে পারে? তাই যে মাকামের বিরাছাত হাসিলের জন্য আপনার জ্ঞান-সাধনা সে মাকামের কথা বারবার চিন্তা করুন। আর এটাও ভাবুন যে, এত বড় মাকাম ও এত বিশাল দায়িত্বের জন্য কেমন মেহনত-মুজাহাদা করা উচিত।
এই মাকামের গুরুত্ব বোঝার জন্য মাওলানা মানযুর নুমানী রাহ.-এর ‘আপ কৌন হ্যায়, কিয়া হ্যায়, আওর আপকা মানসিব ও যিম্মাদারী কিয়া হ্যায়’, মাওলানা আবুল হাসান আলী নদভী রাহ.-এর ‘পা জা ছুরাগে যিন্দেগী’ পাঠ করতে পারেন। কিতাব দুটির বাংলা তরজমাও যথাক্রমে ‘তালিবানে ইলমের রাহে মানযিল’ ও ‘জীবনপথের পাথেয়’ নামে প্রকাশিত হয়েছে।
মনোযোগ বাড়ানোর ক্ষেত্রে সালাফ ও আকাবিরের জীবনী পাঠও ফলদায়ক হতে পারে, বিশেষত ইলমের জন্য তাদের কুরবানী ও সময়ের কদরদানির উপর লিখিত কিতাবগুলো বেশি বেশি পড়ুন। ইনশাআল্লাহ ফায়েদা পাবেন।
বিশেষভাবে তিনটি বিষয়ে যত্নবান হোন। প্রথমত : চোখ-কান-যবান হেফাযত করুন। দ্বিতীয়ত : অহেতুক কাজ-কর্ম থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। তৃতীয়ত : খরচ সীমিত করুন, ‘করয’ থেকে দূরে থাকুন।
একাগ্রতা নষ্ট হওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে, এক্ষেত্রে আপনার তালিমী মুরববীর পরামর্শ ও নির্দেশনা গ্রহন করুন। আর হিফযের সহজতার জন্য আলকাউসার (ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সংখ্যায়) ‘হিফযুন নুসুস’-এর মাকালায় যে নুসখা দেওয়া হয়েছে সে অনুযায়ী আমল করে দেখতে পারেন। আপনি আমার জন্য দুআ করেছেন। আল্লাহ আমাদের সবার জন্য তা কবুল করুন।