মুহা. হাবীবুল্লাহ - বগুড়া, জামিল মাদরাসা

প্রশ্ন

আমি মুতাওয়াস্সিত পর্যায়ের ছাত্র। হেদায়া আখেরাইন পড়ি। পড়ালেখা কিছু বুঝি, তবে গভীরে পৌঁছতে পারি না। লেখার অভ্যাস কিঞ্চিত, কিন্তু ধরা-বাধা কোনো নিয়ম নেই। আগ্রহ আছে, দুঃখ হল, উৎসাহদাতা কেউ নেই। বহু কষ্টে জীবনের লক্ষ স্থির করেছি লেখক হব। লেখনির মাধ্যমে দ্বীনের খেদমত করব। ইসলাম বিদ্বেষী ভুইফোড় লেখকদের সমুচিত জবাব দিব। তবে এজন্য  তো গবেষণাভিত্তিক কিছু লেখা চাই, কিন্তু গবেষণা তো কিছুই করতে পারছি না। লিখব কীএভাবেই আশা-হতাশায় কেটে যাচ্ছে দিন। কোনোই  কিনারা করতে পারছি না। এ অবস্থায় সঠিক পরামর্শ পেলে চিরকৃতজ্ঞ থাকব। উল্লেখ্য, আমি স্কুলে পড়িনি। মাদরাসাতেই যা টুকটাক বাংলা শিখেছি। এ পর্যন্ত কোনো পত্রিকায় লিখিনি। এখন লিখতে চাচ্ছি। কোন পত্রিকাটা আমার জন্য যুতসই হবে, জানাবেন।

উত্তর

বিভিন্ন সাময়িকীর তুলনামূলক অধ্যয়নের মাধ্যমে এবং সেগুলোর দায়িত্বশীলদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আপনি নিজেও তা করতে পারেন। তবে আপনি আপনার কিছু প্রবন্ধ নমুনা হিসেবে আলকাউসারেও পাঠাতে পারেন। সম্পাদনা পরিষদ ইনশাআল্লাহ এর মূল্যায়ন করবে এবং আপনাকে নেক পরামর্শ দিবে।

শেয়ার লিংক

মুহা. লুৎফুর রহমান - জামাত: আলিয়া ২য় বর্ষ<br> জামেয়া দরগাহ্ মাদরাসা, সিলেট

প্রশ্ন

আমার বড় আশা ভালো আলেম হয়ে কুরআন, হাদীসের ব্যখ্যা জানব এবং সে মুতাবিক আমার জীবন গড়ে তুলব, যেন আল্লাহ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার ওপর সন্তুষ্ট হন, কিন্তু আমি অনেক চেষ্টা সাধনা করেও উস্তাদদের তাকরীর বা যে কিতাব মুতালাআ করি তা থেকে অর্জিত মাসআলাগুলি মনে রাখতে পারি না। আমি অনেক চেষ্টা করেছি তার কারণ খঁুজে বের করার জন্য, তবে ব্যর্থ হয়েছি। বুযুর্গর পরামর্শানুযায়ী কাজও করেছি, কিন্তু  কোনো ফল পাই বলে বুঝতে পারছি না। আপনি এ ব্যাপারে কোনো উপদেশ দিলে রাহবার মনে করে করতাম।

শেষ অনুরোধ, আপনি আমাকে কিছু নসীহত করলে অত্যন্ত  উপকৃত  হতাম। আপনি আমার জন্য দুআ করবেন।

উত্তর

খুবই ভালো লক্ষ্য স্থির করেছেন। আল্লাহ আপনাকে তাওফীক দিন এবং কবূল করুন। আমি আপনার জন্য দুআ করছি। আপনি নসীহত করতে বলেছেন। আমার নসীহত হল, সবর ও ধৈর্যের সঙ্গে আসাতিযায়ে কেরামের নির্দেশনা মোতাবেক আমল করতে থাকুন। অধৈর্য হয়ে পরিশ্রম ছেড়ে দেওয়া বা পরিশ্রম কমিয়ে দেওয়া উন্নতির পথে অনেক বড় প্রতিবন্ধক। এ থেকে বেঁচে থাকা জরুরি।

اندريں راہ مى تراش ومى خراش + تا دم آخر دمے فارغ مباش

 

শেয়ার লিংক

শুয়াইব - জামাতে শরহেজামী <br>  জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলূম <br> ফরিদাবাদ, ঢাকা

প্রশ্ন

{} দরসী কিতাবের পাশাপাশি বাংলা বানানের নিয়ম কানূন ও বাংলা লেখার নিয়ম কানূন, বাংলা ব্যাকরণ ও বিজ্ঞান এবং ইতিহাস বিষয়ক বই পড়তে আমার খুব ভালো লাগে। এখন কথা হল দরসী কিতাবের পাশাপাশি এই সমস্ত বিষয়ের বই নিয়ে ব্যস্ত থাকা আমার জন্য ঠিক হবে কি?

{খ} বর্তমানে ইসলাম বিদ্বেষীরাই বাংলা সাহিত্যে প্রাধান্য বিস্তার করে রেখেছে। তাই বাজারে খেঁাজ করলে তাদেরই বই চোখে পড়ে। তাদের বই একদিকে তো উপন্যাস, অন্যদিকে ইসলামী চিন্তাধারাকে পাল্টে দেয়। তাদের বই দেখতে গোলাপ ফুলের ন্যায়, কিন্তু ভিতরে বিষ আর বিষ। তাই আপনি আমাকে ইসলামী চিন্তাধারার কয়েকজন লেখকের এমন কিছু বইয়ের নাম বলে দিলে ইনশাআল্লাহ অনেক উপকৃত হব, যে বইগুলোর মাধ্যমে বাংলা সাহিত্য শেখাও সম্ভব হবে।{গ} আব্বা আমার হাতে বাংলা বানানের বই কিংবা বাংলা অভিধান দেখলে খুব রাগ করেন, যার কারণে বাংলা অভিধান ও বাংলা বিষয়ক বই লুকিয়ে লুকিয়ে পড়তে হয়। তিনি ছাত্র জীবনে বাংলা চর্চাকে পছন্দ করেন না। তিনি এটাকে  ইলমের পথে বাধা মনে করেন। আব্বার এই মতটা কি ঠিক?

উত্তর

(ক)  এব্যাপারে সবার জন্য এক কথা বলা যায় না, কোনো তালিবে ইলম যদি যোগ্য ও মেহনতী হয় তবে দরসী পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে কিছু পড়তে চাইলে তাতে বাধা নেই্ কিন্তু মনে রাখতে হবে, যা করবেন আপনার তালীমী মুরব্বীর সঙ্গে পরামর্শক্রমে করবেন এবং নিজেকে তার নির্দেশনার অনুগত রাখবেন।

(খ) এ প্রশ্নের  উত্তর লেখার আগে আমি মাওলানা আবু তাহের মিছবাহ  ছাহেব (দামাত বারাকাতুহুম) ও মাওলানা আহমাদ মায়মূন সাহেব (যীদা মাজদুহুম) এর সঙ্গে  মশোয়ারা করেছি। তাদের পরামর্শের ভিত্তিতে বলছি যে, বাংলা সাহিত্যে ইসলামী মনোভাবসম্পন্ন  ব্যক্তিদের অবদানে যে শূন্যতা বিরাজ করছে তা পূর্ণ করা একটি জাতীয় দায়িত্ব, যা পালন করা বা পালন করার জন্য কর্মক্ষেত্রে অবতীর্ণ হওয়া ইলমী জগতের কর্ণধারদের অপরিহার্য দায়িত্ব। হতে পারে কারো মাধ্যমে আল্লাহ এ শূন্যতা পূরণ করবেন।

বর্তমানে ইসলামী মানসিকতার লেখকদের যেসব রচনা বিদ্যমান রয়েছে তার মধ্যে আপনি সৈয়দ আলী আহসানসৈয়দ আলী আশরাফ, কবি গোলাম মোস্তফার  রচনা পড়তে পারেন। তদ্রূপ আখতার ফারূক সাহেবের প্রথম দিকের রচনাবলিও পড়তে পারেন। এঁরা সবাই ইন্তেকাল করেছেন। বর্তমান লেখকদের মধ্যে মাওলানা  মুহিউদ্দীন খান সাহেবের প্রথম দিকের যে সব রচনা  তিনি নিজে যত্মের সাথে প্রস্তুত করেছেন এবং মাওলানা ফরীদউদ্দীন মাসউদ সাহেবেরও অনুরূপ কিতাবগুলো পড়তে পারেন।

সমালোচনা সাহিত্যে শিহাবুদ্দীন এর নজরুল ইসলাম বিষয়ক সমালোচনা পড়া যেতে পারে। কাব্য  সাহিত্যে ফররুখ এর রচনাবলি পড়ার মতো।

মাওলানা আহমাদ মায়মূন সাহেব বলেছেন, বর্তমান সময়ের লেখকদের মধ্যে মাওলানা আবু তাহের মিছবাহ সাহেব এর সাহিত্য আমার কাছে ভালো লাগে। এ জন্য তার অনূদিত রিয়াযুস সালেহীন তার সম্পাদিত শিশুকিশোর পত্রিকা পুষ্প ইতিহাসের উপর ইতিহাসের কাঠগড়ায় হযরত মুয়াবিয়া জীবন পথের পাথেয় এবং আকীদা, সীরাত ইত্যাদি বিষয়ে তার শিশুসিরিজ প্রস্তুত  হয়েছে, এগুলোও নিয়মিত পড়তে পারেন। আরও জানতে হলে উপরোক্ত দুজন কিংবা এ বিষয়ের রুচিশীল ব্যক্তিদের শরণাপন্ন হতে পারেন। কিন্তু একথাটি মনে রাখবেন যে, এ বিষয়ে অগ্রসর হতে হলে আপনাকে অবশ্যই এ বিষয়ের কোনো রুচিশীল ব্যক্তিকে মুরব্বী হিসেবে গ্রহণ করতে হবে, তাহলে পরিশ্রম ফলদায়ক হওয়ার এবং পদস্খলন থেকে মুক্ত থাকার আশা করা যায়।

আল্লাহ তাআলা তাওফীক দান করুন।

(গ) সাধারণভাবে তো ছাত্রদের জন্য তাই করণীয়, যা আপনার আব্বা বলেছেন। তবে সকল নীতিরই কিছু ব্যতিক্রমও থাকে। তাই আপনি আপনার তালীমী মুরব্বীর সঙ্গে পরামর্শ করে কর্মপন্থা নির্ধারণ করুন।

শেয়ার লিংক