গত জানুয়ারি ২০১২ আলকাউসারের ৪২ পৃষ্ঠায় ফাতাওয়ার কিতাবে একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে। আমরা তো আগে জানতাম যে, বাদায়েউস সানায়ে, ফাতহুল কাদীর, তাবয়ীনুল হাকায়েক ও ইমাম মুহাম্মাদ, তহাবী, জাসসাস রাহ.-এর কিতাবসমূহের গ্রহণযোগ্যতাও অনেক বেশি এবং ফাকাহাত তৈরির ক্ষেত্রেও বেশি উপযুক্ত।
এমনিভাবে শাখাগত মাসআলার দিক থেকে আলবাহরুর রায়েক, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ইত্যাদি কিতাব প্রসিদ্ধ এবং এগুলোর গ্রহণযোগ্যতাও কম নয়। এবং দলিলের আলোকেও উপরোক্ত কিতাবগুলো ভালো। তাহলে এই সকল কিতাব বাদ দিয়ে অন্য কিতাবের নির্বাচন করার কারণ জানতে ইচ্ছুক। এখানে কি অন্য কোনো দিক বিবেচনা করে তালিকা প্রস্ত্তত করা হয়েছে, নাকি বাস্তবে এই কিতাবগুলো থেকে ঐ কিতাবগুলো বেশি ভালো, কিন্তু আমাদের জানাটা ভুল? জানালে খুশি হব। এমনিভাবে আমরা জানি, উর্দু ফাতাওয়ার মধ্যে ইমদাদুল ফাতাওয়ার গ্রহণযোগ্যতা বেশি, কিন্তু ওটাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তাহলে আমাদের জানাটা কি ভুল? না অন্য কোনো কারণ আছে?
মওসূআতুল ফিকহিয়্যার গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু? এর কিছু বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করার দরখাস্ত করছি।
আল্লাহ তাআলা আপনার নেক হায়াতকে বাড়িয়ে দিন এবং আপনাকে সিহহত ও আফিয়তের সাথে রাখুন এবং ইলম-আমল, যুহদ ও তাকওয়ায় খুব বরকত দান করুন এবং আমাদেরকে আপনার থেকে খুব বেশি উপকৃত হওয়ার তাওফীক দান করুন। আমীন।
এই অধম সম্পর্কে আপনার দুআগুলো আল্লাহ তাআলা কবুল করুন এবং আপনাকে জাযায়ে খায়র দান করুন।
আপনি যদি উত্তরের পূর্বাপর লক্ষ্য করতেন তাহলে হয়ত এই প্রশ্ন সৃষ্টি হত না। সেখানে তো এই প্রশ্ন ছিল না যে, কোন কোন কিতাব দ্বারা তাফাক্কুহ অর্জন হয় আর কোন কোন কিতাব দ্বারা জুযইয়াতের জ্ঞান লাভ হয়। আবার সরাসরি মতন ও শরহ সম্পর্কেও প্রশ্ন ছিল না। প্রশ্ন ছিল, প্রশ্নকারীর বুঝতে সহজ হয় এমন কিছু ফতোয়ার কিতাব প্রশ্নকারী ক্রয় করতে চান।
রদ্দুল মুহতার ছাড়া অন্য সব কিতাবের ক্ষেত্রে সহজতার প্রতি লক্ষ্য রাখা হয়েছে। আর শায়খ ফুরফুরের তাহকীক ও টীকা সম্বলিত সংস্করণ হলে রদ্দুল মুহতার থেকেও ইসতিফাদা অন্যান্য সংস্করণের তুলনায় সহজ। রদ্দুল মুহতার শুরূহের অন্তর্ভুক্ত হলেও তা ফতোয়ার এমন এক উৎসগ্রন্থ, যা থেকে এ যুগে কোনো হানাফী অমুখাপেক্ষী নয়। অথচ বাস্তবতা এই যে, দাওরায়ে হাদীসের তালাবা ফাতহুল কাদীর, তাবয়ীনুল হাকায়েক, শরহুল কানয, আলবাহরুর রায়েক অনেক সময় সংগ্রহ করলেও রদ্দুল মুহতারকে তাখাসসুসের সাথে খাছ মনে করে তার ধারেকাছেও যায় না।
প্রশ্নের উদ্দেশ্যের প্রতি লক্ষ্য করে দেখুন তো এখানে এমন কোনো কিতাবের নাম দেওয়া হয়েছে কি যা মুনাসিব নয়?
চিন্তা করলে দেখা যাবে, প্রতিটি কিতাব উল্লেখ করার পেছনে কোনো না কোনো হেকমত রয়েছে, যেদিকে কখনো সংক্ষেপে ইঙ্গিতও করা হয়েছে।
ইসতিকসা ছাড়া কোনো কিছু উল্লেখ করার সময় কোনো একটিকে উল্লেখ না করার অর্থ কখনো এই নয় যে, তা থেকে বিমুখ থাকা হয়েছে। নাউযুবিল্লাহি তাআলা মিন যালিকা। এর একটি দৃষ্টান্ত এই যে, আপনি ইমদাদুল ফাতাওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন, কিন্তু ফকীহুন নফস হযরত মাওলানা রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী রাহ. (মৃত্যু : ১৩২৩ হি.)-এর ফতোয়া সংকলন-‘তালীফাতে রশীদিয়া’র কথা উল্লেখ করেননি।
তারপরও আমরা আপনার পুরো প্রশ্নটি প্রকাশ করলাম। আশা করি, এতে তলাবায়ে কেরামের সামনে ঐসব কথাও এসে যাবে, যা জবাবে উল্লেখ করা হয়নি। ইনশাআল্লাহ এতেও ফায়েদা হবে। আল্লাহ তাআলা আপনাকে উত্তম বিনিময় দান করুন। আমীন।
আলমওসূআতুল ফিকহিয়্যাহ আলকুয়াইতিয়্যাহ সম্পর্কে এখন কিছু লিখলাম না। আল্লাহ তাআলা তাওফীক দিলে এ সম্পর্কে পরবর্তী কোনো প্রসঙ্গে কিছু লেখার ইচ্ছা আছে ইনশাআল্লাহ।