মুহাম্মাদ ইমদাদুল্লাহ - তাকমীল, জামিয়া ইসলামিয়া, পটিয়া

প্রশ্ন

ইমাম বুখারী রাহ. থেকে সহীহ বুখারী রেওয়ায়েতকারী তাঁর একজন বিশেষ শাগরিদ হলেন হাম্মাদ ইবনে শাকের রাহ.। ইরশাদুস সারী (১/৩৯) ও ফাতহুল বারী (১/৫)-এর নুসখায় তার নিসবত النسوي   ওয়াও-এর সাথে বলা হয়েছে। কিন্তু সিয়ারু আলামিন নুবালায় (৫/১৫) তা আছে ফা-এর সাথে। অর্থাৎ আননাসাফী।

শায়খ আবদুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ রাহ. তাহকীকু ইসমাইস সহীহাইন পুস্তিকায় (পৃ. ১৫, টীকা : ৩) বলেছেন, আননাসাফী ফা-এর সাথে তাহরীফ। কিন্তু আল্লামা যাহিদ কাওছারী রাহ. ‘‘শুরূতুল আইম্মাতিল খামসাহ লিল হাযিমী’’র টীকায় (পৃ. ১৫৩) হাম্মাদ ইবনে শাকির আননাসাফী (ফা-এর সাথে) উল্লেখ করার পর বলেছেন-

وهو الصواب এখানে শায়খ আবদুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ রাহ. বলেন, তাঁর মন্তব্য-وهو الصواب ইঙ্গিত করে যে, হাম্মাদের নিসবতের ক্ষেত্রে আননাসাফী-ই সঠিক। আননাসাভী (ওয়াও-এর সাথে) সঠিক নয়, যেমন ফাতহুল বারী ও ইরশাদুস সারীতে রয়েছে।

আমার প্রশ্ন এই যে, শায়খ আবদুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ রাহ.-এর দুই মন্তব্যের কোনটি সঠিক। হুজুরের নিকট সমাধান কামনা করছি। আল্লাহ হুজুরকে দীর্ঘ হায়াতে তাইয়্যিবাহ দান করে আমাদেরকে উপকৃত করুন। আমীন।

 

উত্তর

হাম্মাদ ইবনে শাকির রাহ. নাসাফের অধিবাসী ছিলেন। তারীখু নাসাফ কিতাবে তাঁর তরজমা আছে। শামসুদ্দীন যাহাবী রাহ. তারীখু নাসাফের বরাতে সিয়ারু আলামিন নুবালায় তাঁর তরজমা লিখেছেন। তাঁর মৃত্যু-সনও সুনির্দিষ্ট করে বলেছেন। সম্ভবত হাফেয ইবনে হাজার রাহ.-এর সামনে তাঁর বিস্তারিত তরজমা ছিল না। তাই তাঁর মৃত্যু-সন সুনির্দিষ্ট করে উল্লেখ করতে পারেননি। যাইহোক, হাম্মাদ ইবনে শাকির রাহ.-এর সহীহ নিসবত আননাসাফী (ফা-এর সাথে)।

শায়খ আবদুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ রাহ. তাহকীকু ইসমাইস সহীহাইনের যে নুসখা আরো সম্পাদনা ও টীকা সংযোজনের জন্য নিজের কাছে রেখেছিলেন, তাতে এ বিষয়টি সংশোধন করেছিলেন। ঐ সময় বান্দা হযরত শায়খের খেদমতে ছিলাম।

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ ফাহীম - চান্দগাও, চট্টগ্রাম

প্রশ্ন

 

 

প্রশ্ন : ...। 

 


 

উত্তর

 

آمين، ولك مثل ذلك

আপনার চিঠিতে দুটি প্রশ্ন আছে। প্রথম প্রশ্নে আপনি সম্ভবত আলিয়া মাদরাসায় পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছেন। এটা আমাদের কাছে সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। আর সাধারণত যে সকল প্রেরণা থেকে এ কাজ করা হয় তা খুবই নিন্দনীয় ও মারাত্মক। এগুলো থেকে দূরে থাকা অপরিহার্য। 

এ সম্পর্কে আরো কিছু জানার থাকলে জুমাবার ছাড়া অন্য কোনো দিন বেলা এগারোটা থেকে বারোটার মধ্যে এই নাম্বারে ফোন করতে পারেন-০১৭১২-৮৪১৮৪৭। 

দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিল পত্রিকা পড়া সম্পর্কে। সম্ভবত দৈনিক পত্রিকা ও সাধারণ ম্যাগাজিন বোঝাতে চেয়েছেন। তালিবে ইলমীর যমানায় এইসব থেকে দূরে থাকা ফরয এবং নিঃসন্দেহে ফরয। এ জাতীয় পত্রিকা পড়ার কুফল সম্পর্কে শাইখুল হাদীস যাকারিয়া রাহ.-এর আপবীতীর আলোচনাটি পাঠ করুন।

ইলমী ইসতিদাদ পয়দা হওয়ার জন্য ইনহিমাক ও একাগ্রতার কোনো বিকল্প নেই। মনে রাখবেন, ইনহিমাক, ইখলাস ও ইসতিখলাস ছাড়া তালিবে ইলম তো দূরের কথা,ছাত্রও হওয়া যায় না।

যারা বিভিন্ন যুক্তি ও উপযোগিতার ছূতায় এ জাতীয় পত্র-পত্রিকায় লিপ্ত হয় তাদের কর্তব্য, নিজের তালীমী মুরববীর সাথে পরামর্শ করা। এখানে প্রয়োজনীয় কিছু থাকলে তা অর্জনের এমন কোনো উপায় তাঁরা বলে দেবেন, যা তালিবে ইলমের একাগ্রতা নষ্ট করবে না। 

 

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আলী আকবর - জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসা, ছোটবন গ্রাম, রাজশাহী

প্রশ্ন

মুহতারাম! আপনি কেমন আছেন? আমার বিশ্বাস আল্লাহ তাআলার অপার অনুগ্রহে নিশ্চয়ই ভালো আছেন। কারণ যার দ্বারা আল্লাহ তাআলা তালিবানে ইলমের মুজাদ্দিদানা খেদমত নিচ্ছেন তাকে কি তিনি অশান্তিতে রাখতে পারেন। আমার খুব ইচ্ছা, আপনার কাছ থেকে কিছু পরামর্শ ও নির্দেশনা নিব। তাই নিবেদন করছি।

ক) হুজুর, আমি জামাতে শরহে বেকায়াতে পড়ি। আমাদের নেসাবে আছে যথাক্রমে : কুরআন তরজমা (১-১৫), শরহে বেকায়া, মুয়াত্তা, মুখতাসারুল মাআনী, নূরুল আনওয়ার (কিতাবুল্লাহ), সিরাজী, মাকামাতে হারীরী ও আত তরীক ইলাল ইনশা (১-৩)। এ কিতাবগুলো কোন সময় ও কীভাবে মুতালাআ করলে ভালো হবে এবং সহায়ক হিসেবে কী কী শরাহ মুতালাআ করা যায় জানতে চাই।

খ) আমি আরবী শরাহ মুতালাআ করতে ইচ্ছুক। উল্লেখিত কিতাবগুলোর কী কী আরবী শরাহ মুতালাআ করা যেতে পারে। জানালে চিরকৃতজ্ঞ থাকব।


উত্তর

اللهم ما أمسى بي من نعمة أو بأحد من خلقك فمنك وحدك لا شريك لك فلك الحمد ولك الشكر جزاك الله تعالى خيرا.

আল্লাহ তাআলা আপনার সুধারণা কবুল করুন।

আপনার প্রথম প্রশ্ন ছিল, নেসাবের কিতাবগুলো কীভাবে ও কোন সময় পড়বেন। এটা তো আসলে মাদরাসার নিয়মের বিষয়। মাদরাসার নেযামুল আওকাত অনুযায়ী মুতালাআ ও তাকরার করবেন।

যদি প্রশ্ন হয় নাশাত ও উদ্যমের সময় কোন কিতাব পড়া চাই, তাহলে মূলনীতি এই যে, সবচেয়ে কঠিন ও গুরুত্বপূর্ণ কিতাব ঐ সময় পড়া চাই, যখন মন-মস্তিষ্ক প্রফুল্ল থাকে এবং উদ্যম ও আগ্রহ পরিপূর্ণ থাকে। যেমন প্রথমে তারজামাতু মাআনিল কুরআনিল কারীম, এরপর মুখতাসারুল মাআনী, এরপর শরহে বিকায়া ...।

আর কীভাবে মুতালাআ করব-এটা একটা অস্পষ্ট প্রশ্ন। তবে বেশ প্রচলিত। প্রশ্ন অস্পষ্ট হলে উত্তরও তো অস্পষ্টই হবে। যাই হোক, এ বিষয়ে সাধারণ কিছু কথা আরজ করছি।

১. যা কিছু পড়ুন, বুঝে পড়ুন। অন্তত বুঝে পড়ার চেষ্টা করুন। যে কিতাবে অনুশীলন জরুরি, তাতে গুরুত্বের সাথে অনুশীলন করুন। যেমন আততরীক ইলাল ইনশা কিতাবটি অনুশীলন ছাড়া পড়লে কি কোনো ফায়েদা হবে, তা যত বারই পড়া হোক? ইনশার জন্য এখন নতুন নতুন কিতাব এসেছে। সেগুলোর সহযোগিতা নিতেও কোনো বাধা নেই।

২. নিজের সাথে বা কোনো সহপাঠীর সাথে আলোচনা করুন যে, ইবারতের যে তরজমা করলেন তা কীভাবে করলেন। তরজমাটি কি ইবারতের সাথে মিলাতে পারেন, না শুধু অনুমান করে তরজমা করেছেন?

৩. যা বুঝলেন তা মাঝে মাঝে উস্তাদকে শুনিয়ে দেখুন, ঠিক বুঝলেন, না ভুল; পুরা বুঝলেন, না অর্ধেক।

৪. যে ইবারতের অর্থ বুঝে আসেনি,

চিন্তা করুন, কেন বুঝে আসেনি-

ক) কোনো শব্দের অর্থ না জানার কারণে? তাহলে গরীবুল ফিকহ (লোগাতুল ফিকহ)-এর কোনো কিতাব কিংবা কোনো সাধারণ ও নির্ভরযোগ্য লোগাতের কিতাবের সহায়তা নিন।

খ) তারকীব না বোঝার কারণে? তাহলে বার বার চিন্তা করুন। কারো সাথে আলোচনা করুন। কিংবা নাহব-সরফের কিতাবের সহায়তা নিন।

গ) কিতাবের আলোচনা-ভঙ্গির সাথে পরিচিত না হওয়ার কারণে? তাহলে বারবার মুতালাআ করে কিতাবের সাথে উন্স ও ভাব পয়দা করুন।

ঘ) বিষয়টি জটিল হওয়ার কারণে? তাহলে নির্ভরযোগ্য কোনো শরাহর সহায়তা নিন এবং সবশেষে উস্তাদের শরণাপন্ন হোন।

ঙ) ফনটি আপনার জন্য নতুন হওয়ার কারণে? তাহলে প্রথমেই চিন্তা করুন, ফনটি যদি জরুরি হয় তাহলে এর সাথে পরিচয় না থাকা কত লজ্জার কথা! সুতরাং তালীমী মুরববীর মশোয়ারা অনুযায়ী ঐ ফনের কোনো সহজ ও আকর্ষণীয় কিতাব পাঠ করুন এবং ফনটির সুফল ও প্রয়োজন চিন্তা করে তার সাথে অন্তরঙ্গতা সৃষ্টি করুন।

চ) না বোঝার কারণ কি কিতাবী ইসতিদাদের দুর্বলতা? তাহলে ধীরে ধীরে এই দুর্বলতা দূর করার চেষ্টা করুন। এর জন্য কোনো প্রাজ্ঞ ও স্নেহশীল উস্তাদের তত্ত্বাবধান অপরিহার্য। তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী মেহনত করতে হবে এবং মেহনত জারি রাখতে হবে। হিম্মত হারানো যাবে না। মেহনত ও দুআ এবং তাকওয়া ও ইনাবত ইলাল্লাহ জারি থাকলে মাহরূম হওয়ার কারণ নেই।

والذين جهدوا فينا لنهدينهم سبلنا، وان الله لمع المحسنين

প্রথম প্রশ্নের দ্বিতীয় কথা ছিল, ঐ সকল কিতাবের সহায়ক হিসেবে কী কী শরাহ মুতালাআ করা যায়।

তরজমাতু মাআনিল কুরআনিল কারীমের জন্য আততরীক ইলাল কুরআনিল কারীমের তিন হিস্যা মুতালাআ করে বোঝার চেষ্টা করুন। এই দরসে আপনাকে কোন কোন বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি হযরতুল উস্তাযের তাফসীরে তাওযীহুল কুরআন, অনুবাদ : হযরত মাওলানা আবুল বাশার ছাহেব, নিয়মিত মুতালাআয় রাখুন। শরহে বেকায়া ও অন্যান্য কিতাবের জন্য কিতাবের সাথে যুক্ত আরবী হাশিয়াই যথেষ্ট। প্রথমে সরাসরি কিতাব হল করার চেষ্টা করুন। খুব প্রয়োজন হলে হাশিয়ার সহায়তা নিন। কিতাব হল হয়ে যাওয়ার পর যদি সময় থাকে তাহলে আরো জানার জন্য, কোনো গলতির ইসলাহের জন্য, কিংবা কোনো অস্পষ্ট বিষয় পুরাপুরি বোঝার জন্য শুরূহ ও হাওয়াশীর সহায়তা নিন।

শুরূহ ও হাওয়াশীর মুতালাআ সঠিক উদ্দেশ্যে হওয়া চাই। শুধু রসম হিসেবে কিংবা ইসতিদাদের কমতি পুরা করার জন্য না হওয়া চাই। অর্থাৎ যে কিতাব পড়ার জন্য যে পরিমাণ ইসতিদাদ জরুরি তা হাসিল না করেই কিতাব শুরু করা হল এবং ইসতিদাদের কমতি শুরূহ-হাওয়াশী; বরং বাংলা তরজমা ও নোটবই দ্বারা পূরণ করার চেষ্টা করা হল! মনে রাখবেন, এটা একটা ব্যর্থ চেষ্টা। এজন্য প্রত্যেক তালিবে ইলম ভাইয়ের কাছে আমার দরখাস্ত, প্রথম জামাত থেকেই মেহনত করে পড়ুন এবং প্রথম থেকেই নিজের সম্পর্কে দায়িত্বশীল হোন।

আপনার দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিল, নেসাবী কিতাবসমূহের আরবী শরহ মুতালাআ করতে  চান। জানতে চাচ্ছেন, কোন কিতাবের মুনাসিব আরবী শরহ কোনটি।

আরবী শরাহর প্রতি আপনার আগ্রহ মোবারকবাদ পাওয়ার যোগ্য। একজন তালিবে ইলমের কুতুবখানায় সাধ্য অনুযায়ী শুরূহ ও হাওয়াশী থাকা উচিত। তবে সেসবের মুতালাআ নেযাম অনুযায়ী হতে হবে। যেন তালাবুল কুল্ল ফওতুল কুল্ল এর দৃষ্টান্ত স্থাপিত না হয়। কিংবা আলআহাম ফালআহাম নীতির বিপরীত না হয়।

তরজমাতু মাআনিল কুরআনিল কারীম-এর জন্য রাগিব আসফাহানীর মুফরাদাতুল কুরআনতাইসীরুল কারীমিল মান্নান, বা আইসারুত তাফাসীর, কিংবা তাফসীরে ইবনে কাছীর সংগ্রহ করতে পারেন।

শরহে বেকায়া সম্পর্কে ইতিপূর্বে লেখা হয়েছে।

মুখতাসারুল মাআনীর ক্ষেত্রে কিতাব হল করার মাকসাদ তাজরীদ দ্বারা হাসিল হতে পারে। আর ফন্নী বহসগুলোর জন্য তালখীসূল মিফতাহ-এর ফন্নী শুরূহ এবং মাআনী-বয়ানের ফন্নী কিতাবসমূহ সংগ্রহ করতে হবে। এর একটি তালিকা আপনি নিজে প্রস্ত্তত করে কোনো সময় দেখিয়ে নিতে পারেন।

নূরুল আনোয়ারের জন্য কাশফুল আসরার (আলমানারের উপর খোদ মুসান্নাফের শরহ) সংগ্রহ করুন এবং উসূলে ফিকহের নতুন পুরাতন যত কিতাব পান সংগ্রহ করুন। জাসসাস রাহ.-এর আলফুসূল, সারাখসী-এর উসূল ও আলাউদ্দীন বুখারী রাহ.-এর কাশফুল আসরার শরহ উসূলিল বাযদভী ইত্যাদি আগে থেকেই মুদ্রিত আছে। আর এখন তো মাশাআল্লাহ আরো অনেক প্রাচীন কিতাব মুদ্রিত হয়েছে এবং নতুন নতুন অনেক কিতাব ছাপা হয়ে আসছে।

সিরাজীর জন্য আমাদের উস্তাদগণ হাশিয়ায়ে শরীফিয়্যাহ পাশে রাখার পরামর্শ দিতেন। এখন নতুন প্রেক্ষাপটে ফিকহুল মাওয়ারীছের নতুন কিতাবাদিও সংগ্রহ করা জরুরি। তাছাড়া আপনার জানা থাকার কথা যে, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া ফিকহ-ফতোয়ার সকল গ্রন্থেই ফারাইয-অধ্যায় আছে। তাছাড়া তাফসীরের কিতাবসমূহে আছে মীরাছ-সংক্রান্ত আয়াতসমূহের উপর আলোচনা এবং শুরূহে হাদীসে আছে মীরাছ বিষয়ক হাদীসসমূহের বিস্তারিত ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ।

মাকামাত সম্পর্কে সম্ভবত আগেও লিখেছে। জনাব মাওলানা আহমদ মায়মূন দামাত বারাকাতুহুম মাকামাতের যে বাংলা শরহ লিখেছেন তার ভূমিকা পাঠ করুন, ইনশাআল্লাহ জরুরি নির্দেশনা পাবেন। 

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আলমগীর মাহমুদ - মনোহরদী, নরসিংদী

প্রশ্ন

আমি গত বছর শরহে বেকায়া পড়েছি। এ বছর জালালাইন জামাতে ভর্তি হয়েছি। হুজুরের নিকট সবিনয় নিবেদন এই যে, উল্লেখিত জামাতের সংশ্লিষ্ট (জালালাইন, হেদায়া ইত্যাদি) কিতাবে কাঙ্খিত যোগ্যতা লাভের জন্য আমাকে কোন কোন পদ্ধতিতে কী ধরনের মেহনত করা উচিত? এবং বর্তমান সময়ের চাহিদা অনুপাতে জালালাইন জামাতের একজন ছাত্র হিসেবে আমার আর কী করা দরকার? দয়া করে এ বিষয়ে আমার রাহবরী করবেন। জাযাকাল্লাহু খায়রান।


উত্তর

জালালাইন ও হিদায়া সম্পর্কে আলকাউসারের এই বিভাগে কয়েকবার লেখা হয়েছে। অনুগ্রহ করে তা পাঠ করুন। আলহামদুলিল্লাহ বিগত সংখ্যাগুলোর প্রবন্ধ ও শিক্ষা পরামর্শগুলো তালিবানে ইলম : পথ ও পাথেয় নামে গ্রন্থাকারে মাকতাবাতুল আশরাফ বাংলাবাজার ঢাকা থেকে প্রকাশিত হয়েছে। ঐ সংকলনেও বিষয়টি দেখতে পারেন।

আপনি তাফসীরে তাওযীহুল কুরআন অবশ্যই মুতালাআ করুন। তাহযীবু তাফসীরিল জালালাইন পাওয়া গেলে তাও সাথে রাখুন। হিদায়ার সাথে ইলাউস সুনান ওবিদায়াতুল মুজতাহিদের মুতালাআ জারি রাখুন যদি সময় থাকে এবং আপনার মুরববীর ভিন্ন কোনো সিদ্ধান্ত না থাকে। 

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ তাহমীদুল ইসলাম - জামাতে কাফিয়া, বাইতুল ফালাহ মাদরাসা, মুহাম্মাদপুর, ঢাকা-১২০৭

প্রশ্ন

হযরত! আমি কাফিয়া জামাতের একজন ছাত্র। আমাদের নেসাবে ফিকহের কিতাব হচ্ছে কুদূরী। আর উসূলে ফিকহের কিতাব উসূলুশ শাশী। এ কিতাবগুলোতে বহু মাসআলা রয়েছে গোলাম-বাদী সম্পর্কিত। বিশেষ করে উসূলে ফিকহে গোলাম-বাদীর মাসআলা দ্বারাই অধিকাংশ উদাহরণ দেওয়া হয়েছে। অথচ আমরা জানি, গোলাম-বাদীর হুকুম ইসলাম রহিত করেছে। কিন্তু তারপরও কেন তা আমাদের নেসাবের কিতাবসমূহে দীর্ঘকাল ধরে বিশেষ স্থান দখল করে রয়েছে বুঝে আসছে না। আমরা কেন এই রহিত আইন পড়ব? এর মূল কারণ জানতে আগ্রহী এবং গোলাম-বাদীর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস সম্পর্কে (কখন এবং কীভাবে এর হুকুম রহিত করা হয়েছে) কিঞ্চিত আলোকপাত করলে চিরকৃতজ্ঞ থাকব।


উত্তর

আল্লাহর বান্দা! কে আপনাকে বলেছে যে, ইসলামে দাস-বিধান রহিত হয়ে গিয়েছে। আপনি কি কুরআন কারীমে

او ما ملكت ايمانكم

এর আয়াতসমূহ পড়েননি? তেমনি সীরাতের কিতাবে দেখেননি যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম

ইন্তেকালের সময় বলেছিলেন-

الصلاة وما ملكت أيمانكم

তাহলে এই বিধান মানসূখ কীভাবে হল?

ইসলামের আগে দাস-প্রথা ছিল নিপীড়নমূলক। ইসলাম একে ন্যায় ও সাম্যের রূপে পরিবর্তন করেছে। আলকাউসারের প্রথম ভলিউমে (২০০৫ সালের ভলিউমে) রবীউস সানী/জুমাদাল উলা ২৬ (জুন ০৫) ও জুমাদাল উখরা ২৬ (জুলাই ০৫) দুই সংখ্যায় মাওলানা আবদুল গাফফার ছাহেব দামাত বারাকাতুহুমের বিস্তারিত প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। তা মনোযোগের সাথে পাঠ করুন। এর সাথে তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম-এর কিতাবুল ইতাক-এর শুরুতে হযরতুল উস্তাযের প্রবন্ধটিও অধ্যয়ন করুন।

মনে রাখবেন, উদাহরণের উদ্দেশ্য শুধু মাসআলাকে স্পষ্ট করে বোঝানো। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট কিতাবসমূহের রচনা-কালও সামনে রাখা জরুরি। শুধু ক্ষুব্ধ হয়ে কী লাভ? একটি কথা আগেও বারবার বলেছি যে, নেসাবের সংস্কার সম্পর্কে তালিবে ইলমদের মাথা খাটানো ঠিক নয়।

এখন অনুশীলনীযুক্ত কত কিতাব এসে গেছে। আপনি উসূলুশ শাশীর সাথে ঐসব কিতাবও পাঠ করুন এবং সরাসরি আয়াত ও হাদীসে ঐসব কায়েদা প্রয়োগ করার চেষ্টা করুন। আল্লাহ আপনাকে তাওফীক দিন। আমীন। 

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আনওয়ার - সরকারী মাদরাসা-ই আলিয়া ঢাকা

প্রশ্ন

একজন মাদরাসার ছাত্র হিসেবে মাতৃভাষায় আমার কতটুকু দক্ষতা অর্জন করা জরুরি? তথাকথিত কলমবাজদের কলমবাজী দেখে কলম যুদ্ধে লিপ্ত হতে আমার বড়ই ইচ্ছে হয়। তাই বাংলা ভাষা চর্চার গুরুত্ব কতখানি এ ব্যাপারে হুজুরের সুপরামর্শ কামনা করছি।


উত্তর

আল্লাহ তাআলা আপনার নেক জযবাকে কবুল করুন। দ্বীন প্রচারের জন্য মাতৃভাষায় পারদর্শিতা খুবই জরুরি। আমার মশোয়ারা এই যে, আপনি মাওলানা আবু তাহের মিসবাহর সাহিত্য-সংকলনগুলোকে দিশারী হিসেবে গ্রহণ করে মেহনত করতে থাকুন। পুষ্পসমগ্রের উভয় খন্ড সংগ্রহ করুন এবং এসো কলম মেরামত করির অধ্যয়ন ও অনুশীলন অব্যাহত রাখুন। তাঁর রূহানী ও আদবী সফরনামা-বাইতুল্লাহর মুসাফির সম্ভবত পাঠ করেছেন। তবে প্রয়োজন হল বারবার অধ্যয়ন, ধীরে ধীরে অধ্যয়ন এবং গ্রহণের জন্য অধ্যয়ন। 

শেয়ার লিংক