আমরা কাফিয়া জামাতে পড়ি। জানতে চাচ্ছি, কুদুরী ও উসূলুশ শাশী কোন্ নিয়মে পড়লে বেশি ফায়েদা পাব এবং সেইসাথে জানতে চাচ্ছি, উসূলুশ শাশী-এর লেখকের নাম কী এবং এই কিতাবের সঙ্গে আর কী কিতাব পড়লে উপকৃত হব? তা লিখে দেওয়ারও সবিনয় অনুরোধ রইল।
আমরা কাফিয়া জামাতে পড়ি। জানতে চাচ্ছি, কুদুরী ও উসূলুশ শাশী কোন্ নিয়মে পড়লে বেশি ফায়েদা পাব এবং সেইসাথে জানতে চাচ্ছি, উসূলুশ শাশী-এর লেখকের নাম কী এবং এই কিতাবের সঙ্গে আর কী কিতাব পড়লে উপকৃত হব? তা লিখে দেওয়ারও সবিনয় অনুরোধ রইল।
‘মুখতাসারুল কুদূরী’ রচনার উদ্দেশ্যই হচ্ছে, গুরুত্বপূর্ণ মাসআলাসমূহ বোঝা এবং সেগুলো মুখস্থ করা। তাই এ কিতাবে আপনার প্রধান কাজ হবে- প্রথমে আপনি কিতাব ‘হল’ করবেন; এরপর সুস্পষ্টভাবে মাতৃভাষায় ওই মাসআলা বুঝবেন; মুযাকারা ও আলোচনার মাধ্যমে বা খাতায় নোট করে মাসআলাগুলো মুখস্থ করবেন।
মাওলানা আশেকে ইলাহী বুলন্দশহরী রাহ.-এর ‘আততাসহীলুজ জরুরী লি-মাসায়িলিল কুদূরী’-এর দুই-চার পরিচ্ছেদ পড়ে দেখতে পারেন- মাসআলা মুখস্থ করার ব্যাপারে এ কিতাব আপনার সহায়ক হয় কি না।
উসূলুশ শাশী সম্পর্কে এ কথা ঠিক যে, এর আগে যদি এ বিষয়ের সহজ ও সংক্ষিপ্ত কোনো কিতাব পড়ে নেওয়া যেত তাহলে খুবই ভাল হত। কিন্তু এই মুহূর্তে এমন কোনো কিতাব আমার জানা নেই, যার ব্যাপারে আমি পরামর্শ দিতে পারি। ‘মুখতাসারাত’ তো বেশ কয়েকটি রয়েছে যেমন : তালখীসুল মানার, হাকীমুল উম্মত হযরত থানবী রাহ. (১৩৬২ হি.) এবং ওইটির তামরীন ও অনুশীলনী ‘আলমাদার’ যা তাঁরই সংকলিত ‘আততালখীসাতুল আশার’-এর একটি, তেমনি যাইনুদ্দীন আলহালাবী (৮০৮ হি.)-এর ‘মুখতাসারুল মানার’ মুদ্রিত ও প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু এগুলোর ‘উসলূব’ উসূলুশ শাশী থেকে সহজবোধ্য নয়।
ড. মুহাম্মাদ সুলাইমান আলআশকার-এর الواضح في أصول الفقه مع أسئلة للمناقشة وتمرينات (للمبتدئين)
কিতাবটি তুলনামূলক সহজ। এর ৫ম সংস্করণ মোট ২৭৭ পৃষ্ঠায় ছেপেছে। যাদের আরবী ভাষার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো তারা কোনো উস্তাযের তত্ত্বাবধানে এটি মুতালাআয় রাখতে পারেন। আমার মতে ড. আব্দুল ওয়াহ্হাব খাল্লাফ-এর কিতাব ‘উসূলুল ফিকহ’ সমষ্টিগত বিচারে সহজই। তবে এই দুই কিতাবের বিন্যাস আমাদের দরসের কিতাবের বিন্যাস থেকে ভিন্ন।
মাওলানা উবায়দুল্লাহ আসআদীর উদূর্ কিতাব ‘উসূলুল ফিকহ’ এবং এর আরবী রূপ ‘আলমুজায ফী উসূলিল ফিকহ’-ও এ বিষয়ের প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের জন্যে সহজতার উদ্দেশ্যেই লেখা হয়েছে। মাওলানা আনওয়ার বদখশনী তো ‘তাসহীলু উসূলিশ শাশী’ নামেই কিতাব লিখে দিয়েছেন। এরপর তিনি আরেকটি কিতাব ‘তাইসীরু উসূলিল ফিকহ’ নামে লিখেছেন। কিন্তু ইনসাফের কথা হল, আমাদের মাদরাসার উপযোগী উসূলুশ শাশীর আগে পড়ানোর জন্যে বা এর স্থলে নেসাবভুক্ত করার মত কোনো কিতাব আমার জানা মতে এখানো তৈরি হয়নি। তবে এতে পেরেশান হওয়ার কিছু নেই। এতদিন পর্যন্ত তো তালেবে ইলমরা উসূলুশ শাশী দ্বারাই তাদের উসূলে ফিকহের তালীম শূরু করেছে এবং এটি নিয়মতান্ত্রিকভাবে পড়ে আসছে। আপনিও তাই করুন। প্রথমে উস্তাযের দরসের সহযোগিতায় পরিভাষা ও কায়েদাগুলো ভালোভাবে বুঝে নিন। এরপর কিতাবের উপমাগুলো ছাড়াও অন্যান্য উপমাতেও সেসব প্রয়োগ করার চেষ্টা করুন। আল্লাহ তাআলা আপনার মদদ করবেন এবং আগামীতে পথ চলা আরো সহজ করে দিবেন।
উসূলুশ শাশী-এর রচয়ীতা সম্পর্কে কিছু কথা
যিরিকলী রাহ. ‘আলআলাম’ ১/২৯৩-এ এবং উমর রেজা কাহহালা রাহ. ‘মুজামুল মুআল্লিফীন’ ১/২২৬-এ ইসহাক ইবনে ইবরাহীম শাশী (৩২৫ হি.)-এর জীবনীতে উসূলুশ শাশী কিতাবটি তাঁরই বলে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু একথা সঠিক নয়; কেননা এই কিতাবের উপস্থাপন-ভঙ্গি মধ্যবতীর্ যুগের। ৩য় শতাব্দীর উপস্থাপন-ভঙ্গির সঙ্গে এর যথেষ্ট অমিল রয়েছে। তাছাড়া এই কিতাবের কিয়াসের আলোচনায় ইমাম আবু যায়েদের উদ্ধৃতি এসেছে। ইমাম আবু যায়েদ দাবুসীর ইন্তেকাল হয় ৪৩০ হিজরীতে। উসূলুশ শাশী যদি ইসহাক শাশীরই হত তাহলে এতে আবু যায়েদের উদ্ধৃতি আসে কীভাবে?
এপর্যন্ত যত খোঁজাখুঁজি করা হয়েছে সে হিসেবে এই কিতাবের রচয়িতা নিযামুদ্দীন শাশী বলেই মনে হয়। যেমনটি ‘কাশফুয যুনূন’-এর বরাতে আল্লামা আব্দুল হাই লাখনোভী রাহ. তাঁর ‘আলফাওয়ায়িদুল বাহিয়্যা’-এর ‘খাতেমা’-এ (পৃ. ২৪৪) লিখেছেন। উস্তাযে মুহতারাম হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ তাকী উসমানী দামাত বারাকাতুহুম তাঁর ‘হামারা তালীমী নেযাম’ ৭৩ পৃষ্ঠায় নিযামুদ্দীন শাশীর মৃত্যু তারিখ ৭৫৪ হি. বলে উল্লেখ করেছেন। এব্যাপারে আরো তাহকীক ও বরাতসহ আলোচনার জন্যে আরো কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।
শেয়ার লিংক
আমি বর্তমানে মেশকাত জামাতের একজন ছাত্রী। আমাদেরকে হেদায়া ছালেছ কিতাবটি পড়ানো হয়। এখন আমি হেদায়া ছালেছ সম্পর্কে এমন কিছু বাংলা কিতাবের নাম জানতে চাই, যার দ্বারা আমার হেদায়া ছালেছ সম্পর্কে পূর্ণ অভিজ্ঞতা হবে এবং ভাল ফলাফল করতে পারব। আল্লাহ আপনাদের সাহায্য ও মঙ্গল করুন।
মূলত হেদায়াকে হেদায়ারই ভাষায় তার উপস্থাপন-ভঙ্গি মোতাবেক শাস্ত্রীয় পদ্ধতিতে বোঝা উচিত। যাতে এই কিতাবের মূল উদ্দেশ্য হাসিল হয়। অর্থাৎ উসূলে ফিকহের আলোকে কাওয়ায়েদে ফিকহ ও মাসায়েলে ফিকহ-এর ইলম অর্জন করা এবং শরীয়তের বিধানাবলির ‘হিকাম’ ও ‘ইলাল’-এর গভীর ইলম অর্জন করা সম্ভব হয়। আর এটা স্পষ্ট যে, যে কিতাবের উদ্দেশ্যই এই, সেটাকে বাংলা অনুবাদ বা নোটের মাধ্যমে ‘হল’ ও আত্মস্থ করার চিন্তা করাই ভুল। মাসায়েল ও এর প্রসিদ্ধ দলীলাদি জানার জন্যে তো ‘আলফিকহুল হানাফী ফী সাওবিহিল জাদীদ’ ও ‘আলফিকহুল হানাফী ওয়া আদিল্লাতুহু’-এর মত সহজবোধ্য কিতাব রয়েছে। এরপরও যদি আপনি বাংলার সাহায্য নিতে চান তাহলে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত অনুবাদ এবং হেদায়া ব্যাখ্যাগ্রন্থ (তত্ত্বাবধানে : মাওলানা আহমদ মায়মুন, মালিবাগ মাদরাসা) সংগ্রহ করতে পারেন।
শেয়ার লিংক
(ক) আমি গত বছর মীযান কিতাব পড়েছি এবং এবছর নাহবেমীর জামাতে পঞ্জেগাঞ্জ পড়ছি। এরপরও আমি ‘মুফরাদ’, ‘সহী’, ‘গাইরে সহী’, ‘বাব’, ‘তালীল’ ইত্যাদি ঠিক মত বলতে পারছি না। এখন আমি খুব চিন্তিত যে, আমি কীভাবে উপরের জামাতের কিতাব বুঝব। এ মর্মে আমাকে সুপরামর্শ দিয়ে আমার দুশ্চিন্তা দূর করবেন বলে আশা করি।
(ক) আপনার পেরেশানি প্রশংসার দাবি রাখে। ইনশাআল্লাহ এই পেরেশানিই আপনার উন্নতির পক্ষে সহায়ক হবে। মীযানের বছর চলে গেছে। এখন পাঞ্জেগাঞ্জের বছরকে সুবর্ণ সুযোগ মনে করুন। পাঞ্জেগাঞ্জের ফারসীপাঠ যদি শব্দে শব্দে ‘হল’ করা কঠিন হয় তাহলে এ উদ্দেশ্যে অধিক কষ্ট করার দরকার নেই। কেননা এর তেমন বিশেষ গুরুত্ব নেই। মূল বিষয় হল কায়েদাগুলো বোঝা এবং সেগুলো ‘ইজরা’ করা। এব্যাপারে আপনি উস্তাযের সহযোগিতা ও নির্দেশনায় প্রতিটি কায়েদা ভালোভাবে বুঝুন, এগুলো মাতৃভাষায় আপনার খাতায় নোট করুন; একাধিক উদাহরণের সঙ্গে বারবার তাকরার করে দেমাগে পাকাপোক্তভাবে বসিয়ে নিন। এরপর যেখানেই কোনো আরবী শব্দ বা বাক্যে মুখস্থকৃত কায়েদাসমূহের ‘ইজরা’ করার সুযোগ পাওয়া যাবে সেখানেই ইজরা করুন। নিজ শ্রেণীর ‘ইনশা’র কিতাব, আরবী কিতাব ও অন্যান্য কিতাবসমূহের আরবী বাক্যাবলিতে সেসব কায়েদার ইজরা করুন। কুরআনে কারীম তেলাওয়াতের সময় পঠিত কায়েদাসংশ্লিষ্ট কোনো শব্দ এলে তাতেও ইজরা করুন। ছুটির সময়গুলোতে এবং দৈনিক দরসের বাইরের সময়গুলোতে স্বতন্ত্রভাবে নাহ্ব ও সরফের কায়েদার ইজরার উদ্দেশ্যেই মুখস্থ বা দেখে একবার কুরআন তেলাওয়াত করুন; যদিও তা ১৫/২০ মিনিটের জন্যই হোক। এভাবে কায়েদাগুলো বোঝা, মুখস্থ করা এবং অধিক তামরীন ও অনুশীলনের মাধ্যমে সেগুলো ইজরা করা- এই তিন কাজই আপনার সমস্যা সমাধানের জন্যে যথেষ্ট; বরং ওই সমস্যার সমাধানের একমাত্র রাস্তা এটাই। আল্লাহ তাআলা আপনাকে এবং সকল তালেবে ইলমকে এর তাওফীক দান করুন, আমীন।
আপনার দ্বিতীয় প্রশ্নটি ফিকহী মাসআলা সংক্রান্ত। তাই সেটি প্রশ্নোত্তর বিভাগে পাঠিয়ে দিয়েছি। ইনশাআল্লাহ আগামী কোনো সংখ্যায় ওই বিভাগে সেটির জবাব পেয়ে যাবেন।
শেয়ার লিংক
আমি একজন দুর্বল তালেবে ইলম। এবার আরবী ৫ম শ্রেণীতে অধ্যয়ন করছি। এ শ্রেণীতে উসূলে ফিকহের প্রথম কিতাব উসূলুশ শাশী পড়ানো হয়। এই কিতাব ভালো করে বোঝার জন্য কী শরাহ দেখলে উপকার হবে এবং এই ফনের উপর পারদশীর্ হওয়ার জন্য কী করতে পারি? একটু পথনির্দেশনা দিলে আমার মত অনেক ছাত্র ভাইয়ের উপকার হত।
আরবী শরাহ বুঝতে যদি তেমন কষ্ট না হয় তবে ‘ফুসূলুল হাওয়াশী’ পড়তে পারেন। এই শাস্ত্রে দক্ষতা অর্জন করতে হলে প্রথম দফায় আপনাকে নেসাবভুক্ত কিতাবটি ভালোভাবে বুঝে পড়তে হবে। ১নং প্রশ্নের উত্তরও দেখে নিতে পারেন।
শেয়ার লিংক
আমি একজন মাঝারি মানের ছাত্র। বর্তমানে আমি মিশকাত জামাতে পড়ি। আমাদের থানায় কোন কওমী মাদ্রাসা নেই এবং আমি ছাড়া এলাকায় কোন কওমী আলেম না থাকায় বিদআতিরা আমাদের সমাজকে বিভ্রান্ত করছে। আমি কওমী মাদরাসায় পড়ার কারণে আমাকে ও আমার আব্বাকে নির্যাতন করে এবং আমাকে আলিয়া মাদরাসায় ভর্তি হওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। এমনকি হত্যার হুমকি পর্যন্ত তারা দিয়েছে। কিন্তু বর্তমান ফিতনার যুগে অন্ধকারে নিমজ্জিত সমাজকে কাক্সিক্ষত মুক্তির পথে আনার জন্য সকল কষ্ট-নির্যাতন সহ্য করে কওমী মাদ্রাসায় পড়ছি এবং ইনশাআল্লাহ মৃত্যু পর্যন্ত এর উপরই কায়েম থাকব। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমার সেই কাক্সিক্ষত আশার পথে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে অনাকাক্সিক্ষত কিছু বিষয়। যথা (ক) কথনের অক্ষমতা। যদি কোন স্থানে ওয়াজ বা বক্তৃতা দিতে কিংবা মানুষকে বুঝাতে যাই তখন অবশ্য বুক কাঁপে না কিন্তু মুখের জড়তার কারণে কথাই বলতে পারি না। অথচ বিদআতিরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বক্তৃতা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। আমি আল্লাহর কাছে বহুবার নফল, ফরজ এবং তাহাজ্জুদের নামায পড়ে কান্নাকাটি করে দুআ করেছি। কিন্তু কোন ফল পাইনি। আমি সবসময় হযরত মূসা আ.-এর দুআ-
رَبِّ اشْرَحْ لِیْ صَدْرِیْ وَ یَسِّرْ لِیْۤ اَمْرِیْ وَ احْلُلْ عُقْدَةً مِّنْ لِّسَانِیْ یَفْقَهُوْا قَوْلِیْ.
পাঠ করি তথাপিও কোন ফল পাইনি। পরিশেষে হতাশ হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে মন চায়; কিন্তু যখনই এই ইচ্ছা জাগ্রত হয় তখনই এই আয়াতটি স্মরণে পড়ে যায়- لَا تَقْنَطُوْا مِنْ رَّحْمَةِ اللّٰهِ (খ) লিখনের অক্ষমতা। জীবনে বহুবার লেখার পিছনে বহু সময় খরচ করেছি। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, অনেক সময় নিজের নামটা পর্যন্ত ভাল করে লিখতে পারি না। এসব কারণে যখনই পড়তে বসি তখনই মনের অজান্তেই বেরিয়ে আসে দু‘ফেঁাটা তপ্ত অশ্রম্ন। এবং ভাবি, কী হবে আমার আলেম হয়ে? কোন দিন ইলমের দরস দিতে পারব না। কারণ মুখের জড়তার কারণে ছাত্ররা তাকরারের সময় আমার কথা বুঝে না। অথচ আমার চেয়ে নিম্নমানের ছাত্ররা খুব সুন্দর করে তাকরার করছে। তাই বলি, আমার মত অযোগ্যের মাদরাসায় পড়ে কী লাভ হবে? এমনকি অনেক সময় পাক্কা ইরাদা হয়ে যায় যে, পড়া বাদ দিয়ে চাকরি করি কিংবা আলিয়া মাদরাসায় ভর্তি হই, যেখানে কথা বলার প্রয়োজন নেই। এর কারণে আমি সবসময় চিন্তিত থাকি। পড়ালেখায় তেমন মন বসে না এবং স্বাস্থ্য খুব ভেঙ্গে গেছে। জনাব আব্দুল মালেক সাহেবের নিকট আমার আকুল আবেদন, আমি এখন কী করব? আমি কি মাদরাসার পড়াশোনা চালিয়ে যাব নাকি... এবং কীভাবে এই ধ্বংসাত্মক বিপদ থেকে মুক্তি পাব সু-পরামর্শ চাই এবং তিনি যেন আমার জন্য বিশেষভাবে তাহাজ্জুদের সময় দুআ করেন। আলকাউসারের সকল পাঠকপাঠিকার নিকটও এই অধম দুআপ্রার্থী। আল্লাহ আপনাদেরকে উত্তম প্রতিদান দান করুন। আমীন।
আপনার হিম্মত প্রশংসনীয়। এই হিম্মতের সঙ্গে হতাশার সংযোগ কীভাবে ঘটতে পারে, এটা আমি বুঝতে পারছি না। আল্লাহ তাআলা আপনাকে হিফাজত করুন এবং আপনার সকল নেক কামনা পূরণ করুন।
হাদীস শরীফে দুআর ব্যাপারে ‘ইসতিজাল’ নিষেধ করা হয়েছে। ‘ইসতিজাল’-এর ব্যাখ্যা হাদীস শরীফেই এভাবে করা হয়েছে যে, দুআ করে একথা বলা, আমি দুআ করেছি কিন্তু তা কবুল হয়নি। আশা করি আপনি সালাতুল হাজত এবং رَبِّ اشْرَحْ لِیْ এর আমল জারি রাখবেন। মাঝে মাঝে يا مبينবারবার পড়বেন। পাশাপাশি কোন বুযুর্গের নিকট থেকে কোন আমল নিয়ে তা আদায় করবেন এবং কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। ইনশাআল্লাহ আপনার অসুবিধা দূর হয়ে যাবে।
আপনি যথারীতি পড়াশোনা জারি রাখুন। লেখা ও বক্তৃতা চর্চাও বাদ দিবেন না। আর সামনের জীবনে আপনি কীভাবে দরস দিবেন এই বিষয়ে এখন একদম পেরেশান না হয়ে وَ افَوِّضُ اَمْرِیْۤ اِلَی اللّٰهِ اِنَّ اللّٰهَ بَصِیْرٌۢ بِالْعِبَادِ বলে বিষয়টি আল্লাহর সোপর্দ করে দিন। সকালসন্ধ্যায় নিম্নোক্ত দুআটি পড়বেন।
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الْعَجْزِ وَالْكَسَلِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الْجُبْنِ وَالْبُخْلِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ غَلَبَةِ الدَّيْنِ، وَقَهْرِ الرِّجَالِ.
আপনি দুআ করতে বলেছেন, আমি আপনার জন্য দুআ করছি এবং ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতেও দুআ করতে থাকব। আপনিও আমাকে ও আমার সঙ্গীগণকে দুআতে শামিল করবেন।
শেয়ার লিংক
আমি হিদায়াতুন্নাহব-এর একজন ছাত্র। আমরা সাধারণত যে বানানে আরবী লিখি তা শুদ্ধ ও رسم الخط অনুযায়ী হওয়া স্বত্ত্বেও কুরআনের লেখার নিয়মের সাথে মেলে না কেন জানতে চাই।
অনেকগুলো কারণ ও মাসলাহাতে কুরআনে কারীমের ‘রাসমুল খাত’ বা লিখনপদ্ধতি المصحف الإمام-এর মত রাখা জরুরি। এর উপরই সাহাবায়ে কেরামের যুগ থেকে আজ পর্যন্ত মুসলিম উম্মাহর তাআমুল বা কর্মধারা বিদ্যমান রয়েছে। এই লিখনপদ্ধতিতে যে কোন ধরনের পরিবর্তনে অনেক সমস্যা রয়েছে। তাই একে অপরিবর্তিত রাখাই সর্বস্বীকৃত বিষয়।
অন্যদিকে সাধারণ লেখালেখিতে নিয়মনীতি সর্বযুগে অভিন্ন রাখার কোন দ্বীনী প্রয়োজনও নেই, দুনিয়াবী উপকারিতাও নেই। তাই প্রতি যুগেই সময়ের রুচি অনুযায়ী সহজতার লক্ষ্যে তাতে পরিবর্তন হতে পারে এবং হয়েছে।
শেয়ার লিংক
মুহতারাম, আমি কাফিয়া জামাতের একজন ছাত্র। আমার সমস্যাটি হল, আমি আরবীতে ধারাবাহিকভাবে কথা বলতে পারি না। আমি কী করলে আরবীতে অনর্গল কথা বলতে পারব, এ বিষয়ে আমাকে পথ-নির্দেশনা দিলে কৃতজ্ঞ হব।
এ প্রসঙ্গে আমি আলকাউসার সফর ’২৬ হি. পৃ. ৩৭, রবিউস সানী ’২৬ হি. পৃ. ৩৮, সফর ’২৭ হি. পৃ. ৪১ -এ সংখ্যাগুলোতে বিভিন্ন আঙ্গিকে বারবার লিখেছি। আপনি যদি সেই আলোচনাগুলো পড়ে নেন তাহলে ইনশাআল্লাহ আপনার উত্তর পেয়ে যাবেন। এরপরও কোন বিষয় জানার থাকলে আমাকে লিখবেন।
শেয়ার লিংক