রায়হান বিন সারোয়ার - বাঞ্ছারামপুর, বি. বাড়িয়া
৬৭০৩. প্রশ্ন
রমযানে আমি একদিন সাহরীর সময় ঘুম থেকে উঠে ডাইনিং রুমের ঘড়ি দেখে সাহরী করা শুরু করি। এবং শেষ সময় পর্যন্ত সাহরী করি। খাবার শেষে মোবাইলে সময় দেখে বুঝতে পারি যে, সাহরীর সময় দশ মিনিট আগেই শেষ হয়ে গেছে। আর আমি ডাইনিং রুমের যে ঘড়িটি দেখে সাহরী করেছি, সেটি দশ মিনিট স্লো ছিল। অর্থাৎ আমার সাহরী গ্রহণ ফজরের ওয়াক্ত হওয়ার পর হয়েছে। ফলে রোযা ভেঙে গেছে জেনে দিনের বেলায় আড়ালে পানাহারও করেছি।
হুজুরের কাছে জানতে চাই, এক্ষেত্রে সাহরীর সময় শেষ হওয়ার পর ওয়াক্ত আছে মনে করে খাওয়ার কারণে কি আমার ওপর কাফ্ফারা আবশ্যক হবে? এক্ষেত্রে রোযা ভেঙে গেছে মনে করে দিনের বেলায় পানাহার করাও কি ঠিক হয়েছে?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ওপর কাফ্ফারা ওয়াজিব হয়নি; বরং ঐ দিনের রোযাটি শুধু কাযা করে নিলেই হবে। কেননা কাফ্ফারা ওয়াজিব হয় সাহরীর সময় শেষ হওয়ার পর জেনে বুঝে ইচ্ছাকৃতভাবে রোযা ভেঙে ফেললে। কোনো বিভ্রান্তির কারণে সাহরীর সময় আছে মনে করে পানাহার করলে কাফ্ফারা ওয়াজিব হয় না। তবে এক্ষেত্রে সুবহে সাদিকের পর পানাহারের কারণে আপনার রোযাটি সহীহ না হলেও এরপর দিনের বেলা পানাহার করা ঠিক হয়নি। আপনার জন্য রোযাদারের ন্যায় পূর্ণ দিন পানাহার থেকে বিরত থাকা
আবশ্যক ছিল।
মাকহুল রাহ. বলেন–
سُئِلَ أَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ عَنْ رَجُلٍ تَسَحَّرَ، وَهُوَ يَرَى أَنَّ عَلَيْهِ لَيْلًا، وَقَدْ طَلَعَ الْفَجْرُ، قَالَ: إِنْ كَانَ شَهْرُ رَمَضَانَ صَامَهُ، وَقَضَى يَوْمًا مَكَانَهُ.
কোনো ব্যক্তি রাত বাকি আছে মনে করে সুবহে সাদিকের পর পানাহার করেছে– তার ব্যাপারে আবু সাঈদ খুদরী রা.-কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, যদি রমযান মাসে হয়ে থাকে, তাহলে বাকি দিন রোযা অবস্থায় থাকবে। আর এর পরিবর্তে একদিন রোযা কাযা করে নেবে। (সুনানে বাইহাকী ৪/২১৬)
সাঈদ ইবনে জুবাইর রাহ. বলেন–
إذَا أَكَلَ بَعْدَ طُلُوعِ الْفَجْرِ مَضَى عَلَى صِيَامِهِ، وَقَضَى يَوْمًا مَكَانَهُ.
যদি কেউ সাহরীর সময় আছে মনে করে সুবহে সাদিকের পর পানাহার করে, তাহলে সে ঐ দিন রোযা অবস্থায় কাটাবে এবং এর পরিবর্তে এক দিনের রোযা কাযা করবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৯১৩৪)
* كتاب >الأصل< ২/১৪৫ : قلت: أرأيت رجلا تسحر وهو لا يعلم بطلوع الفجر وقد طلع الفجر، ثم علم بعد ذلك أنه كان أكل والفجر طالع، وذلك في رمضان؟
قال: يتم صوم يومه ذلك، وعليه قضاؤه، ولا كفارة عليه.
قلت: فلم ألقيت عنه الكفارة؟ قال: لأنه أكل وهو لا يعلم بطلوع الفجر.
–শরহু মুখতাসারিত তাহাবী, জাস্সাস ২/৪৩১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৫৬; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৬২; আলবাহরুর রায়েক ২/২৮৯; মাজমাউল আনহুর ১/৩৫৭