রমযান ১৪৪৬ || মার্চ ২০২৫

আফজাল হোসাইন - কিশোরগঞ্জ

৬৬৭৫. প্রশ্ন

আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব তারাবীর নামাযের আগে সিজদায়ে তিলাওয়াতের কথা এলান করতে ভুলে গেছেন। তাই সিজদার আয়াত পড়েই রুকুতে চলে গেছেন এবং রুকুতেই সিজদায়ে তিলাওয়াতের নিয়ত করেছেন। এরপর স্বাভাবিক নিয়মে রুকু-সিজদা ইত্যাদি আদায় করে নামায শেষ করেছেন। বিষয়টি মুক্তাদীদের জানা ছিল না।

জানার বিষয় হল, তারা যেহেতু ইমামের সঙ্গে রুকু করেছে, তাই এর দ্বারাই কি তাদের সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় হয়েছে, নাকি তাদের জন্যও রুকুতে সিজদায়ে তিলাওয়াতের নিয়ত করা জরুরি ছিল?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ইমাম-মুক্তাদী সকলের নামায ও সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় হয়ে গেছে।

উল্লেখ্য যে, উত্তম পদ্ধতি হচ্ছে, প্রতিটি সিজদার আয়াতের জন্য পৃথকভাবে সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় করে নেওয়া। আগে ঘোষণা না দিলে সিজদা করা যাবে না এমন কথা তো নয়। সাধারণ মানুষের বুঝতে সমস্যা হবে মনে হলে ইমাম সিজদায় যাওয়ার জন্য লম্বা তাকবীর বলতে পারেন।

আর ইমাম সিজদার আয়াত পড়ার পর সাথে সাথেই কিংবা সর্বোচ্চ দুই আয়াত পড়ার পরই যদি রুকুতে চলে যান, তাহলে কোনো নিয়ত ছাড়াই ঐ রাকাতের সিজদা দ্বারা ইমাম-মুক্তাদী সকলের সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় হয়ে যায়।

অবশ্য এক্ষেত্রে ইমাম যদি রুকুতেই সিজদা আদায়ের নিয়ত করে নেন, কিন্তু মুক্তাদী নিয়ত না করে, সেক্ষেত্রে ঐ মুক্তাদীর সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় হবে কি না এ বিষয়ে ফকীহগণ থেকে সিজদা আদায় হয়ে যাওয়া ও আদায় না হওয়া, উভয় মত বর্ণিত রয়েছে। তাছাড়া অনেক ফকীহের মতে এক্ষেত্রে নিয়ত করা ছাড়াই রুকু করার দ্বারা (ইমাম, মুক্তাদী, একাকী নামায আদায়কারী সকলের) সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় হয়ে যায়।

তাই ইমামের জন্য এক্ষেত্রে রুকুতে সিজদায়ে তিলাওয়াতের নিয়ত না করাই সহজ ও নিরাপদ পদ্ধতি। যেন সকল ফকীহের মত অনুযায়ী সকলের সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় হয়ে যায়।

* >إعلاء السنن< ৭/২৫৪ : ثم إذا ركع قبل أن يطول القراءة، هل تشترط النية لقيام الركوع مقام سجدة التلاوة؟ فالذي رجحه صاحب >البدائع< عدم اشتراطها، قال: ومن مشايخنا من قال : يحتاج ههنا إلى النية، ثم ذكر دليله ورد عليه، كما فيه. والله تعالى أعلم.

>حاشية الطحطاوي على الدر< ১/৩২৬ : (ولو نواها في ركوعه) أي عقيب التلاوة (لم يجزه) أي لم ينب سجود المؤتم عنها، ... وقيل: يجزيه، كما في القستاني.

বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৪৬; জামিউর রুমুয ১/২৪২; আলবাহরুর রায়েক ২/১২৩; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৬০; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৫৯২; মুখতাসারু গুনইয়াতুল মুতামাল্লী, পৃ. ৩৭১, ৩৭৩; আদ্দুররুল মুখতার ১/১১২

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন