শাবান ১৪৪৬ || ফেব্রুয়ারি ২০২৫

রুবেল মিয়া - নড়াইল

৬৬৬৪. প্রশ্ন

এক ব্যক্তিকে তার বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজন তাদের জন্য কুরবানীর পশু (গরু) কিনে দিতে বলে। সে বাজার থেকে গরু কিনে তাদের কাছে পৌঁছে দেয়। তবে সে এক্ষেত্রে কিছু লাভ করে। যেমন, এক লাখ টাকা দিয়ে গরু কিনলে সে তাদের কাছ থেকে এক লাখ বিশ হাজার টাকা নেয়। এক্ষেত্রে সে তাদের কাছে গরুটি বিক্রি করছে এমন নিয়ত করে; কিন্তু তারা বিষয়টির কিছুই জানে না। তার জন্য কি এভাবে লাভ নেওয়া বৈধ হবে?

উত্তর

না, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির জন্য লাভের নামে উক্ত টাকা নেওয়া বৈধ হবে না। কারণ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে লোকটি ক্রেতাদের পক্ষ থেকে ক্রয়-প্রতিনিধি মাত্র; বিক্রেতা নয়। অর্থদাতারা তাকে কেবল পশু ক্রয়ের দায়িত্ব প্রদান করেছে। সুতরাং মাঝখান থেকে তার জন্য ক্রেতা ও বিক্রেতা সেজে লাভ খাওয়ার কোনোই সুযোগ নেই। এতে অন্যায়ভাবে অন্যের সম্পদ ভোগ করার গুনাহ হবে। ইতিপূর্বে এ পন্থায় লাভের নামে টাকা নেওয়া হলে তা মালিকদেরকে ফেরত দেওয়া জরুরি।

উল্লেখ্য, ক্রয়-প্রতিনিধির জন্য এভাবে বিক্রেতা সেজে লাভ গ্রহণ নাজায়েয হলেও সে অবশ্য এ কাজটি পারিশ্রমিক গ্রহণের শর্তে করতে পারে। অর্থাৎ দায়িত্ব নেওয়ার সময়ই সে ক্রেতাদেরকে বলে দেবে যে, আমাকে এ কাজের জন্য এ পরিমাণ পারিশ্রমিক দিতে হবে। সেক্ষেত্রে কাজটি সম্পাদনের বিনিময়ে যে পারিশ্রমিকের চুক্তি হবে, কাজ শেষে চুক্তি অনুযায়ী তা সে পাবে। এছাড়া গরু ক্রয় করতে গিয়ে যাতায়াত ভাড়া ও চা-নাস্তার ন্যায়সংগত খরচও ক্রয়-প্রতিনিধি নিতে পারবে।

আর যদি সে তাদের কাছে গরু বিক্রি করে লাভ গ্রহণ করতে চায়, তাহলে সে তাদের পক্ষ থেকে গরু কেনার দায়িত্ব গ্রহণ না করে তাদেরকে স্পষ্ট বলে দিতে হবে যে, আমিই গরু ক্রয়-বিক্রয় করে থাকি। তাই আমি আপনাদের জন্য গরু ক্রয় না করে বরং আমি নিজেই আপনাদের কাছে কাক্সিক্ষত গরু বিক্রি করব। এভাবে যদি সে তাদেরকে পরিষ্কার বলে নেয়, তাহলে এরপর সে গরু ক্রয় করে চুক্তি ও পছন্দ অনুযায়ী তাদের কাছে বিক্রি করতে পারবে। কিন্তু সে নিজে তাদের কাছে গরু বিক্রি করছে এ কথা তাদেরকে কিছুই না বলে একতরফাভাবে নিজে নিজে বিক্রেতা সেজে গোপনে লাভ নেওয়া কিছুতেই বৈধ হবে না।

* >المبسوط< للسرخسي ১৯/৩৪ : فإن الوكيل بشراء شيء بعينه لو لم يضف العقد إلى الموكل؛ يقع للموكل، بخلاف النكاح، حتى إذا أضافه إلى نفسه كان العقد له دون الموكل، فعرفنا أنه معبر عنه.

আলমুহীতুর রাযাবী ৮/১৩৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/৫৬৭; দুরারুল হুক্কাম শরহু মাজাল্লাতিল আহকাম ৩/৬০৩

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন