জুমাদাল আখিরাহ ১৪৪৬ || ডিসেম্বর ২০২৪

নূর হোসাইন - যশোর

৬৬২৯. প্রশ্ন

আমি এক প্রতিষ্ঠানের দারোয়ান। প্রতিষ্ঠানের এলাকাতেই আমার বাড়ি। প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ গাছের আম-কাঁঠাল এলাকার লোকদের কাছে বিক্রি করার জন্য আমাকে দেয়। তারা একটা দাম নির্দিষ্ট করে দিয়ে বলে যে, এগুলো বিক্রি করে আমাদের এত টাকা দিতে হবে। এর বেশি যে দামে বিক্রি করতে পারবে, সেটা তোমার।

জানার বিষয় হল, কর্তৃপক্ষ এভাবে বলার পর আম-কাঁঠাল বিক্রি করে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া কি আমার জন্য বৈধ হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিটি শরীয়তের পরিভাষায় এক ধরনের ইজারা। আর ইসলামের ইজারা নীতির এটা কোনো সহীহ পন্থা নয়। একে তো এতে পারিশ্রমিক সুনির্ধারিত হয় না। লোকটি কত টাকায় বিক্রি করতে পারবে তা আগে থেকে জানা যায় না। এছাড়াও তাতে আরো সমস্যা রয়েছে। তা হল, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ধার্যকৃত বিক্রয়মূল্যের বেশিতে বিক্রি করতে না পারলে অথবা আরো কমে বিক্রি হলে বিক্রয়কারীর কোনো পারিশ্রমিকই থাকছে না। এক্ষেত্রে তার শ্রম বিফলে যাবে। অপরদিকে বিক্রয়কারী অধিক লাভের আশায় চড়া দামে পণ্য বিক্রির চেষ্টা করবে। ফলে ক্রেতাসাধারণ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এ পদ্ধতি পরিহার করা উচিত।

ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. থেকে বর্ণিত

أَنَّهُ كَرِهَ أَنْ يَقُولَ: بِعْ هَذا بِكَذَا فَمَا زَادَ فَلَكَ.

অর্থাৎ কেউ কাউকে বলল, এত টাকায় আমাকে এটি বিক্রি করে দাও। এর বেশি যততে বিক্রি করতে পারবে তা তোমার এ ধরনের চুক্তি করা তিনি অপছন্দ করতেন। (মুসান্নাফে আব্দুর রায্যাক, বর্ণনা ১৫০২১)

এক্ষেত্রে উৎকৃষ্ট পদ্ধতি হল, পণ্য বিক্রয়কারীর জন্য তার কাজের বিনিময়স্বরূপ পারিশ্রমিক ধার্য করে দেবে। যেমন, আম-কাঁঠাল দিয়ে এ কথা বলা যে, এগুলো সব তুমি বিক্রি করে দেবে। তোমাকে ৫০০ টাকা দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে শ্রমদাতা তার শ্রমের বিনিময় পেয়ে যাবে। আর বিক্রিত মূল্যের সমুদয় অর্থ মালিকের হবে।

* >المحيط البرهاني< ১১/২১৬: دفع إلى رجل ثوبا ليبيعه على أن ما زاد على كذا فهو له، قال: هذا على جهة الإجارة، وهذا إجارة فاسدة.

মুখতারাতুন নাওয়াযিল ৩/৩৮৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৩/১২৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৪১০; শরহুল মাজাল্লাহ, আতাসী ২/৬৭৭

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন