খাব্বাব আহমদ - মাহতাবপুর, সিলেট
৬৬১৩. প্রশ্ন
গত কয়েকদিন আগে আমাদের সবার ফজরের নামায কাযা হয়ে যায়। পরে আমরা জামাতের সাথে ফজরের নামাযের কাযা আদায় করি। এবং নামাযে কেরাত জোরে পড়ি। পরে মনের মধ্যে খটকা লাগল যে, নামাযে কেরাত জোরে পড়া ঠিক হল কি না? বিষয়টির সঠিক সমাধান জানাবেন।
আরেকটি বিষয়, কাযা নামাযের নিয়ত কীভাবে করতে হয়। কাযা শব্দ উল্লেখ না করে নামায পড়ে নিলে নামায আদায় হয়ে যাবে কি না?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সশব্দে কেরাত পড়া নিয়মসম্মতই হয়েছে। কেননা ফজর, মাগরিব ও এশার নামাযের কাযা জামাতে আদায় করলে কেরাত শব্দ করে পড়াই আবশ্যক। তা দিনের বেলায় আদায় করলেও কেরাত শব্দ করেই পড়তে হবে। হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে—
عَنْ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: عَرَّسَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْلَةً فَقَالَ: مَنْ يَحْرُسُنَا اللَّيْلَةَ؟ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ شَابٌّ: أَنَا يَا رَسُولَ اللهِ أَحْرُسُكُمْ، فَحَرَسَهُمْ حَتَّى إِذَا كَانَ مَعَ الصُّبْحِ غَلَبَتْهُ عَيْنُهُ، فَمَا اسْتَيْقَظُوا إِلَّا بِحَرِّ الشَّمْسِ، فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَتَوَضَّأَ وَتَوَضَّأَ أَصْحَابُهُ، وَأَمَرَ الْمُؤَذِّنَ فَأَذَّنَ، فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ أُقِيمَتِ الصَّلَاةُ فَصَلَّى الْفَجْرَ بِأَصْحَابِهِ، وَجَهَرَ فِيهَا بِالْقِرَاءَةِ كَمَا كَانَ يُصَلِّي بِهَا فِي وَقْتِهَا.
قَالَ مُحَمَّدٌ: وَبِهِ نَأْخُذُ، وَهُوَ قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ رحمه الله تعالى.
অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও কয়েকজন সাহাবী সফরে ছিলেন। অধিক রাত্রে ঘুমাতে যাওয়ায় তাঁদের ঘুম থেকে জাগতে দেরি হয়ে যায়। ততক্ষণে সূর্যোদয় হয়ে যায়। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে জামাতের সঙ্গে ফজরের নামায কাযা করেন। এবং অন্য সময়ের মতো শব্দ করে কেরাত পড়েন। (কিতাবুল আছার, ইমাম মুহাম্মাদ, বর্ণনা ১৬৮)
আর নামাযের নিয়ত মুখে উচ্চারণ করাই জরুরি নয়। কেননা নিয়ত হচ্ছে অন্তরের সংকল্পের নাম। সুতরাং কোন্ নামায পড়ছে, বর্তমান ওয়াক্তিয়া নামায, না পেছনের অনাদায়ী নামায— তা মনের মধ্যে নির্ধারিত থাকলেই নামায আদায় হয়ে যায়। উপরন্তু কেউ যদি মুখে উচ্চারণ করতে চায়, তাহলেও কাযা শব্দ উল্লেখ করা জরুরি নয়; বরং আমি অমুক দিনের নামায/অনাদায়ী নামায/আমার যিম্মায় থেকে যাওয়া নামায আদায় করছি— এভাবে বললেও হবে।
* >المبسوط< للسرخسي ১/১০ : والتكلم بالنية لا معتبر به، فإن فعله ليجتمع عزيمة قلبه فهو حسن.
* >جواهر الفتاوى< للكرماني، ص ১০৩ : ولا عبرة بنية الأداء والقضاء، فإنه إذا كان في وقتها يكون أداء، وإن نوى القضاء، وإن لم يكن في وقتها يكون قضاء، وإن نوى الأداء.
—আলজামিউস সাগীর, পৃ. ৭২; ফাতহুল কাদীর ১/২৮৫; আলমুহীতুর রাযাবী ১/২৩৩, ২২০; আযযিয়াউল মা‘নাবী ২/১১২, ১১৪; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/২৬২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৬৬, ১২১