রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ || সেপ্টেম্বর ২০২৪

সিয়াম - মোমেনশাহী

৬৫৬৮. প্রশ্ন

হুজুর, আমি বিদেশে চাকরি করি। কয়েক মাস আগের কথা। একদিন আমার এক দূর সম্পর্কের চাচা আমার কাছে ফোন করে বলেন, তোমাদের বাড়ির পাশের জায়গাটা মাত্র বিশ লাখ টাকায় বিক্রি হবে। রেজিস্ট্রি করতে খরচ পড়বে দেড় লাখ টাকা। তুমি কিনলে বল, আমি তোমার জন্য কিনে রেজিস্ট্রি করে রাখি। আমি বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে জায়গাটা কেনার জন্য রাজি হয়ে যাই এবং আমার জন্য ঐ জায়গাটি তাকে কিনতে বলি। রেজিস্ট্রি খরচসহ ২১ লাখ ৫০ হাজার টাকা তার ব্যাংক এ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেই। কিন্তু আমার চাচা ঐ বিশ লাখ টাকা দিয়ে জায়গাটা কিনে নিজের ছোট ছেলের নামে রেজিস্ট্রি করে ফেলেন। সেখানে নিজের ছেলেকে পরিবারসহ থাকার জন্য একটি টিনশেড ঘর করে দেন। বিষয়টা জানার পর আমি আমার চাচাকে ফোন করে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমার সাথে কথা-বার্তা বলার পর নাকি তার ছোট ছেলের কথা চিন্তা করে জায়গাটা কেনার প্রতি তার আগ্রহ হয়েছে। তাই তিনি জায়গাটা কিনে তার ছোট ছেলের নামে রেজিস্ট্রি করে ফেলেছেন। এখন তিনি চাচ্ছেন, আমার টাকা আমাকে ফেরত দিয়ে দায়মুক্ত হয়ে যেতে; কিন্তু আমি বিষয়টা মেনে নিতে পারছি না। এবং তিনিও জমিটি ছাড়তে চাচ্ছেন না। তবে ঝগড়া-বিবাদ এড়ানোর জন্য আমরা এ বিষয়ে একমত হয়েছি যে, কোনো মুফতী সাহেবের কাছে ফতোয়া চাওয়া হবে। তিনি যে ফতোয়া দেবেন, দুই পক্ষ তা মেনে নেবে। এখন মুফতী সাহেবের কাছে আবেদন হল, এ বিষয়ে সঠিক ফতোয়া দিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যেহেতু নির্দিষ্ট ঐ জমিটি আপনার নামে কেনার জন্য আপনার চাচাকে ক্রয়প্রতিনিধি বানিয়েছিলেন। উপরন্তু তিনি উক্ত জমিটি আপনার জন্য কিনে রেজিস্ট্রি করার কথা বলে আপনার থেকে টাকাও নিয়েছেন, তাই পরবর্তীতে জায়গাটি কিনে তার ছেলের নামে রেজিস্ট্রি করে দেওয়া সম্পূর্ণ নাজায়েয হয়েছে। তার নামে রেজিস্ট্রি করে দিলেও শরীয়তের দৃষ্টিতে এ জমির মালিক আপনিই। এখন যদি আপনি ঐ জমি তার জন্য ছেড়ে দিতে সম্মত না হন, তাহলে আপনার চাচার কর্তব্য হল, নিজ খরচে আপনার নামে জমিটি রেজিস্ট্রি করে আপনাকে বুঝিয়ে দেওয়া। এক্ষেত্রে উক্ত জমির উপর নির্মিত টিনশেড ঘরটি যদি আপনি নিতে চান, তাহলে তাদের সম্মতিক্রমে এর মূল্য দিয়ে তা আপনি রাখতে পারেন। আর যদি আপনি তা নিতে না চান কিংবা তারা সেটি বিক্রি করতে না চায়, তাহলে তাদেরকে নিজ খরচে সেটি সরিয়ে নিতে হবে।

-কিতাবুল আছল ১১/২৮৫; আলমুহীতুল বুরহানী ১৫/৫৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/১৪০; আদ্দুররুল মুখতার ৫/৫১৭; শরহুল মাজাল্লা, আতাসী ৪/৫২৩ 

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন