সফর ১৪৪৬ || আগস্ট ২০২৪

মুহাম্মাদ জহীরুল ইসলাম - ফেনী

৬৫৩৯. প্রশ্ন

আমার বড় চাচা অনেক সম্পত্তির মালিক। চাচাজানের একজন বন্ধু আছেন, যিনি আর্থিকভাবে অনেক অসচ্ছল, তবে খুবই ভালো মনের মানুষ। চাচাজানের জীবনে তিনি চাচাজানের অনেক উপকার করেছেন। একবার এক ঘটনায় চাচাজান তার ওপর খুশি হয়ে বলেন, ‘আমি ওসিয়ত করছি, আমার মৃত্যুর পর আমার অমুক জমিটি তুমি নেবে।কিন্তু আমার চাচি এবং চাচাতো ভাইয়েরা চাচার এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি। এ নিয়ে চাচাজানের সঙ্গে তাদের কয়েকবার কথা কাটাকাটিও হয়। বিষয়টি জানতে পেরে চাচাজানের সেই বন্ধু চাচাজানকে বলেন, ‘আমার জমি লাগবে না। আমি চাই নাÑ আমার কারণে আপনার ঘরে ঝগড়া-বিবাদ হোক।চাচাজান তখন বলেছিলেন, ‘না, আমি ওসিয়ত করছি, জমিটি তুমি পাবে।

কয়েকদিন আগে চাচাজান ইন্তেকাল করেন। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি নিজ সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। এদিকে চাচার মৃত্যুর পর থেকে চাচার সেই বন্ধু জমিটি নেওয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছেন। অপরদিকে চাচার ওয়ারিশদের দাবি হল, যেহেতু তিনি চাচা জীবিত থাকতেই জমিটি প্রত্যাখান করেছেন, তাই এখন তিনি আর উক্ত জমির হকদার নন।

মুহতারামের নিকট আমাদের জানার বিষয় হল, উক্ত জমির প্রকৃত হকদার এখন কে? চাচার ওয়ারিশরা, নাকি ঐ ব্যক্তি, যার জন্য চাচাজান ওসিয়ত করেছেন?

উত্তর

ওসিয়ত কার্যকর হয় ওসিয়তকারীর মৃত্যুর পর। তাই ওসিয়তকারীর মৃত্যুর পরই কেবল যার জন্য ওসিয়ত করা হয়েছে, তিনি গ্রহণ বা  প্রত্যাখান করার অধিকার রাখেন। এর আগে গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করলেও তা ধর্তব্য হয় না।

অতএব, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার চাচা যার জন্য ওসিয়ত করেছেন, তিনিই জমিটির মূল পাওনাদার। সুতরাং জমিটি পাওয়ার জন্য তার দাবি জানানো সঠিক হয়েছে। সুতরাং মৃতের কাফন-দাফনের খরচ এবং কোনো ঋণ থাকলে তা আদায়ের পর মৃতের ওসিয়তকৃত জমিটি যদি তার অবশিষ্ট সম্পদের এক তৃতীয়াংশ পরিমাণ বা তার কম হয়, তাহলে মৃতের ওসিয়ত অনুযায়ী উক্ত জমি লোকটিকে বুঝিয়ে দেওয়া ওয়ারিশদের ওপর ওয়াজিব।

-কিতাবুল আছল ৫/৫১৭; আলমাবসূত, সারাখসী ২৮/৪৭; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ৫/৩৬৭; মাজমাউল আনহুর ৪/৪২১আদ্দুররুল মুখতার ৬/৬৫৭

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন