মুহিববুল্লাহ - সিরাজগঞ্জ
২২৭২. প্রশ্ন
আমরা আলেমদের নিকট শুনেছি যে, মাগরিবের নামাযে কিসারে মুফাসসাল থেকে পড়া সুন্নত। কিন্তু আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব এর বাইরে থেকে অনেক লম্বা কিরাত পড়েন। মাগরিবে এমন লম্বা কিরাত পড়া কি ঠিক?
উত্তর
ইমামের জন্য মাগরিব নামাযে ছোট কিরাত পড়া হাদীস ও আছার দ্বারা প্রমাণিত। হযরত আবু হুরাইরা রা. বলেন, ‘রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাগরিব নামাযে কিসারে
মুফাসসাল পড়তেন।’ (শরহু মাআনিল আছার ১/১৫৭; ইলাউস সুনান ৪/৩৫)
অন্য রেওয়ায়েতে হযরত উমর রা. আবু মুসা আশআরী রা.কে মাগরিবের নামাযে কিসারে মুফাসসাল থেকে পড়তে বলেছেন। (শরহু মাআনিল আসার ১/১৫৭; ইলাউস সুনান ৪/৩২)
অন্য রেওয়ায়েতে আছে, হযরত আবু আবদুল্লাহ মুনাবিহী রাহ. বলেন, আমি আবু বকর রা.-এর খেলাফতকালে একবার মদীনায় এলাম। তাঁর পিছনে মাগরিব আদায় করলাম। তিনি মাগরিবের প্রথম দুই রাকাতে সূরা ফাতিহা ও কিসারে
মুফাসসাল থেকে একটি করে সূরা পড়লেন। (মুয়াত্তা, ইমাম মালেক পৃ. ২৭; ইলাউস সুনান ৪/৩৯)
যাহহাক ইবনে উসমান রাহ. বলেন, আমি উমর ইবনে আবদুল আযীয রাহ.কে মাগরিবে কিসারে মুফাসসাল পড়তে দেখেছি। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৩/২৩৪)
সূরা বাইয়িনাহ থেকে নাস পর্যন্ত সূরাসমূহকে কিসারে মুফাসসাল বলে।
সুতরাং মাগরিব নামাযে কেসারে মুফাসসাল থেকে পড়া উত্তম। অবশ্য রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো কখনো মাগরিব নামাযে সূরা তুর, সূরা মুরসালাত ও এ জাতীয় বড় সূরা পড়েছেন এ কথাও সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। তাই মাঝেমধ্যে কিসারে মুফাসসালের বাইরে এবং কিসারে মুফাসসালের পরিমাণের চেয়ে বেশি পড়লে তা সুন্নতের খেলাফ হবে না। তবে ইমামের উচিত মুফাসসালাতের বাইরে পড়লে মুসল্লীদের অবস্থার প্রতি লক্ষ্য রেখে পড়া এবং কেরাত বেশি লম্বা না করা। হযরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে আছে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কেউ নামাযে ইমামতি করবে তখন সে যেন সংক্ষিপ্ত করে। কারণ তাদের (মুক্তাদীদের) মধ্যে দুর্বল, অসুস্থ ও বৃদ্ধ লোকও থাকে। আর যখন একাকী নামায পড়ে তখন যত ইচ্ছা দীর্ঘ করতে পারে।’ (সহীহ বুখারী ১/৯৭)
তাই সাধারণ অবস্থায় ইমামের জন্য কেরাতের মাসনূন পরিমাণের চেয়ে দীর্ঘ করা উচিত নয়।শরহু মাআনিল আছার ১/৫৭; মুয়াত্তা ইমাম মালেক পৃ. ২৭; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৩/২৩৪; নাসবুর রায়াহ ২/৫; আসসিআয়াহ ২/২৮৪; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫৪১; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৮১; ফাতহুল কাদীর ১/২৯২