যিলহজ্ব ১৪৪৫ || জুন ২০২৪

মাহবুবুর রহমান - শনিরআখড়া, ঢাকা

৬৪৮৮. প্রশ্ন

আমার বন্ধু হাসানের এক মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। একপর্যায়ে তারা পরিচিত চার-পাঁচজন লোক নিয়ে কাজী অফিসে গিয়ে বিবাহ করে ফেলে। বিবাহের সময় মহরের প্রসঙ্গ আসলে মেয়ে বলে মহর লাগবে না। ছেলেটি উত্তরে বলে, বিবাহে মহর ধার্য করতে হয়। তখন মেয়েটি বলে, ঠিক আছে, এক টাকা মহরে বিবাহ হোক। সেভাবে এক টাকা মহরে আকদ হয়।

মুহতারামের কাছে জানার বিষয় হল, এভাবে এক টাকা মহরে কি তাদের বিবাহ সহীহ হয়েছে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তাদের বিবাহ সহীহ হয়ে গেছে। তবে এক টাকা মহর নির্ধারণ করা সহীহ হয়নি। কেননা শরীয়তে মহরের সর্বনিম্ন পরিমাণ হচ্ছে ১০ দিরহাম (৩০.৬১৮ গ্রাম রূপা বা তার মূল্য)। এর কম মহর নির্ধারণ করলে তা গ্রহণযোগ্য নয়। কেউ দশ দিরহামের কম মহর নির্ধারণ করলেও এক্ষেত্রে শরীয়তের পক্ষ থেকে মহর হিসেবে দশ দিরহাম নির্ধারিত হয়ে যায়।

সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে এক টাকা মহরে আকদ হলেও স্বামীর ওপর দশ দিরহাম পরিমাণ মহর আদায় করা আবশ্যক হয়েছে।

উল্লেখ্য, বেগানা নারী-পুরুষের বিবাহ বহির্ভূত প্রেম-ভালবাসার সম্পর্ক সম্পূর্ণ হারাম ও গোনাহের কাজ। তাই বিবাহপূর্ব উক্ত সম্পর্ক গোনাহের ছিল। আল্লাহ তাআলার নিকট এ থেকে তওবা-ইস্তেগফার করা জরুরি।

আরো উল্লেখ্য, বিবাহ জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তা পিতা-মাতার স্বতঃস্ফূর্ত সম্মতি ও দুআ নিয়ে করাই কর্তব্য। এতে দাম্পত্য জীবন সুখকর হবে, ইনশাআল্লাহ। পক্ষান্তরে মুরব্বি ও অভিভাবক উপেক্ষা করে তাদের অমতে নিজে নিজে বিবাহ করে নেওয়া একে তো অন্যায় ও শালীনতা পরিপন্থী কাজ এবং তা নিজের ও পরিবারের জন্য কলঙ্কজনক বিষয়।

দ্বিতীয়ত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, এধরনের দাম্পত্যসম্পর্ক টেকসই ও সুখকর হয় না। তাই পিতা-মাতার বাধ্য সন্তান হিসেবে এহেন পদক্ষেপ ও সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকা জরুরি।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ১৬৬৩১; কিতাবুল আছল ১০/২৩৭; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৬২; আলবাহরুর রায়েক ৩/১৪২; ফাতহুল কাদীর ৩/২০৮; আদ্দুররুল মুখতার ৩/১০২

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন