মুহাম্মাদ আবদুল কাইয়ুম - যাত্রাবাড়ি, ঢাকা
২২৬৬. প্রশ্ন
আমার এক পরিচিতজনের দাদার সম্পত্তি বণ্টন করা হবে। তার পিতা তার দাদার আগেই মারা গেছেন। প্রশ্ন হল, চাচাদের সাথে সেও তার দাদার রেখে যাওয়া সম্পত্তির অংশ পাবে কি না? জনৈক এডভোকেট বলেছেন, অংশীদার হবে। এ ব্যাপারে শরীয়তের মাসআলা কী?
উত্তর
শরীয়তের স্বতঃসিদ্ধ বিধান হল, মৃত্যুর সময় কোনো ছেলে বেঁচে থাকলে নাতী-নাতনী দাদার মীরাছ পায় না। এক্ষেত্রে মৃতের অধিক নিকটবর্তী হওয়ায় পুত্র মীরাছের হকদার হয়। শরীয়তে মীরাছ বণ্টনের মৌলনীতি হল, মৃতের কাছের আত্মীয় থাকাবস্থায় দূরের আত্মীয় মীরাছ পায় না। কুরআন মজীদে আছে-পুরুষের জন্যও সেই সম্পদে অংশ রয়েছে, যা পিতামাতা ও নিকটতম আত্মীয়রা রেখে যায় আর নারীদের জন্যও সেই সম্পদে অংশ রয়েছে, যা পিতামাতা ও নিকটতম আত্মীয়রা রেখে যায়। সে (পরিত্যক্ত) সম্পদ কম হোক বা বেশি। এ অংশ (আল্লাহর তরফ থেকে) নির্ধারিত। (সূরা নিসা : ৭)
আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা.-থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, (মীরাছ বণ্টনের ক্ষেত্রে) তোমরা প্রথমে যাদের অংশ সুনির্ধারিত তাদের অংশ দিয়ে দাও। এরপর অবশিষ্ট সম্পদ মৃতের নিকটতর পুরুষকে দাও। (সহীহ বুখারী, হাদীস : ৬৭৩৫)
উপরোক্ত আয়াত ও হাদীসের স্পষ্ট নির্দেশনা হল, মীরাছ বণ্টন হবে নিকটতর আত্মীয়দের মাঝেই। নিকট আত্মীয় থাকাবস্থায় দূরের আত্মীয় মৃতের সম্পদ পাবে না। এছাড়া বিশিষ্ট সাহাবী হযরত যায়েদ ইবনে ছাবিত রা. যার সম্পর্কে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যায়েদ হল মীরাছের বিষয়ে উম্মতের মাঝে সবচেয়ে অধিক জ্ঞানী। (মুসনাদে আহমদ ৩/১৮৪) তিনি বলেন, দাদার সন্তানরা থাকতে নাতী দাদার মীরাছ পাবে না। (সহীহ বুখারী ২/৯৯৭)
অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রেও নাতী দাদার মীরাছ পাবে না। (শরহু মুখতাসারিত ত হাবী ৪/৯২; আলমুহীতুল বুরহানী ২৩/৩০৭)
প্রকাশ থাকে যে, যদি কোনো ব্যক্তির জীবদ্দশায় তার কোনো ছেলে সন্তানাদি রেখে মারা যায় এবং তারা অসচ্ছল থাকে তাহলে এক্ষেত্রে দাদার উচিত তাদের জন্য সম্পদের কিছু অংশের ওসীয়ত করে যাওয়া। অবশ্য কেউ যদি নিজ কর্তব্যে অবহেলা করে ওসীয়ত না করে যায় তাহলে সেক্ষেত্রে তারা সম্পদের হকদার হবে না।
-তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম ৬/১৪; হামারে আয়েলী মাসাইল পৃ. ২৫