মুহা. ইয়াসীন আরাফাত - মিরপুর, ঢাকা
৬৩৫৯. প্রশ্ন
আমরা নামাযে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-এর তাশাহহুদ পড়ে থাকি। এবং আমরা মাদরাসার ছাত্ররা কিতাবে আরো কয়েকজন সাহাবীর তাশাহহুদ পড়েছি। তো অন্য তাশাহহুদগুলো কি আমরা নামাযে মাঝে মাঝে ইচ্ছা করলে পড়তে পারব?
উত্তর
হাদীস-আসারে বিশুদ্ধসূত্রে তাশাহহুদের একাধিক পাঠ বর্ণিত হয়েছে। নামাযে সেগুলোর যেকোনোটিই পড়া যাবে। এতে অসুবিধা নেই, নামাযেরও কোনো ক্ষতি হবে না। তবে অধিকাংশ সাহাবী ও তাবেয়ী আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-এর সূত্রে বর্ণিত প্রসিদ্ধ তাশাহহুদটিই নামাযে পড়তেন। ইমাম তিরমিযী রাহ. তার সুনান গ্রন্থে উক্ত তাশাহহুদটি উল্লেখ করার পর বলেন―
حديث ابن مسعود قد روي عنه من غير وجه. وهو أصح حديث عن النبي صلى الله عليه وسلم في التشهد. والعمل عليه عند أكثر أهل العلم من أصحاب النبي صلى الله عليه وسلم، ومن بعدهم من التابعين.
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বর্ণিত এই হাদীসটি তাঁর থেকে একাধিক সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। তাশাহহুদ বিষয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত হাদীসসমূহের মধ্যে এটি সর্বাধিক সহীহ। অধিকাংশ সাহাবী ও পরবর্তী যুগের তাবেয়ী আলেমগণ এই হাদীস অনুসারেই আমল করেছেন। (জামে তিরমিযী ১/৩৭৬)
এ কারণেই হানাফী ফকীহগণ আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-এর সূত্রে বর্ণিত তাশাহহুদ পড়া উত্তম বলেছেন। ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান রাহ. ‘মুআত্তা’-এ বলেছেন―
التشهد الذي ذكر كله حسن، وليس يشبه تشهد ابن مسعود، وعندنا تشهده لأنه رواه عن رسول الله صلى الله عليه وسلم، وعليه العامة عندنا.
অর্থ : উল্লিখিত সব তাশাহহুদই সহীহ বটে, কিন্তু সেগুলো আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-এর তাশাহহুদের মতো নয়। আমাদের কাছে তার তাশাহহুদই সবচেয়ে পছন্দনীয়। কেননা এই তাশাহহুদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বর্ণনা করেছেন। এবং এর ওপরই অধিকাংশের আমল চলমান। (মুআত্তা মুহাম্মাদ, পৃ. ১৭২)
―কিতাবুল হুজ্জাহ আলা আহলিল মাদীনাহ ১/৯৬; আততালীকুল মুমাজ্জাদ ১/৪৭২; মাজমাউল আনহুর ১/১৫১; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃ. ১৫৫