মুহাম্মাদ শাব্বির আহমদ - লক্ষ্মীপুর
৬২১৬. প্রশ্ন
আমি একটি গাড়ী ক্রয় করি এবং ভবিষ্যতে গাড়ীর সমস্যার কথা ভেবে কোম্পানির সাথে ইন্সুরেন্স করি। অর্থাৎ এই মর্মে চুক্তিবদ্ধ হই যে, যদি আমার গাড়ী কোনো এক্সিডেন্ট বা ক্ষতির সম্মুখীন হয়, তাহলে তার ক্ষতিপূরণ কোম্পানি বহন করবে এবং এজন্য আমাকে নির্দিষ্টহারে প্রিমিয়াম পরিশোধ করতে হবে। যদি গাড়ীর কোনো সমস্যা না হয় তাহলে আমি জমাকৃত টাকার বিনিময়ে কিছুই ফেরত পাব না।
জানার বিষয় হল, এমন ইন্সুরেন্স সুবিধা গ্রহণ করা জায়েয আছে কি না? দলীলসহ জানালে উপকৃত হতাম।
উত্তর
প্রচলিত ধারার ইন্সুরেন্স শরীয়তের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ হারাম। কেননা রিবা, কিমার ও গরার- এ তিনটিই ইন্সুরেন্সে রয়েছে। যার প্রত্যেকটি ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
يٰۤاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللهَ وَ ذَرُوْا مَا بَقِيَ مِنَ الرِّبٰۤوا اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِيْنَ ، فَاِنْ لَّمْ تَفْعَلُوْا فَاْذَنُوْا بِحَرْبٍ مِّنَ اللهِ وَ رَسُوْلِهٖ.
হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং যা কিছু সুদ কারো কাছে বকেয়া আছে তা ছেড়ে দাও; যদি তোমরা মুমিন হও। যদি তা না কর তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে যুদ্ধের ঘোষণা জেনে নাও। [সূরা বাকারা (২) : ২৭৮-২৭৯]
হাদীস শরীফে এসেছে, জাবের রা. থেকে বর্ণিত-
لَعَنَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ آكِلَ الرِّبَا، وَمُؤْكِلَهُ، وَكَاتِبَهُ، وَشَاهِدَيْهِ، وَقَالَ: هُمْ سَوَاءٌ.
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘রিবা’ তথা সুদ গ্রহীতা, সুদদাতা, সুদী চুক্তির লেখক এবং সুদী লেনদেনের সাক্ষী সবাইকে অভিসম্পাৎ করেছেন এবং বলেছেন, তারা সকলেই সমান। (সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৫৯৮)
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
يٰۤاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْۤا اِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْاَنْصَابُ وَالْاَزْلَامُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطٰنِ فَاجْتَنِبُوْهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ.
হে ঈমানদারগণ! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, পূজার বস্তু ও জুয়ার তীর এসবই অপবিত্র, শয়তানের কাজ। অতএব, এসব থেকে দূরে থাকো। যাতে তোমরা সফলকাম হও। -সূরা মায়েদা (৫) : ৯০
সুতরাং মুসলমানদের ইন্সুরেন্স করা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
তবে যদি কোনো ক্ষেত্রে ইন্সুরেন্স করার আইনি বাধ্যবাধকতা থাকে, তাহলে কোনো নির্ভরযোগ্য আলেম থেকে অথবা কোনো দারুল ইফতায় বিস্তারিত বিষয় জানিয়ে মাসআলা গ্রহণ করবে এবং সে অনুযায়ী আমল করবে।
-মাজাল্লাতু মাজমাইল ফিকহিল ইসলামী, জিদ্দা ২/২/৫৪৫; ফিকহুন নাওয়াযেল ৩/২৬৮; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৩/১৬১