রবিউল আউয়াল ১৪৪৪ || অক্টোবর ২০২২

আবদুল হাকীম - নরসিংদী

৫৮৫২. প্রশ্ন

আমি আমার পরিবারকে না জানিয়ে গোপনে বিবাহ করি। এর কিছুদিন পর আমার বাবা মারা যান। আমার ভাইয়েরা বাবার সম্পত্তি বণ্টনের আগে কোনোভাবে জানতে পারে যে, আমি বিবাহ করেছি। তখন তারা ক্ষুব্ধ হয়ে আমাকে আমার বাবার সম্পত্তি থেকে আমার ভাগ দিতে অস্বীকার করে। আমি তাদেরকে এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা বলে, তুই আমাদেরকে না জানিয়ে কেন বিবাহ করেছিস?

তখন আমি তা অস্বীকার করি এবং বলি আমার কোনো স্ত্রী নেই, আমি অবিবাহিত।

তখন তারা আমাকে বলে, তুই যা বলেছিস তা লিখিত দে, তাহলে আমরা তোকে বাবার সম্পত্তি লিখে দিব।

তখন তারা একটি কাগজে আমাকে দিয়ে লেখায় যে, আমি অবিবাহিত, আমার কোনো স্ত্রী নেই। এবং এর উপর আমাকে দিয়ে দস্তখত করায়। তারপর আমাকে আমার বাবার সম্পদ থেকে আমার মীরাসী সম্পত্তি বুঝিয়ে দেয়।

সম্মানিত মুফতী সাহেবের নিকট আমার জানার বিষয় হল, আমি  তো ঐ কথাগুলো আমার স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার উদ্দেশ্যে বলিনি; বরং তাদের থেকে আমার বাবার সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য বলেছি এবং বলা ও লেখার সময় এমন কিছু আমার উদ্দেশ্যও ছিল না। এর পরও কি আমার স্ত্রী ঐ কথাগুলোর কারণে তালাক হয়ে যাবে?

উত্তর

বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও মিথ্যা বলে নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দেওয়া এবং স্ত্রী নেই বলা গুনাহের কাজ। এজন্য আল্লাহর কাছে খাস দিলে ইস্তেগফার করতে হবে। অবশ্য এভাবে বলা ও লেখার কারণে আপনাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটেনি এবং আপনার স্ত্রীর উপর কোনো তালাকও পতিত হয়নি। আপনাদের বিবাহ যথারীতি বহাল রয়েছে।

উল্লেখ্য, কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার রেখে যাওয়া সম্পত্তিকে মীরাস বলে। মৃত্যুর সাথে সাথে উক্ত সম্পতিতে তার জীবিত ওয়ারিশদের শরীয়তকর্তৃক নির্ধারিত অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। এটা শরীয়তের স্বীকৃত বিধান। তাই শরীয়ত নির্ধারিত কারণ ছাড়া কেউ চাইলেই কোনো ওয়ারিশকে তার প্রাপ্য হক থেকে বাদ দিতে পারে না।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, বর্ণনা ১৮৬৭১; আলমাবসূত, সারাখসী ৬/৮১; আলআজনাস, নাতিফী ১/২৯৫; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৩/৮৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৪৬৮; আদ্দুররুল মুখতার ৩/২৮২

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন