মুহাম্মাদ আমীনুল ইসলাম - নবাবগঞ্জ, ঢাকা
৮৯৬. প্রশ্ন
আমার এক ভাই কিছু দিন আগে ফোনে বিবাহ করেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ফোনে বিবাহ সহীহ হবে কি? ফোনে বিবাহের মাসআলা প্রমাণসহ জানালে উপকৃত হব।
উত্তর
টেলিফোনের মাধ্যমে সংঘটিত আপনার ওই ভাইয়ের বিবাহ সহীহ হয়েছে কি না তা জানতে হলে বিবাহটি কীভাবে হয়েছিল তার বিবরণ জানা জরুরি।
বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য একটি অত্যাবশ্যকীয় শর্ত হল দু’জন সাক্ষীর উপস্থিতি। সাক্ষীদ্বয়কে বিবাহের পুরো প্রক্রিয়াটি (ইজাব-কবুল) বিবাহের মজলিসে উপস্থিত থেকে শুনতে হয়। এ ক্ষেত্রে ছেলে বা ছেলের প্রতিনিধি এবং মেয়ে বা মেয়ের প্রতিনিধির কথা, একই সাক্ষীর একই স্থানে উপস্থিত থেকে শ্রবণ করা আবশ্যক। পাত্র-পাত্রী বা তাদের প্রতিনিধি দুই জায়গায় থেকে সরাসরি টেলিফোনে বিবাহের ইজাব-কবুল করলে বিবাহ সহীহ হয় না। এ ক্ষেত্রে ফোনের স্পিকার খুলে দিলে এবং উভয় প্রান্তে দুইজন করে স্বাক্ষী পাত্র-পাত্রীর কথা শুনলেও বিবাহ সংঘটিত হবে না। এ ধরনের বিবাহ সহীহ তরীকায় সম্পন্ন করতে চাইলে পাত্র বা পাত্রীর কোনো একজন ফোনে কিংবা অন্য কোনোভাবে তার পক্ষ থেকে বিবাহের কার্য সম্পাদনের জন্য কাউকে উকিল বা প্রতিনিধি মনোনিত করবে। অতঃপর উকিল বিবাহের মজলিসে হাজির হয়ে অন্তত দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ স্বাক্ষীর সম্মুখে অপর পক্ষের নিকট ওই ব্যক্তির বিবাহের প্রস্তাব করবে অথবা উপস্থিত পক্ষের প্রস্তাবে ওই ব্যক্তির পক্ষ থেকে কবুল করবে। যেমন আরিফের প্রবাসী ছেলে আব্দুল্লাহ রফিকের মেয়ে খাদিজার সাথে তার বিবাহ সম্পাদনের জন্য শফিকুল ইসলামকে উকিল নিয্ক্তু করবে। অতঃপর উকিল শফিক বিয়ের মজলিসে হাজির হয়ে পাত্রীর নিকট স্বাক্ষীদ্বয়ের সামনে বলবে, আমি এত টাকা মহরানার বিনিময়ে আরিফের ছেলে আব্দুল্লাহকে তোমার বিবাহে দিচ্ছি তুমি কি কবুল করলে? তখন পাত্রী “কবুল” বলবে। এতেই বিবাহ সম্পন্ন হয়ে যাবে। আর যদি পাত্রীর অভিভাবকের সামনে প্রস্তাব করতে হয় তাহলে বলবে আমি আরিফের ছেলে আব্দুল্লাহকে এত দেন মহরের পরিবর্তে রফিকের মেয়ে খাদিজার সাথে বিবাহের প্রস্তাব করছি, তখন অভিভাবক বলবে, আমি রফিকের মেয়ে খাদিজার পক্ষ থেকে কবুল করলাম।
-আলমুহীতুল বুরহানী ৪/২৪, ৩৭; আদ্দুররুল মুখতার ৩/১৪, ২১-২৩; আলবাহরুর রায়েক ৩/৮৮-৮৯