সাইফুদ্দীন - লক্ষীপুর
৫৬৩৪. প্রশ্ন
কিছুদিন পূর্বে আমার বাবা মারা যান। মহল্লার কবরস্থানে আমরা তাকে দাফন করি। এখন আমরা চাচ্ছি, বাবার কবরের পাশে তার নাম-ঠিকানা সম্বলিত একটা ফলক লাগিয়ে দিতে। যেন আত্মীয়-স্বজনের কবর চিনতে সুবিধা হয়। আর ভবিষ্যতে কবর বেড়ে গেলে আমরাও কবর শনাক্ত করতে সংশয়ে না পড়ি। জানার বিষয় হল, শরীয়তে এটার বৈধতা আছে কি?
উত্তর
হাঁ, চিহ্নিত রাখার জন্য কবরের পাশে নাম এবং সংক্ষিপ্ত ঠিকানা সম্বলিত ফলক লাগানোর অবকাশ রয়েছে। হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে-
لَمّا مَاتَ عُثْمَانُ بْنُ مَظْعُونٍ، أُخْرِجَ بِجَنَازَتِهِ فَدُفِنَ، فَأَمَرَ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ رَجُلًا أَنْ يَأْتِيَهُ بِحَجَرٍ، فَلَمْ يَسْتَطِعْ حَمْلَهُ، فَقَامَ إِلَيْهَا رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ، وَحَسَرَ عَنْ ذِرَاعَيْهِ، قَالَ كَثِيرٌ: قَالَ الْمُطّلِبُ: قَالَ الذِي يُخْبِرُنِي ذَلِكَ: عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ، قَالَ: كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى بَيَاضِ ذِرَاعَيْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ، حِينَ حَسَرَ عَنْهُمَا ثُمّ حَمَلَهَا فَوَضَعَهَا عِنْدَ رَأْسِهِ، وَقَالَ: أَتَعَلّمُ بِهَا قَبْرَ أَخِي، وَأَدْفِنُ إِلَيْهِ مَنْ مَاتَ مِنْ أَهْلِي.
অর্থাৎ, উসমান ইবনে মাযউন রা. ইন্তিকালের পর তাঁর দাফন শেষে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি পাথর তাঁর মাথার কাছে রাখেন এবং বলেন, এর দ্বারা আমার (দুধ) ভাইয়ের কবর চিহ্নিত করে রাখলাম। পরবর্তীতে আমার পরিবারের কেউ মারা গেলে যেন তাঁর কাছাকাছি তাকে দাফন করতে পারি। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩২০৬)
তবে কবরের পাশে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিছু লেখা যাবে না। যেমন কুরআনের আয়াত ইত্যাদি লিখে রাখা নিষেধ। হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে-
نَهَى النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ أَنْ تُجَصّصَ القُبُورُ، وَأَنْ يُكْتَبَ عَلَيْهَا، وَأَنْ يُبْنَى عَلَيْهَا، وَأَنْ تُوطَأَ.
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবর পাকা করা, তার উপর লেখা, কবরের উপর ঘর নির্মাণ করা এবং কবর পদদলিত করা থেকে নিষেধ করেছেন। (জামে তিরমিযী, হাদীস ১০৫২)
এই হাদীসের ব্যাখ্যায় মোল্লা আলী কারী রাহ. বলেন-
محمول على الزائد على ما يعرف به حال الميت.
মৃত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করতে যতটুকু লেখা প্রয়োজন তার চাইতে বেশি লেখার ক্ষেত্রে এই হাদীস প্রযোজ্য। (মিরকাতুল মাফাতীহ, ৪/১৬৬)
-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২২৬; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ২৪; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৯৪; রদ্দুল মুহতার ২/২৩৭