আশরাফুল ইসলাম - বাড্ডা, ঢাকা
৫৫৯৫. প্রশ্ন
কিছুদিন আগে আমার এক আত্মীয় হঠাৎ রাতে ইন্তেকাল করেন। রাতেই তার গোসলের কাজ সম্পন্ন হয়। ফজরের নামাযের পর সূর্য ওঠার আগে তার জানাযার নামায পড়ে আমরা লাশ নিয়ে গ্রামের দিকে রওয়ানা হই। এক ব্যক্তি তখন আমাকে বলেন, এই সময় জানাযার নামায পড়া উচিত হয়নি। কেননা ফজরের নামাযের পর সূর্য উঠার আগে যে কোনো নামায পড়া মাকরূহ।
জানতে চাই, এই ব্যক্তির কথা কি সঠিক? ফজরের নামাযের পর জানাযার নামায পড়ার কারণে আমাদের নামায কি মাকরূহ হয়েছে?
উত্তর
ঐ ব্যক্তির কথা ঠিক নয়। ফজরের নামাযের পর সূর্য ওঠার আগে কোনো নফল পড়া যায় না, কিন্তু জানাযার নামায পড়া যায়; তা পড়া মাকরূহ নয়। হযরত নাফে রাহ. বলেন-
أَنّ ابْنَ عُمَرَ كَانَ يُصَلِّي عَلَى الْجِنَازَةِ بَعْدَ الْعَصْرِ، وَبَعْدَ الصّبْحِ إِذَا صُلِّيَتَا لِوَقْتِهِمَا.
আছর ও ফজরের নামাযের পর হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. জানাযার নামাযে অংশগ্রহণ করতেন। যদি জানাযা এই দুই নামাযের ওয়াক্তের মধ্যে পড়া হত। (মুআত্তা ইমাম মুহাম্মাদ, হাদীস ৩১৩)
মা‘মার রাহ. হাসান বসরী ও কাতাদা রাহ. থেকে বর্ণনা করেন-
عَنِ الْحَسَنِ، وَقَتَادَةَ كَانَا يُصَلِّيَانِ عَلَى الْجَنَائِزِ بَعْدَ الْعَصْرِ وَالصّبْحِ مَا كَانَا فِي وَقْتٍ.
ফজর ও আছরের নামাযের পর এই দুই নামাযের ওয়াক্ত বাকি থাকলে জানাযার নামায পড়তেন। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ৬৫৬২)
সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ফজরের নামাযের পর সূর্য ওঠার আগে জানাযার নামায পড়ার কারণে আপনাদের নামায মাকরূহ হয়নি। ফজরের সময় থেকে সূর্য ওঠার আগ পর্যন্ত নফল পড়া যায় না বলে জানাযাও পড়া যাবে না- এমন ধারণা করা ঠিক হয়নি। মাসআলা বিজ্ঞ আলেম থেকে জেনে নিয়ে আমল করা উচিত। নিজ থেকে ধারণা বশত আমল করা বা মন্তব্য করা থেকে বেঁচে থাকা কর্তব্য।
-কিতাবুল আছল ১/১২৬; শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ১/৫৪৩; তুহফাতুল ফুকাহা ১/১০৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/২৩২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১৭; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৬৮; ফাতহুল কাদীর ১/২০৭; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ২৩৮; রদ্দুল মুহতার ১/৩৭৫