আমীনুল ইসলাম - মানিকগঞ্জ
৫৪৯৮. প্রশ্ন
আমি একজন ব্যবসায়ী। আমি পূর্ণরূপে দ্বীনের উপর চলতে চাই এবং আমার পরিবারকেও দ্বীনের উপর চালানোর চেষ্টা করি। কিন্তু আমার স্ত্রী দ্বীনের উপর চলতে আগ্রহী নয়। সে পর্দা-পুশিদার গুরুত্ব দেয় না এবং আমার অনুমতি ছাড়া মার্কেটে ঘুরতে যায়। মার্কেটে ঘুরতে যাওয়ার ব্যাপারে আমি অনেকদিন নিষেধ করি। সে তা মানে না। অবশেষে গতকাল আমি আমার দোকানে ছিলাম, বাড়িতে আসার পর শুনতে পাই, আমার স্ত্রী মার্কেটে ঘুরতে গিয়েছিল। তখন আমি তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে সে আমার সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়ে এবং অনেক বাড়াবাড়ি করে। একপর্যায়ে আমি তাকে বলি, ‘তোমার সাথে ঘর-সংসার করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আজ থেকে তুমি আমার জন্য হারাম, হারাম, হারাম।’ এবং উক্ত কথাটি আমি তালাকের নিয়তে বলেছিলাম। পরবর্তীতে আমার স্ত্রী তার ভুল বুঝতে পেরে অনুতপ্ত হয় এবং পূর্ণ দ্বীনের উপর চলার প্রতি অঙ্গিকারবদ্ধ হয়। তাই আমি জানতে চাচ্ছি, আমার স্ত্রীকে ‘তুমি আজ থেকে আমার জন্য হারাম, হারাম, হারাম’ বলার কারণে কি তালাক পতিত হয়েছে? এবং এখন কি আমরা পুনরায় ঘর-সংসার করতে পারব। জানিয়ে উপকৃত করবেন।
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি আপনার স্ত্রীকে তালাকের উদ্দেশ্যে ‘হারাম’ শব্দটি একবার উচ্চারণের পরই তার উপর একটি ‘বায়েন তালাক’ পতিত হয়ে আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে। পরবর্তী দুটি দ্বারা কোনো তালাক পতিত হয়নি। এখন পুনরায় আপনারা সুষ্ঠুরূপে ঘর-সংসার করতে চাইলে নতুন করে মহর ধার্য করে যথানিয়মে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে। এক্ষেত্রে যেহেতু এক তালাক হয়ে গেছে তাই ভবিষ্যতে আপনি শুধু দুই তালাকের অধিকারী থাকবেন। অর্থাৎ ভবিষ্যতে কখনো দুই তালাক হলেই আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক একেবারেই ছিন্ন হয়ে যাবে। তখন নতুন করে বিবাহের মাধ্যমেও আপনারা একে অপরের জন্য হালাল হবেন না।
উল্লেখ্য, তালাক হচ্ছে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্নকারী চূড়ান্ত পদক্ষেপ। দাম্পত্য জীবনের সমস্যা একেবারে জটিল হয়ে পড়লে এবং সমস্যা নিরসনের আর কোনো উপায় না থাকলে তা থেকে নিষ্কৃতির সর্বশেষ পথমাত্র। বিনা কারণে কিংবা তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তালাক দেওয়া, কথায় কথায় তালাক দেওয়া সবই গুনাহের কাজ। এ থেকে বিরত থাকা যে কোনো মুসলমানের কর্তব্য।
-ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৪/১৮৮; ফাতহুল কাদীর ৩/৪০৮; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৩০৮; ইমদাদুল মুফতীন, পৃ. ৫২৫