নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক - কুমিল্লা
১২৫৮. প্রশ্ন
নিম্নলিখিত বিষয়টির শরীয়ত সম্মত ফতোয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
মরহুম ১ ছেলে, ৩ মেয়ে ও ১ স্ত্রী রেখে ইন্তেকাল করেছেন এখন থেকে ২৬ বছর পূর্বে। এতকাল অবধি উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত স্থাবর সম্পত্তি (জমি-জমা) ওয়ারিশদের মধ্যে ভাগ-বন্টন হয়নি। এখন সেই সম্পত্তি শরীয়ত মোতাবেক ভাগ-বণ্টন হবে।
অতীতে মরহুমের ছেলে ও বড় মেয়ে ঐ স্থাবর সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কিছু টাকা খরচ করেছে (যেমন, গুন্ডারা কিছু জমি দখল করেছিল তা মুক্ত করার জন্য গুন্ডাদেরকে কিছু টাকা দিয়েছিল। জমির রেকর্ড করানোর জন্য ও খাজনা বাবদ কিছু টাকা খরচ করেছিল। কিছু জমি নিয়ে মামলা ছিল সেই বাবদ কিছু টাকা খরচ করেছিল। এখানে-ওখানে কিছু ঘুষঘাষও দিয়েছিল ইত্যাদি।) ঐ সব খরচের কোনো কোনো খাতে মরহুমের মেঝ মেয়েও কিছু শরীক হয়েছিল এবং মামলার খরচে ছোট মেয়েও অল্প কিছু শরীক হয়েছিল।
এখন সম্পত্তি বণ্টনকালে ছেলে ও বড় মেয়ে দাবি করছে যে, তারা দুজনে যত টাকা অতীতে খরচ করেছে (তারাই বেশির ভাগ টাকা খরচ করেছে) ঐ টাকার যে অংশ মেঝ মেয়ে ও ছোট মেয়ের ভাগে পরিশোধ করার জন্য পড়বে তা তাদের পরিশোধ করতে হবে উক্ত টাকার পরিমাণের চেয়ে বেশি (তারা এর কারণ দেখাচ্ছে যে, অতীত থেকে টাকার মূল্য বর্তমানে কমে গেছে।)
এখন ছেলে ও বড় মেয়ে তাদের উপরে উল্লেখিত দাবি মোতাবেক মেঝ ও ছোট মেয়ের নিকট থেকে খরচকৃত টাকার পরিশোধযোগ্য অংশের দুই গুণ বা তিন গুণ বা ততোধিক শরীয়ত মোতাবেক কি আদায় করতে পারবে? এবং তা করা কি জায়েয হবে?
উত্তর
টাকার মূল্যমান কমে যাওয়ার অজুহাতে ছেলে ও বড় মেয়ে তাদের খরচকৃত টাকার অধিক টাকা অন্য বোন ও তাদের মা থেকে নিতে পারবে না। বরং তারা যা অতিরিক্ত খরচ করেছে শুধুমাত্র সে পরিমাণ টাকাই নিতে পারবে। আর এ ক্ষেত্রে প্রত্যেক ওয়ারিশের যার যতটুকু হিস্যা তাকে ঐ পরিমাণ খরচই বহন করতে হবে । যেমন মরহুমের স্ত্রী দিবে ১২.৫% খরচ আর ছেলে দিবে ৩৫% এবং প্রত্যেক মেয়ে ১৭.৫% করে। অতএব এ পর্যন্ত প্রত্যেকে যত টাকা করচ করেছে তা একত্রে হিসাব করে যারা তাদের প্রদেয় হিসাবের চেয়ে কম দিয়েছে তারা অতিরিক্ত দাতাদেরকে তা পরিশোধ করে দিবে।
-মাবসূতে সারাখসী ১৪/৩০, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/২০২, আদ্দুররুল মুখতার ৫/১৬২, মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যাহ ২৪৯