যিলকদ ১৪২৯ || নভেম্বর ২০০৮

মুসাম্মাৎ হাবীবা মাসরুরা - মিফতাহুল জান্নাত মহিলা মাদরাসা <br> গলগন্ডা, সদর, মোমেনশাহী

১৪৪৭. প্রশ্ন

চলন্ত জাহাজ, উড়ন্ত বিমান এবং চলন্ত বাস ও ট্রেনে নামায আদায় করার বিধান কী? বিস্তারিতভাবে জানাবেন।

উত্তর

চলন্ত জাহাজ, বিমান ও ট্রেনে দাঁড়িয়ে রুকু সিজদার সাথে নামায আদায় করা সম্ভব হলে কিবলার দিক ঠিক করে দাঁড়িয়ে রুকু-সিজদাসহ দ্রুত ফরয নামায আদায় করে নিবে। এক্ষেত্রে নামাযের মধ্যে বাহন ঘুরে গেলে নামাযীও কিবলার দিকে ঘুরে যাবে। এভাবে নামায পড়তে পারলে পরবর্তীতে এ নামায আর কাযা পড়তে হবে না। কিন্তু এসকল অবস্থায় কারো দাঁড়িয়ে নামায আদায় করা কষ্টসাধ্য হলে সে বসে বা যেভাবে সম্ভব সেভাবেই নামায আদায় করে নিবে এবং পরবর্তীতে এ নামায কাযা করে নিবে।

আর বাসে যেহেতু দাঁড়িয়ে যথাযথভাবে নামায আদায় করা যায় না তাই কাছাকাছি যাতায়াতের ক্ষেত্রে অবশ্যই বাস থেকে নেমে নামায আদায় করতে হবে। যেমন-ঢাকার ভিতরেই মিরপুর থেকে যাত্রাবাড়ি, সাভার থেকে ঢাকা ইত্যাদি যাতায়াতের সময় গন্তব্যস্থলে পৌঁছে নামাযের সময় থাকবে না মনে হলে স্বাভাবিক অবস্থায় পথিমধ্যে নেমে নামায আদায় করে নিতে হবে। কিন্তু দূরদূরান্তের সফর যেখানে পথিমধ্যে বাস ছেড়ে নামাযের জন্য নেমে গেলে অসুবিধায় পড়ে যাওয়ার আশংকা থাকে এবং বাস তার জন্য অপেক্ষা করতেও প্রস্ত্তত নয় সেক্ষেত্রে এ ক্ষেত্রে সম্ভব হলে দুদিকের সিটের মাঝে কেবলামুখী হয়ে রুকু সেজদাসহ পূর্ণাঙ্গরূপেই নামায আদায় করতে হবে। অবশ্য এতে যদি দাঁড়ানো থেকে পড়ে যাওয়ার আশংকা থাকে তাহলে কিছুতে হেলান দিয়ে বা হাতে ধরেও অবস্থান করা যাবে এবং প্রয়োজনে দাঁড়ানো অবস্থায় হাত বাঁধা বা রুকু অবস্থায় হাটুতে হাত রাখা না গেলেও অসুবিধা নেই। আর যদি কেবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে পূর্ণরূপে রুকু সেজদা করা না যায়, যেমন গাড়ী দক্ষিণমুখী বা উত্তরমুখী হয় তাহলেও কেবলামুখী দাঁড়িয়ে নামায আদায় করবে এবং যথারীতি রুকু করে সিজদার সময় পেছনের সিটে বসে সামনের সিটে সিজদা করবে। এক্ষেত্রে সামনের সিটে সিজদার সুযোগ না থাকলে বসে ইশারায় সিজদা করবে। আর যদি পেছনের সিটে বসার সুযোগ না থাকে তাহলে শুরু থেকেই পুরো নামায নিজের সিটে কেবলামুখী বসে ইশারায় রুকু সিজদা করে আদায় করবে। এ ছাড়া কেবলামুখী হওয়া বা দাঁড়ানো যদি সম্ভব না হয় তাহলে যেভাবে সম্ভব সেভাবেই আদায় করে নিবে।

উল্লেখ্য, যে অবস্থায় দাঁড়ানো বা কেবলামুখী হওয়া সম্ভব হয় না সে অবস্থার নামায পুনরায় কাযা করে নিতে হবে এবং পরবর্তীতে এ নামায কাযা করে নিবে।

উল্লেখ্য  যে, বাসের মালিক/চালকগণ যেন নামাযের সময়গুলোতে কোনো মসজিদে অন্তত ফরয পড়ার জন্য নিয়মিত বিরতি দেয় সে ব্যাপারে যাত্রীদের সচেতন হওয়া আবশ্যক।

-মাআরিফুস সুনান ৩/৩৯৪-৯৬;আহসানুল ফাতাওয়া ৪/৮৮

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন