মুহাম্মাদ যাকারিয়া - বি.বাড়িয়া
১৬৮২. প্রশ্ন
আমি একজন প্রবাসী। অনেক বছর থেকেই বিদেশে থাকি। ১৯৯৬ সনে সরকারীভাবে আমি ইমাম হিসেবে কাতারে যাই। যাওয়ার সম্পূর্ণ খরচ সরকার বহন করে। এতে সংসারের কোনো টাকা খরচ হয়নি। কাতারে আমার উপার্জিত টাকা থেকে প্রথম চার বছরে প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা বাড়িতে পাঠিয়েছি। আমি আমার পিতাকে এ টাকা দিয়ে আমার জন্য বাড়ির জমি খরিদ করতে এবং তাতে বাড়ি করতে বলেছি। আমার ইচ্ছা ছিল তা আমার নামে রেজিষ্ট্রি হবে। কিন্তু তিনি ঐ টাকা থেকে মাত্র ৪লক্ষ টাকা বাড়ির কাজে ব্যয় করেন। বাকি টাকা সংসারে খরচ করেন এবং ঐ বাড়িটিও আমাকে না জানিয়ে নিজের নামে রেজিষ্ট্রি করেন। এরপর একটি চিঠিতে তিনি আমাকে লেখেন যে, যেহেতু আমি তা আমার নামে রেজিষ্ট্রি করে ফেলেছি তাই বিষয়টি শরীয়তের উপর ছেড়ে দাও।
আমার আম্মার দাবি হল, তিনি নিজ পিত্রালয় থেকে ১লক্ষ টাকা এনে বাড়িতে খরচ করেছেন। আসলে পরবর্তী বছরগুলোতে আমি ঠিকই বাড়ির ঋণের টাকা আদায় করেছি এবং এ বাবদ উপরোক্ত ১৪ লক্ষ টাকা ছাড়াও আরো টাকা পাঠিয়েছি, কিন্তু তা সংসারের অন্যদের পিছনে খরচ করা হয়েছে এবং বোনদের বিবাহ-শাদি আমি দিয়েছি। দু’ভাইকে ১০লক্ষ টাকা খরচ করে বিদেশ পাঠিয়েছি। এমনিভাবে আমাকে সংসারের খরচও দিতে হয়েছে। অথচ আমার বিয়ের পর থেকে সংসার ভিন্ন। উল্লেখ্য, আমার পিতা এখন আখেরাতবাসী।
জানার বিষয় হল, উক্ত বাড়িতে কি আমার পিতার সকল ওয়ারিশ হকদার হবে নাকি তা আমার একক হক বলে বিবেচিত হবে? বিস্তারিত জানাবেন।
উত্তর
প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী আপনার পাঠানো টাকা দ্বারা যেহেতু আপনি নিজের জন্য জমি ক্রয় করে তাতে বাড়ি নির্মাণ করতে বলেছেন তাই সে টাকা দিয়ে জমি কিনে বা বাড়ি করে পিতা নিজের নামে দলীল করলেও এতে তাঁর মালিকানা সাব্যস্ত হবে না এবং বাড়িটি তাঁর মীরাস সম্পত্তি হিসেবেও গণ্য হবে না; বরং এটা আপনার নিজের একক মালিকানাধীন সম্পত্তি বলে বিবেচিত হবে।
সুতরাং আপনার পিতার অন্যান্য ওয়ারিশদের দায়িত্ব হল, আইনগত ঝামেলা এড়ানোর জন্য আপনার নামে তা লিখে দেওয়া। অবশ্য এক্ষেত্রে যা অফিসিয়াল খরচ হবে তা আপনাকে বহন করতে হবে।
-বাদায়েউস সানায়ে ৫/৩৩; আলবাহরুর রায়েক ৭/১৬০; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/১৯; আদ্দুররুল মুখতার ৫/৫১৭