রবিউল আখির ১৪৪২ || ডিসেম্বর ২০২০

জসিম উদ্দীন - ভোলা

৫২৬৫. প্রশ্ন

আমি একবার আমার চাচাতো ভাইয়ের বাসায় যাই। সেখানে তার সাথে একটি বিষয়ে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আমি কুরআন শরীফ হাতে নিয়ে বলি যে, ‘আমি কুরআন শরীফের কসম করে বলছি, ‘আর কখনো তোর বাসায় আসব না।পরবর্তীতে তার সাথে রাগ মিটে যায়। এখন জানতে চাচ্ছি, আমার উক্ত কথার দ্বারা কি কসম হয়ে গেছে? এখন যদি আমি তার বাসায় যাই তাহলে কি আমাকে কাফফারা দিতে হবে? বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।

উত্তর

কুরআন শরীফের কসম করে কোনো কাজের প্রতিজ্ঞা করলে কসম সংঘটিত হয়ে যায়। তাই আপনি যদি এখন আপনার চাচাতো ভাইয়ের বাসায় যান তাহলে আপনার কসম ভেঙ্গে যাবে এবং এর কারণে আপনাকে কাফফারা দিতে হবে।

কসমের কাফফারা হল, দশজন গরিবকে দুই বেলা তৃপ্তিসহ খাবার খাওয়ানো অথবা তাদেরকে বস্ত্র দান করা। যদি এমন আর্থিক সামর্থ্য না থাকে তাহলে ধারাবাহিকভাবে তিন দিন রোযা রাখবে।

উল্লেখ্য, কোনো বৈধ কাজ করবে না বলে কসম করার পর যদি ঐ কাজটি করাই কল্যাণকর সাব্যস্ত হয় তাহলে ঐ কাজটি করে কসমের কাফফারা দিয়ে দেওয়াই উত্তম। হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

مَنْ حَلَفَ عَلَى يَمِينٍ، فَرَأَى غَيْرَهَا خَيْرًا مِنْهَا، فَلْيَأْتِهَا، وَلْيُكَفِّرْ عَنْ يَمِينِهِ.

কেউ যদি কোনো বিষয়ে কসম করে অতঃপর এর বিপরীত করার মাঝে কল্যাণ দেখতে পায় তাহলে সে যেন ঐ কল্যাণকর কাজটিই করে এবং কসমের কাফফারা দিয়ে দেয়। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৬৫০

আরও উল্লেখ্য, কুরআন শরীফের কসম করার দ্বারা যদিও কসম সংঘটিত হয়ে যায় তথাপি কুরআন শরীফের কসম করা জায়েয নেই। কসম কেবলমাত্র আল্লাহ্র নামেই করা যায়। তাই ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে সতর্ক হওয়া কর্তব্য। আর বর্তমান কসমের কারণে ইস্তিগফার করবে।

-রামযুল হাকায়েক ১/২০৫; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৫৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৫৩; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৮৬; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭১২

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন