রবিউল আউয়াল ১৪৪২ || নভেম্বর ২০২০

মুহাম্মাদ নাবীল - মুরাদনগর, কুমিল্লা

৫২৩৭. প্রশ্ন

এক রমযানে আমার উমরার সফর হয়। শাওয়ালের দশ তারিখ দেশে ফিরি। অনেক পরিচিতজনই বলছে যে, আমার উপর নাকি হজ্ব ফরয হয়ে গেছে।  কেননা হজের মাসে উমরাহ করলে নাকি হজ্ব ফরয হয়ে যায়। কারো কারো বক্তব্য হল, কাবা দেখলে বা যে কোনো সময়ই ওমরা করলে হজ্ব ফরয হয়ে যায়। তাদের এ কথাগুলো সঠিক কি না? আমি একজন আলেমকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, কিতাবাদীতে আছে যে, হজ্বের মৌসুমে মক্কায় অবস্থান করলে হজ্ব ফরজ হয়ে যায়। এখানে কোন্ বক্তব্যটি সঠিক?

উত্তর

কাবা দেখা বা উমরাহ করার দ্বারা হজ্ব ফরয হয়ে যাওয়ার প্রশ্নোক্ত কথাটি সহীহ নয়। হজ্ব ফরয হওয়ার সাথে কাবা দেখা বা উমরাহ করার কোনো সম্পর্ক নেই। সামর্থ্যবান ব্যক্তির উপরই কেবল হজ্ব ফরয হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন-

وَلِلهِ عَلَی النَّاسِ حِجُّ الْبَیْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ اِلَیْهِ سَبِیْلًا.

অর্থাৎ, মানুষের মধ্যে যারা সেখানে (বাইতুল্লাহ) পৌঁছার সামর্থ্য রাখে তাদের উপর আল্লাহর উদ্দেশ্যে এ গৃহের হজ্ব করা ফরয। (সূরা আলে ইমরান : ৯৭)

সামর্থ্য দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, হজ্বের মৌসুমে কারো কাছে প্রয়োজন অতিরিক্ত এ পরিমাণ সম্পত্তি থাকা, যার দ্বারা যানবাহনে করে সে মক্কায় আসা-যাওয়া করতে পারে এবং যাদের ভরণ-পোষণ তার জিম্মায় রয়েছে হজ্ব থেকে ফিরে আসা পর্যন্ত তাদের খরচ নির্বাহ করতে সক্ষম হয়। এমনিভাবে বর্তমানে ভিসা ও হজ্ব আদায়ের অনুমতিও আইনীভাবে হজ্বের সামর্থ্যরে অন্তর্ভুক্ত। আগের যুগে যেহেতু ভিসার আইনী বাধ্যবাধকতা ছিল না, তাই হজ্বের মাসসমূহে কেউ উমরাহ করতে মক্কায় পৌঁছে গেলে বাকি দিনগুলো সেখানে অবস্থান করতঃ হজ্ব আদায় করতে কোনো আইনী বাধা ছিল না। এজন্য ফুকাহায়ে কেরাম এমন ব্যক্তিকে সামর্থ্যবান গণ্য করে তার উপর হজ্ব ফরয হওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু বর্তমানে যেহেতু উমরার ভিসা দ্বারা হজ্ব করা বা হজ্ব পর্যন্ত মক্কায় অবস্থান করার সুযোগ নেই, সেজন্য এখন হজ্বের মৌসুমেও উমরা করার দ্বারা হজ্ব ফরয হবে না।

-আলমাসালিক ফিল মানাসিক ১/২৫৭; যুবদাতুল মানাসিক, পৃ. ২১; ইরশাদুস সারী ইলা মানাসিকি মুল্লা আলী আলকারী, পৃ. ৪১; ইমদাদুল আহকাম ২/১৬৩

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন