আবদুল জলীল - মনপুরা
৫২৩৪. প্রশ্ন
গত রোযায় প্রচণ্ড গরম পড়েছিল। অসহনীয় গরমের কারণে আমাদের পাড়ার মসজিদটিতে কেউ ইতিকাফ করতে চাচ্ছিল না। গরমে মুআযযিন সাহেব আগের থেকে অসুস্থ ছিলেন। তাই আমি একাই আল্লাহ্র উপর ভরসা করে ইতিকাফে বসে পড়ি। ইতিকাফে থাকা অবস্থায় পাড়ার তিন ভদ্রলোক বৈরী আবহাওয়ায় অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করে। ফলে যথাক্রমে ২৩, ২৪, ২৫ রমযানে মসজিদের পূর্ব পাশের উঠানে জানাযা পড়াই। কারণ আমাদের পাড়ার অধিকাংশ মানুষ কৃষি কাজ করে। ইদানীং সময়ে কিছু ছেলে স্কুলে যাওয়া-আসা করে।
হুযূরের কাছে জানতে চাচ্ছি যে, এ পরিস্থিতির মাঝেও কি জানাযা পড়ানোর কারণে উক্ত তিন দিনের ইতিকাফ ভেঙে গেছে?
উল্লেখ্য, ২৫ রমযানে জানাযা পড়ানোর পর ইস্তিসকার নামাযও পড়ানো হয়। সংবাদ আসছিল, বিভিন্ন এলাকায় সালাতুল ইস্তিসকা পড়া হচ্ছে। তাই আমরা আগের থেকেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছিলাম যে, জানাযার পর ইস্তিসকার নামায অনুষ্ঠিত হবে।
উত্তর
ইতিকাফ অবস্থায় শরীয়ত অনুমোদিত নির্ধারিত কিছু ক্ষেত্র ছাড়া মসজিদ থেকে বের হওয়া নিষেধ। এই নির্ধারিত ক্ষেত্রগুলো ছাড়া অন্য কাজে মসজিদ থেকে বের হলে ইতিকাফ নষ্ট হয়ে যায়। আর জানাযার নামায ঐ নির্ধারিত ক্ষেত্রগুলোর অন্তর্ভুক্ত নয়। হাদীস শরীফে এসেছে-
السُّنَّةُ عَلَى الْمُعْتَكِفِ: أَنْ لَا يَعُودَ مَرِيضًا، وَلَا يَشْهَدَ جَنَازَةً، وَلَا يَمَسّ امْرَأَةً، وَلَا يُبَاشِرَهَا، وَلَا يَخْرُجَ لِحَاجَةٍ، إِلّا لِمَا لَا بُدّ مِنْهُ.
ইতিকাফকারীর নিয়ম হল, সে কোনো রোগী দেখতে যাবে না, জানাযায় অংশগ্রহণ করবে না। স্ত্রীকে (কামভাবে) স্পর্শ করবে না, সহবাস করবে না। একান্ত প্রয়োজন (যেমন, ওযু, ইস্তিঞ্জা ইত্যাদি) ছাড়া বের হবে না। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৪৭৩)
অতএব প্রথম দিন জানাযা পড়ানোর জন্য বের হওয়ার দ্বারাই আপনার সুন্নত ইতিকাফটি ভেঙে গেছে। আপনি যে কোনো দিন রোযাসহ পূর্ণ এক দিনের ইতিকাফ কাযা করে নিবেন। অবশিষ্ট দিনগুলো নফল ইতিকাফের মধ্যে গণ্য হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই জানাযা ও ইস্তিসকার নামায পড়ানোর সুযোগ ছিল। তাই পরবর্তী দিনগুলোর জন্য কিছুই করতে হবে না।
-শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ২/৪৭৩; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়্যা ১/২৪১; ফাতহুল কাদীর ২/৩১১; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩২২; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/২২৮; রদ্দুল মুহতার ২/৪৪৭