শাওয়াল ১৪৪১ || জুন ২০২০

ইলিয়াস - হাতিয়া

৫১০২. প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় জুমার দিন বিভিন্ন মসজিদে খুতবার সময় দানবাক্স চালাতে ও এক-দুজন উঠে মুসল্লিদের থেকে টাকা উঠাতে দেখা যায়। জানার বিষয় হল, খুতবা চলাকালীন দানবাক্স বা উঠে টাকা উঠানো শরীয়তের দৃষ্টিতে কেমন?

উত্তর

খুতবা চলাকালীন টাকা উঠানো বা দানবাক্স চালানো নাজায়েয। কেননা জুমার খুতবা শ্রবণ করা এবং ঐ সময়ে চুপ থাকা ওয়াজিব। খুতবা চলাকালীন সব ধরনের কাজকর্ম, কথাবার্তা এমনকি নামায, যিকির ও তিলাওয়াত পর্যন্ত নিষিদ্ধ। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

وَ اِذَا قُرِئَ الْقُرْاٰنُ فَاسْتَمِعُوْا لَهٗ وَ اَنْصِتُوْا لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَ.

যখন কুরআন পড়া হয় তখন তা মনোযোগ দিয়ে শোনো এবং চুপ থাকো, যাতে তোমাদের প্রতি রহমত হয়। [সূরা আরাফ (৭) : ২০৪] উক্ত আয়াতের তাফসীরে মুজাহিদ রাহ. বলেন, এ আয়াত নামায ও জুমার খুতবার ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে। (তাফসীরে ইবনে কাসীর ২/৪৪৪)

হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

مَنْ تَوَضّأَ فَأَحْسَنَ الْوُضُوءَ ثُمّ أَتَى الْجُمُعَةَ فَاسْتَمَعَ وَأَنْصَتَ غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ وَزِيَادَةُ ثَلاَثَةِ أَيّامٍ وَمَنْ مَسّ الْحَصَى فَقَدْ لَغَا.

যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অযু করল অতঃপর জুমায় এসে চুপ করে মনোযোগ সহকারে (খুতবা) শুনল, তার পরবর্তী জুমা পর্যন্ত এবং আরো অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহগুলো মাফ করে দেওয়া হবে। আর যে কঙ্কর স্পর্শ করল সে অনর্থক কাজ করল। (সহীহ মুসলিম, হাদীস ৮৫৭)

অপর এক হাদীসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

إِذَا قُلْتَ لِصَاحِبِكَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ أَنْصِتْ وَالْإِمَامُ يَخْطُبُ فَقَدْ لَغَوْتَ.

জুমার দিন ইমাম খুতবা দিচ্ছেন এমন সময় যদি তোমার পাশের ব্যক্তিকে বল চুপ করতবে তুমি অনর্থক কাজ করলে। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৯৩৪)

ইমাম ইবনে ওয়াহাব রাহ. বলেন-

مَعْنَاهُ أَجْزَأَتْ عَنْهُ الصّلَاة وَحُرِمَ فَضِيلَة الْجُمُعَة.

এর অর্থ হল, তার জুমার ফরয আদায় হলেও সে জুমার ফযীলত থেকে বঞ্চিত হয়ে গেল। (ফাতহুল বারী ২/৪৮১)

তাই জুমার দিন খুতবার সময় দানবাক্স চালানো কিংবা উঠে টাকা উঠানো ইত্যাদি থেকে বিরত থাকতে হবে এবং সম্পূর্ণ চুপ থেকে মনোযোগ সহকারে জুমার খুতবা শ্রবণ করতে হবে। প্রয়োজন হলে খুতবার আগে বা নামাযের পরে মসজিদের জন্য টাকা উঠানো যেতে পারে।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৪/১০৫; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/১৪২; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২০৬; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৫৪৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৫৭৪; মুখতারাতুন নাওয়াযিল  ১/৩৮৮; আলবাহরুর রায়েক ২/১৫৫

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন